সাভার

‘নারীর চুল কাটা’ নিয়ে মধ্যরাতে তুলকালাম

সাভারে এক নারীর চুল কাটার ঘটনা নিয়ে মধ্যরাতে তুলকালাম কাণ্ড ঘটেছে। ঘটনা তদন্তে গিয়ে স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার কর্মীদের রোষানলে পড়ার অভিযোগ করেছে পুলিশ। তবে আওয়ামী লীগ নেতার দাবি, এক নারীর চুল কাটার ঘটনায় তাকে ফাঁসিয়ে ফায়দা নিতে চেয়েছিল পু’লিশ। তবে পুলিশ বলছে, লোকাল কিছু লোকজনের সাথে পুলিশের ভুল বুঝাবুঝি হয়েছিলে। যেটা গুরুতর নয়। প্রাথমিকভাবে পাওনা টাকার জন্য ওই নারীর চুল কেটে নেওয়ার সত্যতা পাওয়া গেছে। 

এঘটনায় বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে আশুলিয়া থানার অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থল জিরাবো এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। এসময় অভিযোগকারী নারী শাহনাজ বেগম ও অভিযুক্ত লাকী আক্তারকে পুলিশ থানায় নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতার লোকজন বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।

অভিযোগকারী নারী শাহনাজ বেগমের স্বামী মো. নীরব বলেন, প্রায় তিন বছর আগে তারা ওই এলাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায় চলে আসেন। তখন লাকী বেগম নামে এক দোকানীর প্রায় ১০ হাজার টাকা বকেয়া পড়েছিল। এরপর অভাব অনটনের কারণে আর ঢাকায় ফেরা হয়নি। পরে তার স্ত্রী ঢাকায় গার্মেন্টে চাকরি নিয়ে ধারদেনা পরিশোধের জন্য এক সপ্তাহ আগে ঢাকায় যান। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার সকালে একটি গার্মেন্টের সামনে চাকরির জন্য গেলে সেখান থেকে তাকে ধরে নিয়ে যায় দোকানি লাকী। এরপর তার বাসায় নিয়ে আমার স্ত্রী’র চুল কেটে দেন। তাকে মারধর করে নির্যাতন করেন। পরে আমার স্ত্রী বিষয়টি আমাকে ফোনে জানায়। এরপর গতকাল রাতে ওখানে পু’লিশে গিয়েছিলে বলে জানতে পারি।

ইয়ারপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান  বলেন, উনি (পুলিশ) মহিলার ভিডিও করছে। পরে আমারে আইনা বহাইছে। বহায় মনে করছে, আমি ভয় পামু। সিস্টেম করমু। পোলাপান তহন ক্ষেইপা গেছিলোগা অনেক। আমি কইছি, হ ঠিক আছে। আমি যুদি দুষী হইয়া থাকি। যুদি আমি আসলেই আমি মহিলারে এইটা কইরা থাকি, মহিলা কোথায়? আমি কইছি, মহিলারে নিয়া আসেন। আমি আপনের গাড়িতে চইলা যামু আরামছে। পরে মহিলা হাজার হাজার মানুষের সামনে সব কইছে। 

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সফিউল্লাহ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, গতকাল ডিউটির সময়ে তদন্ত স্যার আমাকে ভিকটিমের নম্বর এসএমএস করে সেখানে যেতে বলেন। ফোর্সসহ সন্ধ্যায় আমি সেখানে যাই। পরে উপস্থিত লোকজনের সামনে আমি ভিকটিমের কাছে ঘটনার বর্ণনা শুনি। মজিবর নামে একজন তার চুল কেটে আরেকজনকে ফাঁসাতে বলেছেন বলে আমা তিনি জানান।

ওই স্বীকারোক্তির কিছুটা আমি ভিডিও করি। এরপর মজিবর নামের ওই ব্যক্তিকে তার বাড়ির সামনেই বাজারে ডেকে পাঠাই। মজিবরকে আমি চিনিও না। পরে তাকে আমার সাথে থানায় আসতে বলি ওসি স্যারের কাছে। কিন্তু ওই সময় অনেক লোকজন আমাকে বাধা দেন। তারা অনেক খারাপ আচরণও করেন আমার সাথে। পরে থানা থেকে অতিরিক্ত ফোর্সসহ আমার সিনিয়ররা সেখানে উপস্থিত হন। তারপরও যখন ভিকটিম ও অভিযুক্তকে আনা হচ্ছিল তখনও মজিবরের লোকজন উত্তেজিত হয়ে বিশৃঙ্খলা করেছে।

Back to top button