ব্যাপক খরা ও দাবদাহে চীনে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের চেষ্টা
চীনের দক্ষিণ–পশ্চিম অঞ্চলে ব্যাপক খরা ও দাবদাহ চলছে। অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। এই প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ মানুষজনকে স্বস্তি দিতে চীনা কর্তৃপক্ষ ভিন্ন চিন্তা শুরু করেছে। দেশটির মধ্য ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু অংশে কৃত্রিম বৃষ্টিপাতের চেষ্টা করছে চীনা কর্তৃপক্ষ। খবর বিবিসির।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, তীব্র খরার মুখে পড়া ইয়াংশি নদীর আশপাশের প্রদেশগুলো বৃষ্টিপাতের ঘাটতি মোকাবিলায় ক্লাউড সিডিং বা কৃত্রিম বৃষ্টিপাত ঘটানোর চেষ্টা করছে। হুবেইসহ কিছুসংখ্যক প্রদেশে রকেটের মাধ্যমে আকাশে রাসায়নিক পদার্থ ছিটানো হচ্ছে।
এশিয়ার দীর্ঘতম জলপথ হিসেবে পরিচিত ইয়াংশি নদীর পানি এখন সর্বোচ্চ নিম্নস্তরে পৌঁছেছে। কিছু অংশে স্বাভাবিক পরিস্থিতির তুলনায় অর্ধেকেরও কম বৃষ্টি হয়েছে। চীনের কর্মকর্তারা বলছেন, জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য যে জলাধারগুলো ব্যবহৃত হয়, সেখানেও পানি কমে গেছে।
এ ছাড়া প্রচণ্ড গরমে এয়ার কন্ডিশনের ব্যবহার বেড়ে গেছে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তীব্র সংকটের মুখে পড়েছে। চীনের জাতীয় জলবায়ু কেন্দ্র বলছে, চীনে টানা দুই মাস ধরে যে দাবদাহ চলছে, তা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাতে বিবিসি জানিয়েছে, চীনের দাঝো শহরটিতে ৫৪ লাখ মানুষের বাস, যাদের তিন ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিংয়ে থাকতে হচ্ছে। দাবদাহের এলাকায় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর অর্ধেক এখন পানি নেমে যাওয়ায় উৎপাদনে যেতে পারছে না বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ক্লাউড সিডিংয়ের মাধ্যমে মূলত আকাশে বৃষ্টির জন্য উপযুক্ত না হওয়া মেঘের ওপরে রাসায়নিক ছিটানো হয়। এরপর মেঘ ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টি হয়ে মাটিতে ঝরে। কিন্তু কিছু এলাকার আকাশে যথেষ্ট মেঘ না থাকায় কৃত্রিম বৃষ্টির প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এদিকে সিচুয়ান প্রদেশসহ আশপাশের এলাকায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পেরিয়ে গেছে।
এ কারণে সিচুয়ানের সরকারি অফিসগুলোয় এয়ার কন্ডিশনারের তাপমাত্রা ২৬ ডিগ্রির নিচে না রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। অনেক এলাকায় শ্রমিকদের লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। বিদ্যুৎ–সংকটে লাখ লাখ মানুষকে অন্ধকারে থাকতে হচ্ছে।
বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে