শিক্ষাঙ্গন

নভেম্বরের আগে বেতন পাবেন না শিক্ষকরা

কমল কান্তি বিশ্বাস একজন প্রধান শিক্ষক। গত ২০ বছর শিক্ষকতা করেছেন বিনা বেতনে। গত জুলাই মাসে সুখবর আসে তার পেশাগত জীবনে।

তার প্রতিষ্ঠান বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাটি ইউনিয়ন জুনিয়র গার্লস স্কুলটি এমপিওভুক্ত ঘোষণা করে সরকার। তবে এখনো বেতনভাতা পাননি শিক্ষক কমল কান্তি। তার মতোই নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া ২ হাজার ৫১টি স্কুল ও কলেজে কর্মরত শিক্ষক-কর্মচারী এখন বেতনের আশায় দিন গুনছেন। সরকারের কাছে দ্রুত বেতন-ভাতা চান তারা।উল্লেখ্য, গত ৬ জুলাই ২ হাজার ৭১৬টি ননএমপিও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত ঘোষণা করে সরকার। এ তালিকায় ২ হাজার ৫১টি স্কুল-কলেজ এবং ৬৬৫টি মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

নতুন এমপিওভুক্ত মাদরাসা ও কারিগরি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওর আবেদন নেয়া শুরু হলেও স্কুল-কলেজগুলোর এমপিও কোড দেয়ার কাজই এখনো শেষ করতে পারেনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেল। তাই নতুন এমপিওভুক্ত দুই হাজারের বেশি স্কুল-কলেজের শিক্ষকরা নভেম্বরের আগে বেতন পাবেন না।গতকাল সোমবার দুপুরে অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেলের সিনিয়র সিস্টেম এনালিস্ট খন্দকার আজিজুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রতিষ্ঠানগুলোর এমপিও কোড দেয়ার কাজ চলছে। হয়তো আরও এক সপ্তাহ লাগতে পারে।

এরপর শিক্ষক কর্মচারীরা বেতন ভাতার আবেদন করতে পারবেন।এক প্রশ্নের জবাবে এই কর্মকর্তা বলেন, বিশেষভাবে নতুন এমপিওভুক্ত স্কুল-কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওর আবেদন নেয়ার পরিকল্পনা নেই। এমপিও কোড দেয়া হলে শিক্ষকরা নিয়মিত প্রক্রিয়ায় এমপিওর আবেদন করতে পারবেন।মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের বেসরকারি কলেজ শাখার দায়িত্বে থাকা উপপরিচালক মো. এনামুল হক হাওলাদার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, কোড দেয়ার কাজ শেষ হলে শিক্ষকরা অক্টোবরে এমপিওর আবেদন করতে পারবেন। এরপর নভেম্বরে তারা বেতনভাতা তুলতে পারবেন।

তবে, সব ঠিক থাকলে শিক্ষক-কর্মচারীরা জুলাই থেকে এমপিও পাবেন।জানা গেছে, প্রতি জোড় মাসে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সেল স্কুল-কলেজের শিক্ষক কর্মচারীদের এমপিওর আবেদন গ্রহণ করে। এরপর এমপিও কমিটি সভা করে মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের যাচাই-বাছাই করা আবেদনগুলোর অনুমোদন দিয়ে তাদের এমপিওভুক্ত করে। চলতি আগস্ট মাসের নিয়মিত এমপিওর আবেদন শেষ হয়েছে

 শিক্ষক- কর্মচারীরা এখন এমপিও কোডের অপেক্ষায় আছেন। তবে, তাদের এমপিও বা বেতনভাতা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আদেশ জারির তারিখ অর্থাৎ ৬ জুলাই থেকে কার্যকর হবে।এদিকে আবেদন করার সুযোগ না পাওয়ায় শিক্ষকরা রয়েছেন দু:শি্চন্তায়। নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া সৈয়দকাটি ইউনিয়ন জুনিয়র গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষক কমল কান্তি বিশ্বাস দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, ২০০২ খ্রিষ্টাব্দে শিক্ষকতার শুরু করে এখনো বেতন পাচ্ছি না।

আমাদের গতবছর অর্থাৎ ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাস থেকে এমপিওভুক্ত করার ঘোষণা দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু দেয়া হয়েছে ২০২২ খ্রিষ্টাব্দে। আমরা চাই, দ্রুত আমাদের এমপিও কার্যকর হোক।নতুন এমপিওভুক্ত হওয়া দেওয়ান আব্দুর রহিম হাইস্কুল এন্ড কলেজের প্রভাষক মো. সান্ত আলী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, সরকারের কাছে দাবি, দ্রুত এমপিও কোড দিয়ে সেপ্টেম্বরেই শিক্ষকদের বিশেষ পন্থায় এমপিওর আবেদন নেয়া হোক।

Back to top button