দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন ঠেকানোর লক্ষ্যে মাঠের বিরোধী দল বিএনপির ডাকা অসহযোগের ঘোষণাকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। ভোটের প্রচারে ব্যস্ত ক্ষমতাসীন দলটি বিএনপির অসহযোগ নিয়ে ভাবছেই না, বরং প্রার্থী, প্রচারে অংশ নেওয়া নেতাকর্মী-সমর্থক ও ভোটাররা অসহযোগকে প্রতিহত করবে বলে জানিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা।
দেড় মাসের বেশি সময় ধরে অবরোধ ও হরতালের সঙ্গে ‘ধ্বংসাত্মক’ কর্মসূচির বাইরে গত ২০ ডিসেম্বর সরকারের বিরুদ্ধে ‘সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন’-এর ডাক দেয় বিএনপি। এর অংশ হিসেবে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্বাচনী দায়িত্ব পালন থেকে বিরত থাকা; সরকারকে কর, খাজনা এবং বিদ্যুৎ-গ্যাস-পানির বিল পরিশোধ বন্ধ করে দেওয়া এবং ব্যাংকে আমানত না রাখার আহ্বান জানায় দলটি। আদালতে চলমান মামলার আসামি দলীয় নেতাকর্মীদের হাজিরা না দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে দলটির পক্ষ থেকে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা বিএনপির আন্দোলনের নামে করা নানা ধরনের কর্মকাণ্ডকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তারা বলছেন, হরতাল-অবরোধের মতো কর্মসূচিতে সাড়া না পেয়ে বিএনপি অসহযোগের ডাক দিয়েছে। তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষ, এমনকি তাদের নিজ দলের নেতাকর্মীরাও সাড়া দেননি। হরতাল-অবরোধের মতোই অসহযোগ ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও এক অনুষ্ঠানে বিএনপির অসহযোগকে আন্দোলন থেকে পালিয়ে যাওয়ার রাস্তা হিসেবে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, নির্বাচনবিরোধী, গুপ্ত সন্ত্রাস ও অগ্নিসন্ত্রাসকারী বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে দেশের জনগণ অসহযোগ শুরু করবে। তার প্রমাণ বাংলাদেশের হাটবাজার-দোকানপাটে মানুষের জীবনযাত্রার স্বাভাবিকতা তাই প্রমাণ করে।
বিএনপির অসহযোগ আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন বলেন, কীসের অসহযোগ? রাস্তাঘাটে ঘুরে তো কোথাও অসহযোগের চিহ্ন পেলাম না। দেশের কোথাও যেমন হরতাল-অবরোধ পালিত হয়নি, তেমনি অসহযোগও কেউ সহযোগিতা করবে না। মানুষ নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত।
অসহযোগের ব্যাখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগের এক কেন্দ্রীয় নেতা কালবেলাকে বলেন, অসহযোগ অর্থ সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা না করার জন্য সার্বিক আন্দোলন। মুক্তিযুদ্ধের সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে, ১৯৯৬ সালে বিএনপির একতরফা নির্বাচনের বিরুদ্ধে শেখ হাসিনার ডাকে অসহযোগ আন্দোলন হয়েছে। সেসব আন্দোলনে সাধারণ জনগণের অংশগ্রহণ ছিল। কিন্তু বিএনপির আন্দোলনে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ নেই, অসহযোগেও থাকবে না।
গত দেড় বছর সারা দেশে সরকারবিরোধী নানা কর্মসূচি পালন করে বিএনপি। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৮ অক্টোবরে রাজধানীতে মহাসমাবেশের ডাক দেয় তারা। সেদিন কাকরাইলে অবস্থিত প্রধান বিচারপতির বাসভবন আক্রমণ, এক পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা, পুলিশ হাসপাতালে আগুন দেওয়া নানা সহিংস কর্মকাণ্ড হয়। সাংবাদিকদের ওপরও হামলা হয়। মূলত এর মাধ্যমেই বিএনপি রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে পিছু হটে হরতাল-অবরোধের মতো ‘ধ্বংসাত্মক’ কর্মসূচি পালন শুরু করে। ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত হরতাল-অবরোধের সমর্থনে ২৮৪টি অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে, এতে ট্রেনসহ ২৮০টি বাস, গাড়ি ও ১৫টি স্থাপনা ক্ষতিগ্রস্ত হয়; মৃত্যু হয় ছয়জনের।
অসহযোগকে পাত্তা না দিয়ে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, হাস্যকর কর্মসূচি! বিএনপি এমন কোনো রাজনৈতিক দল না যে মানুষ তাদের ডাকে সাড়া দেবে। এখন পর্যন্ত তাদের কোনো কর্মসূচিতেই তো মানুষ সাড়া দেয়নি। মানুষ এখন নির্বাচনমুখী। নির্বাচনের প্রচারের মাধ্যমে অসহযোগকে অসহযোগিতা করবে মানুষ। তবে বিএনপির এই অসহযোগ নিয়ে দল সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মসূচি নিচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকরা।
দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, বিএনপির আন্দোলন অসহযোগিতার আন্দোলন। তাদের আন্দোলনে কেউ নেই। তাদের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে কারও সমর্থন নেই। জনগণ কেউ সাড়া দেবে না। তাহলে আমরা আলাদা করে কেন তাদের নিয়ে ভাবব? ভাবনায় এখন শুধুই নির্বাচন।
অবৈধ ভোট চোর হাসিনা দেশ আঁচল করে হলেও সিলেকশন করবে কারণ এই দেশ ভারতের অংগরাজ্য বানাইবে শয়তান হাসিনা
কুলাংগার কাউয়া তোর পাচায় গরম ডিম দেওয়ার হবে ইনশাআল্লাহ