ধর্ষণচেষ্টার শিকার এক কলেজছাত্রীর বিষপানে আত্মহত্যা
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় ধর্ষণচেষ্টার শিকার এক কলেজছাত্রী বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন। বিষপানে মারা যাওয়া লিপি খাতুন উপজেলার চৌকিবাড়ি ইউনিয়নের কৈগাতী গ্রামের কৃষক ফজলুল হকের মেয়ে। লিপি এ বছর জালশুকা হাবিবুর রহমান ডিগ্রি কলেজ থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেছেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লিপিকে দুই বছর ধরে উত্যক্ত করে আসছিলেন বাবুল মিয়া। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রামের মাতবরদের কাছে বিচার চান মেয়েটির বাবা। কিন্তু তারা এ ঘটনার কোনো সুরাহা করতে পারেননি। বিচার চাওয়ার পর থেকে আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন বাবুল।
গত ১২ মার্চ সকালে লিপির বাড়িতে কেউ ছিল না। এ সুযোগে লিপির ঘরে ঢোকেন বাবুল ও তার সহযোগী রফিকুল। তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধর্ষণের চেষ্টা চালান বাবুল। এ সময় তার চিৎকারে লোকজন ছুটে এলে তারা সটকে পড়েন। ঘটনাটি জানাজানি হলে সমাজে মুখ দেখানোর ভয়ে লিপি বিষপান করেন।স্বজনরা তাকে প্রথমে ধুনট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পরে ১৩ মার্চ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে, ধর্ষণচেষ্টার পর অভিযুক্ত বাবুল ও রফিকুলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন লিপির বাবা। কিন্তু অভিযোগটি আমলে নেয়নি পুলিশ। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে লিপির মৃত্যুর খবর পেয়ে অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।
লিপির বাবা ফজলুল হক বলেন, ‘মেয়েকে উত্যক্তের বিচার গ্রামের মাতবরদের কাছে চেয়েও পাইনি। থানায় অভিযোগ দিলেও পুলিশ খোঁজখবর নেয়নি। আমার মেয়ের মতো যেন আর কারও মেয়েকে এভাবে জীবন দিতে না হয়! আমি এর দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।’ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ আমলে না নেওয়ার বিষয়ে ধুনট থানার ওসি কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, অভিযোগটি তদন্ত সাপেক্ষে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।