স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদপান করা কী এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম? এটা আমাদেরকে ব্যাখ্যা করে বলতে হবে
আগামী ১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ পর্যন্ত ১০ দিন ঢাকায় রাজনৈতিক কর্মসূচির বিষয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের নির্দেশনায় বিস্ময় প্রকাশ করে তা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। আজ সোমবার (১৫ মার্চ) সকালে গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই দাবি জানান। তিনি বলেন, গতকাল রবিবার ডিএমপির যিনি ভারপ্রাপ্ত কমিশনারের দায়িত্বে আছেন তার নির্দেশনা আমাদেরকে বিস্মিত করে্ছে। কারণ, সরকারি প্রোগ্রামের সঙ্গে আমাদের প্রোগ্রামের কোনো বিরোধ নেই। তারা তাদের প্রোগ্রাম করবে, আমরা আমাদের প্রোগ্রাম করবো।
‘এই নির্দেশনা প্রত্যাহার করে আমাদের রাজনৈতিক দল ও অন্যান্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের এই সূর্বণ জয়ন্তী পালনের জন্য সব রকমের অনুষ্ঠানে যেন বাঁধা সৃষ্টি করা না হয় সেই অনুরোধ আমরা জানাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল উল্লেখ করেন, শুধু তাই নয়, তিনি (মনিরুল ইসলাম) বলেছেন যে, এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রামস। এটা কেনো বলেছেন, কীভাবে বলেছেন, সেটার একটা ব্যাখ্যা আ্মরা জানতে চাই। ‘নো ওয়ান শোড হোল্ড দেট- হি সেইড, ওয়াট হি সেইড- এন এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম। ওয়াট ডাজ মিন বাই এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাস? তিনি কী বুঝাচ্ছে এটা আমাদেরকে ব্যাখ্যা করে বলতে হবে।
‘আমরা বুঝতে পারছি না, স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদপান করা বা পালন করা কী এন্টি ন্যাশনাল প্রোগ্রাম? তারা(সরকার) ছাড়া আর কেউ করতে পারবে না-এটা কোন ধরনের চিন্তাভাবনা থেকে আসছে আমরা বুঝতে পারছি না।’
১৭ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ রাষ্ট্রীয়ভাবে নেয়া কর্মসূচির প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা তো অবশ্যই সরকারি প্রোগ্রাম হবে। বিদেশ থেকে রাষ্ট্রীয় মেহমানরা আসবেন। আমরা যথা সম্ভব নিসন্দেহে সেটাকে সহযোগিতা করবো।’
‘এটা আমাদের জাতির সন্মানের প্রশ্ন, এটা আমাদের মর্যাদার প্রশ্ন –আমরা অবশ্যই সেটাকে সেইভাবে দেখবো। কিন্তু হঠাত করে ডিএমপি থেকে এই ধরনের নির্দেশনা আমি মনে করি যে, আমাদের স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী পালনের যে উদ্দেশ্য, সেটাকে ব্যাহত করবে। একই সঙ্গে স্বাধীনতার বিষয়টাকে প্রশ্নবিদ্ধি করছে কিনা এটাও আমাদেরকে লক্ষ্য করে দেখতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা খুব পরিস্কার করে যে কথাটা বলতে চাই, বিএনপি হচ্ছে একটি সত্যিকার অর্থেই স্বাধীনতার যোদ্ধাদের দল, মুক্তিযোদ্ধাদের দল। একাত্তর সালে বিএনপি ছিলো না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেব স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, স্বাধীনতার ঘোষক। তিনি এই দল পরে প্রতিষ্ঠা করেছেন গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রবর্তন করবার জন্যে, প্রতিষ্ঠা করবার জন্য।
‘বিএনপি সব সময়ই মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করে। মূল চেতনা যেটা ছিলো সেটাকে বিশ্বাস করে, জনমানুষের যে আকাংখা সেটাকে সামনে রেখে গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য বিএনপি কাজ করে আসছে, করেছে। বহু দলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে বিএনপি, সংসদীয় গণতন্ত্র নিয়ে এসেছে বিএনপি, বাক স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে বিএনপি, জনগনের যে কথা বলার যে অধিকার সেই অধিকার নিশ্চিত করেছে বিএনপি, গণতন্ত্রের যে মৌলিক বিষয়গুলো বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছে। আজকে আমাদের দুর্ভাগ্য যখন আমরা ৫০ বছর পরে যখন আমরা স্বাধীনতা সূবর্ণ জয়ন্তী পালন করতে যাচ্ছি তখন সেই গণতন্ত্র বাংলাদেশে নেই, মানুষের অধিকার হরণ করা হয়েছে, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা কেড়ে নেয়া হয়েছে দেশে একটা এক দলীয় শাসনব্যবস্থা প্রবর্তন করবার জন্য একটা নীলনকশা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে।’
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বিএনপির স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনে স্বরচিত কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটির উদ্যেোগে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।
স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহবায়ক খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতি ও সদস্য সচিব আবদুস সালামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বরচিত কবিতা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা কমিটির কর্মসূচি তুলে ধরেন কমিটির সদস্য সচিব আবদুল হাই শিকদার।
১৬ থেকে ৩০ মে উপজেলা ও থানা পর্যায়ে, ১ জুলাই থেকে ৩১ সেপ্টেম্বর জেলা পর্যায়ে, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভাগীয় পর্যায়ে এবং ২০২২ সালের ২৬ মার্চ জাতীয়ভাবে সমাপনী কর্মসূচি করবে এই কমিটি। শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন, স্বরচিত কবিতা ও ছড়া, আবৃতিকারদের আবৃত্তি, শিশু-কিশোর, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপস্থিত বক্তৃতা এবং কুইজ প্রতিযোগিতা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে কমিটির সদস্য মজিবুর রহমান সারোয়ার, নজরুল ইসলাম মনজু, ফরিদা ইয়াসমীন, রিয়াজ উদ্দিন নসু, আরিফুর রহমান মোল্লা, শায়রুল কবির খান, শাহজাহান সম্রাট, রিটা আলী, মনিরুজ্জামান মনির, এনামুল হক জুয়েল, মিজানুর রহমান, রফিক লিটন প্রমূখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।