শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতিকে কুপিয়ে হত্যা
শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সাইফুল ইসলাম মালতকে (৪২) কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে জাজিরার উত্তর খোসাল সিকদার কান্দি গ্রামে তাঁকে কুপিয়ে আহত করা হয়। দিবাগত রাত একটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
সাইফুল স্থানীয় বিএম মোজাম্মেল হক উচ্চবিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক। প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও নিহত সাইফুল ইসলামের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে সাইফুল জাজিরা উপজেলা সদর থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। রাত পৌনে ১০টার দিকে বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছালে একদল দুর্বৃত্ত তাঁর ওপর হামলা চালায়।
এ সময় তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে রাস্তায় ফেলে রেখে যায়। পরে খবর পেয়ে স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়। রাত একটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
জাজিরা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইলিয়াছ মাদবর ও উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সেলিম মাদবর গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশের ধারণা। হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে আজ বুধবার ভোর পাঁচটার দিকে সুজন ফকির (৩০) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
সাইফুলের ভাই মো. সামাদ বলেন, ‘আমরা রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। সাবেক সংসদ সদস্য মোজাম্মেল হকের অনুসারী হওয়ায় অনেক দিন ধরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ। ওই পক্ষের শাহিন সিকদার, সুজন ফকিরসহ ২০-২৫ জনের একটি দল আমার ভাইয়ের ওপর হামলা করেছে। তারাই আমার ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাজিরা উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি সেলিম মাদবরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, তিনি বর্তমানে ঢাকায় চিকিৎসাধীন। তিনি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জাজিরা পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলিয়াছ মাদবর বলেন, ‘কারা সাইফুলকে হত্যা করেছে, তা পুলিশ জানে। সাইফুলের পরিবার পুলিশকে তাঁদের নাম বলেছে। আমি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না।’
সাইফুলের স্ত্রী সাথী আক্তার বিলাপ করতে করতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিলেন। তিনি বলছিলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ করি। তারপরও কেন আমার স্বামীকে আওয়ামী লীগের সমর্থকেরা মেরে ফেলল? আমার সন্তানদের এখন কী হবে!’
জাজিরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ইলিয়াছ মাদবর ও সেলিম মাদবর গ্রুপের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব ছিল। নিহত সাইফুল ইলিয়াছের সমর্থক ছিলেন। এ ঘটনার জেরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আরও তদন্ত করা হবে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে আটক করা হয়েছে। তবে এখনো কোনো মামলা হয়নি।