অর্থ ও বাণিজ্য

ঋণখেলাপিরা নতুন করে বাড়ি-গাড়ি ক্রয় ও ব্যবসা করতে পারবেন না

নিয়মিত ঋণ পরিশোধ না করলে তাকে ইচ্ছা খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে। এসব ঋণখেলাপিরা বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। তারা নতুন করে জমি, বাড়ি, গাড়ি কিনতে পারবেন না। নতুন ব্যবসাও খুলতে পারবেন না তারা।

বুধবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। সভা শেষে এ তথ্য জানান ডেপুটি গভর্নর আবু ফারাহ মো. নাসের। এ সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ডেপুটি গভর্নর জানান, ব্যাংকিং খাতে ২০২৬ সালে ৩০ জুনের মধ্যে খেলাপি ঋণের হার সার্বিক ৮ শতাংশের পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের হার যথাক্রমে ১০ ও ৫ শতাংশের নিচে নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া ব্যাংকিং খাতে কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করার মাধ্যমে সীমাতিরিক্ত, বেনামী স্বার্থ সংশ্লিষ্ট এবং জালিয়াতি, প্রতারণার মাধ্যমে ঋণ বিতরণের পরিমাণ শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্যে ১১ দফা রোডম্যাপ করা হয়েছে।

আবু ফারাহ মো. নাসের বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। কো‌নও গ্রাহক ঋণ নিয়মিত প‌রি‌শোধ না করলে তা‌কে ইচ্ছাকৃত খেলা‌পি হিসেবে চিহ্নিত করবে। এই খেলাপিদের সমাজে অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ তৈরি হবে। আগামীতে খেলাপিরা জ‌মি কিনতে গেলে রেজিস্ট্রেশন করতে পারবে না। নতুন প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানি চালু কিংবা ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারবে না। কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিঠি দেবে যেন তাদের কোনো সহযোগিতা না করে। গা‌ড়ি-বা‌ড়ি কিন‌তে পার‌বেন না। এমন অবস্থায় পড়তে কোনো ব্যবসায়ী চাইবে না। তাই তারা ঋণ নিয়মিত পরিশোধ করবে।

বেনামে ঋণ কত জানতে চাইলে ডেপুটি গভর্নর বলেন, বেনামে ঋণ চিহ্নিত করা যাচ্ছে না। তাই কত আছে এর সঠিক তথ্য নেই। পত্র-পত্রিকায় বেনামে ঋণের তথ্য আসছে তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে যেহেতু লিখা হচ্ছে কিছু না কিছু আছে, এটি চিহ্নিত করা হবে।

ব্যাংক খাতে সুশাসন ফেরাতে ৬ পরিকল্পনা হাতে নেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, ব্যাংকের শেয়ারধারী পরিচালকদের যোগ্যতা ও দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা সংশোধন করা হবে। ফলাফল হিসেবে ব্যাংকের সামগ্রিক ঋণ ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা শক্তিশালী হবে। তাছাড়া রোডম্যাপ অনুযায়ী, ব্যাংকের স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ, তাদের সম্মানি নির্ধারণ এবং দায়িত্ব-কর্তব্য সম্পর্কিত নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। এতে স্বতন্ত্র পরিচালক আমানতকারী এবং শেয়ারধারীর স্বার্থ সংরক্ষণ করবে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ব্যাংকের এমডি নিয়োগ ও পুনর্নিয়োগ বাছাই প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন পদ্ধতি আরও কঠোরভাবে বাস্তবায়ন হবে। পারদর্শিতার সূচকের ভিত্তিতে কাজের মূল্যায়ন পাবেন এমডিরা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, একজন গ্রাহক এখন যে পরিমাণ ঋণ নিতে পারেন তার বেশি ঋণ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে না। কয়েকটি দুর্বল ব্যাংককে অপেক্ষাকৃত ভালো ব্যাংকের সঙ্গে মার্জ করা হবে। যেখানে একীভূত হওয়ার তিন বছর পর্যন্ত কোনো কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না। এর মাধ্যমে দুর্বল ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ শক্তিশালী হবে, মূলধন ঘাটতি দূর হবে এবং খরচ কমে আসবে। একই সঙ্গে ব্যাংক কর্মকর্তাদের পদোন্নতিতে মৌলিক প্রশিক্ষণ ও ব্যাংকিং প্রফেশনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ বাধ্যতামূলক করা হবে।

৪ মন্তব্য

  1. তাতে কি হয়েছে? এরা যা কিছু করার ইতিপূর্বে করে ফেলেছে। চোর পলাইলে বুদ্ধি বাড়ে। কয়েক জনকে দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দিলে সব ঠিকানায় চলে আসবে কিন্তু সরকার তা করতে পারবে না কেন না সৎ সাহসের অভাব আছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button