চুরির ছয় দিন পর অভিযান চালিয়ে শিশুকে উদ্ধার করেছে পুলিশ
গাজীপুরে দেড় বছর বয়সী এক শিশুকে চুরি করে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। চুরির ছয় দিন পর অভিযান চালিয়ে পুলিশ ওই শিশুকে উদ্ধার করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে শনিবার রাতে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নগরের কাশিমপুর এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ ও শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৮ এপ্রিল দুপুরে কাশিমপুরের ডেলটা মোড় এলাকায় নিজ বাড়িতে আরিয়ানকে গোসল করিয়ে ঘরের বারান্দায় দাঁড় করিয়ে রাখেন তাঁর মা। এরপর শিশুটির মা নিজে গোসল করতে যান। এ সময় একটি সংঘবদ্ধ দল আরিয়ানকে চুরি করে নিয়ে যায়।
গোসল শেষে ফিরে আশপাশে খোঁজাখুঁজি করেও আরিয়ানকে আর পাননি মা। পরে আরিয়ানের বাবা আনোয়ার হোসেন কাশিমপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। এরপর গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত শনিবার রাতে কাশিমপুর জেলখানার পাশের এনায়েতপুর এলাকা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। সে সময় শিশুটিকে চুরির অভিযোগে ওই তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন ঝিনাইদহের প্রয়াত মামুন মিয়ার স্ত্রী শিমু আক্তার (২৬), জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার গোওয়ালগাঁও গ্রামের মুকিম বিল্লা (৪৩) ও ফরিদপুর সদর উপজেলার কবিরপুর গ্রামের রীনা আক্তার (৩৮)। মুকিম ও রীনা স্বামী-স্ত্রী। গ্রেপ্তার তিনজনই কোনাবাড়ি কাশিমপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
গাজীপুর মহানগর পুলিশের কাশিমপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) দীপংকর রায় জানান, কাশিমপুরের এনায়েতপুর এলাকার মুকিম ও রীনার সংসারে কোনো সন্তান ছিল না। যার কারণে গ্রেপ্তার শিমুর মাধ্যমে তাঁরা ওই শিশুকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে কিনে নেন।
এসআই দীপংকর আরও জানান, ৫০ হাজার টাকায় শিশুটিকে বিক্রি করে নগদ ৩০ হাজার টাকা পান শিমু। শিশুটি উদ্ধারের সময় শিমুর কাছ থেকে ১৫ হাজার ৫০০ টাকা জব্দ করা হয়েছে। আজ রোববার তিন আসামির সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠালে আদালতের বিচারক মুকিম ও রীনার একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আর শিমু স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ায় তাঁকে রিমান্ড দেওয়া হয়নি। শিশুটিকে তার মা–বাবার কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শিশু আরিয়ানের পিতা আনোয়ার হোসেন বলেন, ছেলেকে না পেয়ে দিশাহারা হয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেছেন। ছেলেকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে জানতে পেরে খুবই কষ্ট হচ্ছিল। ছয় দিন পর ছেলেকে বুকে ফিরে পেয়ে খুবই স্বস্তি বোধ করছেন তিনি।