আফগানিস্তানে রুদ্ধদ্বার হয়ে দাঁড়িয়েছে নারীদের জীবন। তালেবান শাসনে পরাধীনতার শেকলে বন্দি অসহায় জীবনযাপন করছে তারা। নতুন নতুন ফতোয়ায় আটকে রাখা হয়েছে নারীদের। পড়াশোনা থেকে শুরু করে সবকিছুতেই নিষেধাজ্ঞা। এবার নারীদের পাথর ছুড়ে হত্যার প্রথাও ফিরিয়ে আনল তালেবান সরকার। ব্যভিচারের শাস্তি হিসাবে তাদের পাথর ছুড়ে হত্যা করা হবে। গত শনিবার (২৩ মার্চ) রাষ্ট্রীয় টিভিতে সম্প্রচারিত এক অডিওবার্তায় তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এই ঘোষণা দেন। দ্যা গার্ডিয়ান।
টেলিগ্রাফের হাতে আসা এক ভিডিওতে আখুন্দজাদা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নারীদের অধিকারের পক্ষে যে ওকালতি করছে তা শরিয়াহবিরোধী। আপনারা বলছেন, পাথর মেরে হত্যা করা নারী অধিকারের লঙ্ঘন। কিন্তু আমরা শিগগিরই ব্যভিচারের শাস্তি কার্যকর করব। আমরা নারীদের জনসমক্ষে বেত্রাঘাত করব। আমরা তাদের জনসমক্ষে পাথর মেরে হত্যা করব। তিনি আরও বলেন, কাবুল দখল নিয়েই তালেবানের কাজ শেষ হয়নি, এটি কেবল শুরু মাত্র। তার এমন বক্তব্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার কর্মীরা। তাদের মতে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় চুপ থাকায় এমন পদক্ষেপ নিতে পারছে তালেবান সরকার। এ বিষয়ে কথা বলেছেন সাফিয়া আরেফি। তিনি একজন আইনজীবী এবং আফগান মানবাধিকার সংস্থা উইমেনস উইন্ডো অব হোপের প্রধান। তার মতে, এ ঘোষণাটি আফগান নারীদের ১৯৯০ এর দশকে তালেবান শাসনের অন্ধকারতম দিনে নিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এখন তালেবানদের শাস্তি থেকে তাদের বাঁচাতে কেউ তাদের (নারীদের) পাশে দাঁড়াচ্ছে না। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নারী অধিকার লঙ্ঘনের বিষয়টিতে নীরব থাকতে চাইছে।’
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের একজন আফগান গবেষক সাহার ফেত্রাত বলেছেন: ‘দুই বছর আগে, নারীদের জনসমক্ষে পাথর মেরে হত্যা করার সাহস তাদের ছিল না; এখন তারা তাও করবে। তারা তাদের কঠোর নীতিগুলো একে একে পরীক্ষা করেছে এবং এটি এই পর্যায়ে পৌঁছেছে কারণ তাদের অপব্যবহারের জন্য দায়ী করার মতো কেউ নেই।
উল্লেখ্য, ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে আফগানিস্তানের নারীরা অনেক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে নারীদের শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও জনসমাগমপূর্ণ স্থানে কোনো প্রবেশাধিকার নেই। একজন তরুণ ছাত্রীর বরাত দিয়ে জানা যায়, ‘দেশটিতে অনেক পরিবারের জন্য মেয়েদের একমাত্র ভবিষ্যৎ হলো বিয়ে। তাদের মধ্যে হতাশা ব্যাপক।
তালেবান রাষ্ট্রীয়ভাবে শরিয়াহকে বাস্তবায়ন করছে। এই শরিয়াহর ঈমান রাখতে হয় বিশ্বের প্রতিটি মুসলিমকে। বাংলাদেশের ৮০ শতাংশ মানুষ শরিয়াহ শাসন চায়। এজন্য তালেবান যোদ্ধা হতেও প্রস্তুত বাংলাদেশের অনেক তরুণ। একটি ধর্মীয় রাষ্ট্র থেকে বের হওয়ার জন্য রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধ করেছে জনযুদ্ধ করেছে যে দেশের মানুষ, সেই ধর্মীয় রাষ্ট্র ফেরত পেতে সচেষ্ট এখন অনেক দল ও গোষ্ঠী। দুর্ভিক্ষ ও যুদ্ধ কবলিত একটা দেশ থেকে নিরাপদ থাকুক বাংলাদেশের মানুষ।