জুবাইদা সুলতানা (৪৪)। বাবা ছিলেন সাবেক যুগ্ম সচিব। পোশাকে অভিজাত্যের ছোঁয়া। পাঁচ তারকা হোটেল ও রেস্তোরাঁয় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে চোখের পলকে ব্যাগ, স্বর্ণালঙ্কার, টাকা-পয়সা চুরি করাই ছিল তাঁর পেশা।
এভাবে গত ১২ বছরে ৮০০ মোবাইল ও ব্যাগ চুরি করেছেন। এমন কর্মকাণ্ডের জন্য পরিবার থেকে বের করে দেওয়া হয় তাকে। অবশেষে ঢাকা ক্লাবের এক অনুষ্ঠানে নারী চিকিৎসকের মোবাইল ও ব্যাগ চুরি করে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে ধরা পড়তে হয়েছে।
শনিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবি-সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম (দক্ষিণ) বিভাগের এডিসি মো. সাইফুর রহমান আজাদ।
ডিবি জানায়, শুক্রবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের কাছ থেকে মহিলাদের ১৬টি হ্যান্ডব্যাগ, চারটি মোবাইল, পাঁচটি বিভিন্ন ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড, অলংকার, বিভিন্ন সুপার শপের কার্ড, চারটি পেনড্রাইভ জব্দ করা হয়। গত ৩ মার্চ ঢাকা ক্লাবে গাইনোকোলজিক্যাল অনকোলজী বিষয়ক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে চিকিৎসক ডা. ফারহানা হকের মোবাইল ও গহনাসহ ব্যাগ চুরি হয়।
জোবাইদা জিনিসপত্র বিক্রি করে দিলেও তাঁর হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরটি নিজের মোবাইলে হস্তান্তর করে নেন। এরপর জুবাইদা নিজে ডা. ফারহানা সেজে রোগীদের পরামর্শ দিয়ে হাতিয়ে নিয়ে আসছিলেন মোটা অংকের টাকা। এ বিষয়ে গত ১২ মার্চ রমনা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। এ ঘটনায় তদন্তের ধারাবাহিকতায় জোবাইদাকে গ্রেপ্তার করে ডিবি।
ডিবি আরও জানায়, অভিজাত এসব হোটেল ক্লাবে নানা সময় দেশিয় ও আন্তর্জাতিক মানের বিভিন্ন সভা-সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
জুবাইদা বিভিন্ন পাঁচ-তারকা হোটেলে ও রেস্টুরেন্টে পেশাজীবী বিভিন্ন সংগঠনের সভা-সিম্পোজিয়াম, সেমিনারে পারিবারিক কোনো পরিচয়ে রেজিস্ট্রেশন করতেন না। একেক সময় ভিন্ন ভিন্ন ভুয়া নাম-ঠিকানা ব্যবহার করে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন করে অংশ নিতেন।
সভা-সেমিনারে আলোচনার ফাঁকে ফাঁকে চুরি করে সটকে পড়তেন। চোরাই জিনিস বিক্রি গত ১২ বছর ধরে বিলাসী জীবন যাপন করে আসছিলেন তিনি।
এডিসি মো. সাইফুর রহমান আজাদ বলেন, জুবাইদার বাবা একজন অবসরপ্রাপ্ত যুগ্ম সচিব। তাঁর এসব খারাপ অভ্যাসের জন্য তাকে পরিবার থেকে বিতাড়িত করে দেওয়া হয়েছে। জুবাইদা দুটি বিয়ে করেছেন, তিনি তাঁর বর্তমান স্বামীর চতুর্থ স্ত্রী। তাঁর স্বামী বর্তমানে সৌদি প্রবাসী। স্বামী সৌদিতে থাকলেও জুবাইদার চুরি করা জিনিসপত্র বিক্রি করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিতেন।