আওয়ামী লীগ ৪৮টি সংরক্ষিত আসনে তাদের মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে। আজ এই মনোনয়ন প্রাপ্তদের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে। দুপুরবেলা আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় এবং এই বৈঠকেই ৪৮ জন নারী সংসদ সদস্য হিসাবে যারা নির্বাচিত হবেন তাদেরকে চূড়ান্ত করা হয়েছে। আর চূড়ান্তকৃত এই নারী সংসদ সদস্যদের মধ্যে বেশ কয়েকজন রয়েছেন যারা বিগত নির্বাচনে পরাজিত হয়েছেন অথবা মনোনয়ন পাননি। আর তাদের এই মনোনয়ন প্রাপ্তি যারা নির্বাচিত হয়েছেন, তাদের জন্য বড় ধরনের ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হবে।
বরিশাল থেকে আওয়ামী লীগের মূল নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়েছিলেন শাম্মী আহমেদ। কিন্তু নাগরিকত্ব সংক্রান্ত জটিলতার কারণে শেষ পর্যন্ত তার মনোনয়ন বাতিল হয়ে যায়। সেখানে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী পঙ্কজ দেবনাথ নির্বাচিত হয়েছিলেন। স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর এবার শাম্মী আহমেদ আওয়ামী লীগ সংরক্ষিত কোটায় নির্বাচিত করল। এর ফলে পঙ্কজ দেবনাথের জন্য এটি একটি বিরাট ধাক্কা হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
একইভাবে ঢাকা-৪ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন দলের কেন্দ্রীয় নেতা সানজিদা খানম। কিন্তু নির্বাচনে সানজিদা খানম আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী ড. আওলাদ হোসেনের কাছে পরাজিত হন। এবার সানজিদা খানমকেও আওয়ামী লীগ মনোনয়ন দিয়েছে। ফলে ড. আওলাদের জন্য এটি একটি রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। একই ভাবে খুলনা থেকে মুন্নুজান সুফিয়ানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। মূল নির্বাচনে মুন্নুজান সুফিয়ানের বদলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল। এবার মুন্নুজান সুফিয়ান সংসদীয় সংরক্ষিত আসনে মনোনীত হয়েছেন। ফলে খুলনাতেও এসএম কামাল হোসেনের জন্য এই মনোনয়ন একটা বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হবে।
এছাড়াও বেশ কিছু আসন রয়েছে যে আসনগুলোতে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিজয়ের পর পরাজিত নারী প্রার্থীদেরকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। মেহের আফরোজ চুমকি গাজীপুর আখতারুজ্জামানের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। পরাজয়ের জন্য তাকে বেশিদিন সংসদ থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে না। তিনিও এবার সংরক্ষিত নারী আসনে নির্বাচিত হয়েছেন। তা ছাড়া কিছু কিছু আসন আছে যে আসনগুলোতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন নারীরা কিন্তু সে সমস্ত আসনে কৌশলগত কারণে আওয়ামী লীগ তাদের মনোনয়ন দেয়নি। কিন্তু এবার সংরক্ষিত আসনে তারা মনোনয়ন পেয়েছেন। ফলে আওয়ামী লীগের ভেতরে যে দ্বন্দ্ব সংঘাত তা আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই অনেকে মনে করেন। তবে এবারের মনোনয়নে রাজনীতিক ব্যক্তিত্বদেরকে প্রাধান্য দেয়ায় আওয়ামী লীগের নারী নেত্রীদের মধ্যে এক ধরনের আনন্দ উচ্ছ্বাস এবং স্বস্তি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যারা মনোনয়ন পেয়েছেন তাদের সবারই রাজনৈতিক পরিচয় রয়েছে এবং রাজনৈতিক ভাবে তাদের অতীত অত্যন্ত স্বচ্ছ পরিষ্কার। বিভিন্ন সময় তারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন।