দেশের জনগণই এই কর্তৃত্ববাদী শাসককে উচ্ছেদ করবে
জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেন
বর্তমান সরকারের পতনে জনগণের প্রতি আবারও পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষকদলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, ‘দেশের জনগণই কোনও না কোনও ভাবে এই কর্তৃত্ববাদী শাসককে উচ্ছেদ করবে। এবং সেটা খুব বেশি দেরি হবে- তা আমার কাছে মনে হয় না।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্রপ্রিয়। বাংলাদেশের মানুষ স্বাধীনচেতা। ব্রিটিশের কর্তৃত্ব তারা মানে নাই। পাকিস্তানের কর্তৃত্ব তারা মনে নাই। এখন যদি কোনও শাসক মনে করে গায়ের জোরে, পুলিশ দিয়ে জনগণকে দমিয়ে রাখবে সেটাও সম্ভব হবে না।’
বুধবার (২৫ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে করোনা প্রতিরোধে জনসচেতনতা ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন।
‘সরকার যেটা ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন সেটাই মিডিয়ার সামনে বলে’- এমন অভিযোগ করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘তাদের (আওয়ামী লীগ ও নির্বাচন কমিশন) একটাই উদ্দেশ্য, বিএনপিকে কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে, নিশ্চিহ্ন করবে, হেয় প্রতিপন্ন করবে এবং বাংলাদেশ থেকে বিতাড়িত করবে। তবে দেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়।মানুষ স্বাধীনচেতা। গায়ের জোরে জনগণকে দমিয়ে রাখা যাবে না।’
জিয়া রহমান ফাউন্ডেশন’র নেতা-কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে কৃষকদলের আহ্বায়ক বলেন, ‘আপনাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি এ কারণে যে, এত সুন্দর করে মানুষের সেবা করা যায় তা আপনারা প্রমাণ করে দিলেন।’
দুদু বলেন, ‘সরকার করোনায় সচেতনতামূলক কতটুকু সেবা দিয়েছে বা কাজ করেছে আমার জানা নাই। কারণ টেলিভিশন ও পত্রিকার বাইরে এ ভয়াবহ করোনায় সরকারের উদ্যোগ শুধু মুখে মুখে আছে, বাস্তবতায় এর তেমন একটা দেখা যায় নাই।’
বিএনপির এই শীর্ষস্থানীয় নেতা বলেন, ‘দেশের কৃষক, শ্রমিক, মেহনতি মানুষ নানাভাবে আজকে ক্ষতিগ্রস্ত, নানাভাবে পদস্থ। সেই জায়গায় সরকারের যে ভূমিকা থাকার কথা ছিল সেই ভূমিকা যত স্বল্পই হোক জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন পালন করছে। তারা মানুষের সেবা দিচ্ছে সচেতনতার উদ্যোগ নিচ্ছে। আর সরকার বাস্তবতার বাইরে গিয়ে শুধু মুখে মুখে মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছে।’
সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে ফেলেছে মন্তব্য করে ছাত্রদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের কোনও প্রতিষ্ঠানই আজ কাজ করছে না। না প্রশাসন, না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, না বিচারালয়, না নির্বাচন কমিশন। সবগুলোকে ধ্বংস করে ফেলেছে সরকার। কর্তৃত্ববাদী শাসক গণতন্ত্রকে একেবারে মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়েছে। যে গণতন্ত্রের জন্য এদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ শহীদ হয়েছেন, লক্ষ লক্ষ মা-বোন, সম্ভ্রম হারিয়েছেন, হাজার হাজার কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়েছে, সেই গণতন্ত্রের প্রতিফলন আজকে কর্তৃত্ববাদী শাসক। যে শাসনে মানুষ ভোট দেয়ার ন্যূনতম ক্ষমতা রাখে না। কিন্তু একদিন দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসবে। মানুষ অধিকার ফিরে পাবে। মানুষ শান্তিতে বসবাস করবে। সে সময়টা আর বেশি দূরে বলে আমার মনে হয় না।’
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে ও আহ্বায়ক ডা. পারভেজ রেজা কাকনের সভাপতিত্বে ও কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, খায়রুল কবির খোকন ও ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী প্রমুখ।
পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন অধ্যাপক ড. আবুল হাসনাত মোহা. শামীম। অনুষ্ঠানের সার্বিক শৃংখলার দায়িত্বে ছিলেন ভলান্টিয়ার্স কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোর্শেদ হাসান খান।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, যুগ্ম মহাসচিব ও যুবদলের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার নাসিরউদ্দিন আহমেদ অসীম, শিরিন সুলতানা, ড্যাবের জহিরুল ইসলাম শাকিল, অধ্যাপক ড. আবদুল করিম, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমানউল্লাহ, ডা. মাসুদ আখতার জীতু, ডা. মেহবুব উল কাদির, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, ডা. মো. ফখরুজ্জামান, কৃষিবিদ শফিউল আলম দিদার, শামীমা রাহিম, মো. আমিনুল ইসলাম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, মো. সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সদস্য মো. মাইনুল ইসলাম, বিপ্লব উজ-জামান বিপ্লব, দবির উদ্দিন তুষার, ছাত্রদলের ফজলুর রহমান খোকন, ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাবি ছাত্রদলের রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মো. আমানউল্লাহ আমান, বুয়েট আসিফ হোসেন রচি, ছাত্রদলের ইডেন কলেজ ছাত্রদলের রেহানা আক্তার শিরিন প্রমুখ।
এসময় মেডিসিন, হৃদরোগ, বক্ষব্যাধি, শিশুরোগ, শিশু সার্জারি, গ্যাস্ট্রো এন্ট্রালোজি, পেইন ম্যানেজমেন্ট, অর্থপোডিক্স, চর্ম ও যৌন, গাইনেকোলোজি, নাক-কান-গলা, চক্ষু বিজ্ঞান, দন্ত রোগের বিভিন্ন সমস্যায় শতাধিক অসহায় ও দরিদ্র রোগীদের ফ্রি চেকআপ ও ওষুধ প্রদান করা হয়।