বিএনপিরাজনীতি

বিএনপির প্রায় সব নেতাকেই কিনে রেখেছে সরকার

মেজর হাফিজ এর ঘটনার পর গত রাতে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে স্কাইপে বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়া। তারেক জিয়া দলের কাউকেই এখন আর বিশ্বাস করতে পারছেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়ে বলেছেন যে, আপনারা সবাই আসলে চোর, সবাই আসলে সরকারের দালাল, সরকারের কাছ থেকে সবাই সুযোগ সুবিধা নিচ্ছেন। কে কত নিচ্ছেন, সে হিসাবটা আমাকে একটু দেবেন, প্লিজ!
তারেক জিয়া ছিলেন অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এবং পুরো এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে বৈঠকে লন্ডনে পলাতক এই দণ্ডিত ব্যক্তি একাই কথা বলছেন। অন্যান্য নেতারা চুপচাপ শুনেছেন। রাত সাড়ে দশটা থেকে রাত সাড়ে এগারোটা পর্যন্ত প্রায় ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত এই স্কাইপি বৈঠকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মঈন খান, মির্জা আব্বাস, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

সিঙ্গাপুর থেকে এই বৈঠকে মির্জা ফখরুল আলমগীরের যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও শেষপর্যন্ত তিনি এই বৈঠকে যোগ দেননি।

বৈঠকে মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজের হঠাৎ বিএনপির প্রতি এত দরদ দেখানোর প্রসঙ্গ কথা বলে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপিকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে। বিএনপির বিভিন্ন নেতাকে নানারকম টোপ দিয়ে তাদেরকে পারচেজ করা হয়েছে। তার প্রমাণ মেজর হাফিজ। লন্ডনে পলাতক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বিএনপিতে কেউ সরকার থেকে টাকা পায় আন্দোলন করার জন্য, কেউ সরকার থেকে টাকা পেয়ে অসুস্থ হওয়ার জন্য, কেউ সরকার থেকে টাকা পায় জেলে যাওয়ার জন্য। আবার কেউ টাকা পায় চুপচাপ ঘরে বসে থাকার জন্য। কে কোন দিক থেকে পয়সা পাচ্ছেন, কে কোন দিক থেকে কিভাবে লাভবান হচ্ছে সেটা নিয়ে সন্দেহ। এভাবে একটি দল চলে কিনা- সেটা নিয়েও প্রশ্ন করেন লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া।

তবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ঢালাওভাবে এই ধরনের মন্তব্য শোভন নয়- বলে তার মতামত প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বিএনপিতে বহু ত্যাগী নেতা আছে, যারা জীবন উৎসর্গ করেছে, অনেক কষ্টে জীবনযাপন করেছেন। দু একজন নেতার পদস্খলনের জন্য সবাইকে ঢালাওভাবে দায়ী করা ঠিক নয়।

বিএনপির এই নেতা এটিও বলেন, যদি দলের ভিতর শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করতে হয়, তাহলে ঐ ‘লোম বাছতে কম্বল উজাড়’ হয়ে যাবে। তিনি এটিও বলেন, বিএনপির মধ্যে যেমন ইতিবাচক লোকজন আছে, তেমনি সরকারের সাথে গোপন যোগাযোগ করা ব্যক্তিরাও রয়েছেন। কারা সরকারের সাথে কিভাবে যোগাযোগ করছেন সেই খবরগুলো রাখতে হবে। ঢালাওভাবে কাউকে দোষী করা যাবে না।

একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রশ্ন তোলেন, মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজের এই সমস্ত ঘটনা আগে জানা হল না কেন। তাকে কেন স্বাধীনতা দিবসের বিএনপির কমিটির আহ্বায়ক করা হল। আহ্বায়ক হওয়ার পর এ ধরনের খবরগুলো প্রকাশিত হল কেন। এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু বলেন, এগুলো সবই সরকারের পাতানো ফাঁদ। সরকার যখন যাকে প্রয়োজন মনে করে তখন তাকে টোপ দেয়। আবার যখন প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় তখন সেই টোপ প্রকাশ্যে আনে। মেজন হাফিজের বিষয়টি সরকারের একটি টোপ বলে আমীর খসরু উল্লেখ্য করেন। তাকেও সরকার টোপ দিয়েছিল বলে মন্তব্য করেন। তবে তারেক জিয়া বলেন, আমি কার বক্তব্য বিশ্বাস করব সেটি বুঝতে পারছি না। কারণ সবাই তো সরকারের সঙ্গে প্রকাশে গোপনে নানারকম দেন-দরবার করছেন। কে কি পাচ্ছেন এবং কত পাচ্ছেন সে হিসেবেটা দিলে আমার সুবিধা হবে। বৈঠকের এক পর্যায় কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক সমাপ্ত হয়ে যায় বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button