বাংলাদেশে আবার নতুন করে ভারত বিরোধী রাজনীতি শুরু হয়েছে। ভারতীয় পণ্য বর্জনের নামে ভারত বিরোধী রাজনীতিকে নতুন করে উস্কে দেওয়া হচ্ছে। আর এই উস্কে দেওয়ার নেপথ্যে রয়েছে ৭১ এর পরাজিত শক্তিরা। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় যে সমস্ত ব্যক্তি এবং গোষ্ঠী বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের বিরোধিতা করেছিলো, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করেছিলো, তারাই এখন নতুন করে ভারত বিরোধিতার রাজনীতিতে নতুন করে সামিল হয়েছে।
৭৫ পরবর্তী রাজনীতিতে বাংলাদেশে যে ভারত বিরোধী ধারা সূচনা করা হয়েছিলো, সে ধারাকেই আবার নতুন করে পুনর্জাগরণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এবারের ভারত বিরোধিতার একটা অন্যরকম তাৎপর্য রয়েছে। বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের যে মালদ্বীপ মডেল অনুসরণ করা হচ্ছে সেটি বিএনপির নিজস্ব মস্তিষ্ক প্রসূত কোন কর্মসূচি নয়। বরং বিএনপি এটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যারা বিএনপিকে পৃষ্ঠপোষকতা করে, আওয়ামী লীগর বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার করে তাদের দ্বারা উদ্ভাবিত এবং সেই প্রচারণাটাকে রাজনীতিতে প্রায় দেউলিয়া হয়ে যাওয়া বিএনপি আকড়ে ধরেছে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য।
তবে গভীরভাবে অনুসন্ধান করে দেখা গেছে যে, বাংলাদেশে ভারত বিরোধী রাজনীতিকে আবার চাঙ্গা করার পিছনে চীন এবং পাকিস্তানের সক্রিয় ভূমিকা রয়েছে। চীন বাংলাদেশে তাদের অবস্থান পাকাপোক্ত করতে চায়। এজন্য তারা বাংলাদেশে অর্থনৈতিক উন্নয়নে যেমন অংশীদার হিসেবে কাজ করছে ঠিক, তেমনি চীন বাংলাদেশে এমন কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়- যে প্রকল্পগুলোতে ভারত চাপে পড়বে। যেমন, তিস্তা ব্যারেজের কাছে শত কোটি টাকা খরচ করে বড় ধরনের কূপ খনন করে জলাধার নির্মাণ করার যে প্রকল্প বা ভারত-বাংলাদেশ সামীন্ত অঞ্চলে স্পর্শকাতর নির্মাণের প্রকল্পগুলো চীন অগ্রাধিকার দিয়ে রেখেছে। যদিও বাংলাদেশ অত্যন্ত বিচক্ষণতার সঙ্গে চীনের এই প্রলোভনগুলোকে গ্রহণ করছে না। কিন্তু চীন এখন বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে একটি ভারতবিরোধী আবহ তৈরী করার জন্য চেষ্টা করছে বলেও বিভিন্ন কূটনৈতিক পক্ষ মনে করছে। আর চীনের এই চেষ্টার পিছনে সায় দিচ্ছে পাকিস্তান।
পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই দীর্ঘদিন বাংলাদেশে কাজ করে এবং বাংলাদেশে তাদের একটা নেটওয়ার্ক ইতোমধ্যেই রয়েছে। এই নেটওয়ার্কটা আগে অত্যন্ত স্বতন্ত্র এবং সক্রিয় ছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ আইএসআই-এর প্যারলে ছিলো এবং তারা আইএসআই-এর স্বার্থ সংরক্ষণ করতেন- যে রাজনৈতিক দলই করুক না কেন। আইএসআই এখন চীনের মদদে এবং অর্থায়নে বাংলাদেশে আবার সক্রিয় রয়েছে বলে খবর রয়েছে। সে কারণেই এখন ভারতীয় পণ্য বর্জন নাটকে চীনকে সহায়তা দিচ্ছে আইএসআই।
বাংলাদেশে জনগণের মধ্যে একটি ভারতবিরোধী মনোভাব সৃষ্টির জন্য এই প্রকল্প এখন মাঠে নেমেছে বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। আর চীনের এই মিশন বাস্তবায়নের জন্য আইএসআই-এর কর্মযজ্ঞকে সফল করার জন্য দেউলিয়া হয়ে যাওয়া হতাশাগ্রস্ত বিএনপিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। বিএনপি, চীন এবং পাকিস্তান এখন ভারতবিরোধী রাজনীতি বাস্তবায়নের জন্য এক বিন্দুতে মিলিত হয়েছে। দেখা যাক, তারা কতটুকু সফল হতে পারে।
বাংলাদেশের জনগণে আর ভারত কে পাশে চায়না