বালু বহনকারী গাড়ির ধাক্কায় পা ভাঙ্গলো ১ম শ্রেনীর ছাত্রী, অবরোধ করলো সড়ক
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবৈধ বালু ভর্তি ট্রাকের ধাক্কায় পা ভাঙল এক স্কুলছাত্রীর। প্রতিবাদে সহপাঠীরা সড়ক অবরোধ করেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা ভূনবীর ইউনিয়নের শাসন এলাকায় এ দূর্ঘটনাটি ঘটে।
মেয়েটি উপজেলার শাসন বটতল এলাকার ইসমাইল লস্কর এর মেয়ে রুমকি আক্তার (৫) বলে জানা যায়।প্রত্যক্ষদর্শী ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,উপজেলার ভুনবীর ইউনিয়নের শাসন সরকারি প্রাইমারি স্কুলের প্রথম শ্রেণীর ছাত্রী রুমকি আক্তার (৫) সকালে স্কুলে যাওয়ার সময় বালু ভর্তি একটি ডায়না ট্রাক রুমকিকে ধাক্কা দিলে তার পা ভেঙে যায়। পরে এলাকাবাসী এগিয়ে এলে ট্রাকের ড্রাইভার ট্রাক ফেলে পালিয়ে যায়। রুমকি আক্তারকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তবরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য মেয়েটিকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
সেখান থেকে মেয়েটিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় বলে জানা গেছে।বালু ভর্তি ট্রাকটি এলাকার কবির মোল্লার অবৈধ বালু বহন করছিল বলে নিশ্চিত করেন শাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পিনাকী রঞ্জন দেব।এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.মৌমিতা বলেন,রুমকি আক্তারের একটি পা খুব বাজেভাবে ভেঙেছে। আমরা মেয়েটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে মেয়েটিকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।এ ব্যাপারে বালু ব্যবসায়ী কবির মোল্লা বলেন,হঠাৎ দৌড় দেওয়ার কারনে বালুর গাড়ীর ধাক্কায় মেয়েটি সামান্য আঘাত পায়। আমরা মেয়েটিকে চিকিৎসা করাতে যা যা লাগে সবকিছু করব।
এসময় তিনি আরও বলেন,ভূনবীর ইউনিয়ন এর চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদ বিষয়টিকে বড় করার জন্য টিএনও,এসি ল্যান্ড স্যারকে এনেছেন মামলা দেওয়ার জন্য।এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভূনবীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রশিদকে মুঠো ফোন বলেন মেয়েটির অবস্থা আশঙ্কাজনক তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে।পরে শাসন প্রাইমারি স্কুলের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা উপজেলার মির্জাপুর সড়কটি ব্যারিকেট দিয়ে রেখেছেন বলে খবর পাওয়া যায়।এ ব্যাপারে শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলী রাজিব মাহমুদ মিঠুন বলেন,খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়ের হবে বলে তিনি জানান।
এসময় তিনি আরও বলেন,মেয়েটির সুচিকিৎসার সব ব্যয়ভার উপজেলা প্রশাসন বহন করবে। তিনি এলাকাবাসী ও স্হানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে তথ্যদিয়ে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান।এদিকে উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা আছকির মিয়া নামক ব্যক্তি এক লিখিত অভিযোগে বলেন গত ১৬ আগস্ট শ্রীমঙ্গল উপজেলা ইউএনও, সহকারী ভুমি ও পরিবেশ অধিদপ্তর মৌলভীবাজার বরাবর অভিযোগ পত্র জমা দেন। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন একই এলাকার বাসিন্দা মির্জাপুর ইউপি সদস্য মনু মিয়া, ছেলে জুয়েল মিয়াসহ অভিযুক্ত করে লিখিত বক্তব্য আছকির মিয়া বলেন আমার মালিকানা জমিতে জোর পূর্বক পাহাড়,গাছ কেটে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে স্তুপ আকারে জমা করে রেখেছেন পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে আমাকে কেন অভিযোগ করেছি।
এর প্রতিকার চেয়ে বিভিন্ন দফতরে ধর্না দিয়েও কোন সুরাহা পাননি জানান তিনি।এবিষয়ে জানতে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর এর সহকারী পরিচালক মোঃ মাঈদুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, সরেজমিন ইন্সপেক্টর তদন্ত করেছে ও এর প্রতিবেদন আগামী সোমবার নাগাদ উপস্থাপন করবেন তিনি অফিসের বাহিরে আছেন।এই বিষয়ে জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহ্সান এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি উপজেলা কর্মকর্তাদের অবগত করতেছি এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।এ ব্যাপারে এলাকাবাসীরা জানান,অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা এলাকার কৃষি জমি থেকে মেশিন দিয়ে দীর্ঘ বছর থেকে বালু উত্তোলন করে পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি সাধন করছে।
তাদের উৎপাতে রাস্তাঘাট ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নামকাওয়াস্তে অভিযান পরিচালনা করা হলেও তারা আবার পুনরায় বালু উত্তোলন করে যান বলে তারা জানান।
বাংলা ম্যাগাজিন /এনএইচ