ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলামকে সাদাপোশাকের পুলিশ টেনেহিঁচড়ে গাড়িতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।গতকাল শুক্রবার রাতে ধানমন্ডির ইবনে সিনা হাসপাতালের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে। আজ শনিবার দুপুরে নয়াপল্টনে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ এ অভিযোগ করেন।
সাইফ মাহমুদ অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় সভাপতিকে তুলে নিতে ব্যর্থ হলে সেখানে থাকা ময়মনসিংহ মহানগর ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক আজিজুর রহমান ও কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আবদুর রহমানকে বেধড়ক মারধর করে নিয়ে যায় পুলিশ। আজ তাঁদের কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
সাইফ মাহমুদ বলেন, কাজী রওনকুল ইসলাম ধানমন্ডির ওই সড়কে দাঁড়িয়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় সাদাপোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাত-আটজন সদস্য তাঁকে প্যান্টের বেল্ট ধরে টানাহিঁচড়ে তুলে নেওয়ার চেষ্টা চালান। তখন পাশেই পুলিশের দুটি গাড়ি ছিল। প্রায় ৪৫-৫০ নেতা–কর্মীর মধ্য থেকে ছাত্রদল সভাপতিকে তুলে নিতে ব্যর্থ হয়ে পুলিশ সবার সঙ্গে অশালীন আচরণ করে এবং কয়েকজনকে মারধর করে।
সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরও অভিযোগ করেন, এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আশরাফুল ইসলাম নামে ছাত্রদলের আরেক নেতাকে রাজধানীর কাকরাইল মোড় থেকে উঠিয়ে নেয় পুলিশ। গুলশান থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশরাফুল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে বাসায় যাচ্ছিলেন।
এ বিষয়ে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ‘নাশকতার পরিকল্পনা, সরকারি কাজে বাধা ও পুলিশকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় ছাত্রদলের দুজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। আজ সকালে পুলিশ বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে।’
গতকাল শুক্রবার ভোররাতে আশরাফুলকে মিরপুর ডিওএইচএস এলাকায় হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় ফেলে যাওয়া হয়। আজ সকালে পরিবারের লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় নিয়ে যান। আশরাফুলের দুটি ছবিও সাংবাদিকদের দেওয়া হয়। একটি তাঁকে হাতকড়া পরিয়ে তুলে নেওয়ার সময়ের এবং অন্যটি হাত ও চোখ বাঁধা অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকার বলে দাবি করেন ছাত্রদল নেতারা।
কী কারণে পুলিশ ছাত্রদল সভাপতিসহ অন্য নেতাদের হয়রানি করতে পারে—জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ বলেন, ‘ছাত্রদলের নতুন কমিটি হওয়ার পর সরকারি মহল শঙ্কিত। আমার মনে হয়, নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়াতেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই আচরণ করেছে।’
উদ্ধার হওয়ার পর আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়েছে কি না, জানতে চাইলে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আশরাফুলের বড় ভাইয়ের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। তিনি আশরাফুলের শুধু উদ্ধার হওয়া এবং তাঁকে নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা বলেছেন। এর বাইরে আর কোনো কথা বলতে রাজি হননি তিনি।’সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু আফসান মোহাম্মদ ইয়াহইয়াসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।