সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরানের দল পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্ররা সবার চেয়ে এগিয়ে থাকায় তারা কেন্দ্র, পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সরকার গঠন করতে চাইছ
পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের তিনদিনের মাথায় চূড়ান্ত ফল প্রকাশ হয়েছে রোববার দুপুরে। এতে দেখা গেছে, কারান্তরীণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল-সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে ভোটের সর্বশেষ যে ফল দেওয়া আছে তাতে স্বতন্ত্ররা ২৬৪ আসনের মধ্যে ১০১টি আসনে জয় পেয়েছে। নওয়াজের দল পিএমএল-এন ৭৫টি আসনে জয়লাভ করেছে।
বিজয়ী স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে অন্তত ৯৩ জন পিটিআই সমর্থিত বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
নির্বাচনে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবার চেয়ে এগিয়ে থাকায় তারা কেন্দ্র, পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশে সরকার গঠন করতে চাইছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের ‘দ্য ডন’ পত্রিকা।
শনিবার আদিয়ালা জেলের বাইরে পিটিআই এর আইনজীবী উমাইর খান নিয়াজি বলেছেন, পিটিআই প্রতিষ্ঠাতা ইমরান খান তার দলের সমর্থিত প্রার্থীদের জয়ের পর কেন্দ্রে, পাঞ্জাবে এবং খাইবার পাখতুনখাওয়ায় সরকার গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তিনি অতীত ভুলে শান্তি প্রতিষ্ঠায় প্রস্তুত রয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইমরান খানের নিজ শহর মিয়ানওয়ালিতে নবনির্বাচিত এমএনএ নিয়াজি জানান, পিটিআই নেতা ইমরান তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নওয়াজ শরিফকে জোট সরকার গঠন করতে না দেওয়ার জন্য ক্ষমতাশালীদেরকে আহ্বান জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, অতীতে এমন পরীক্ষা-নিরীক্ষা কাজ দেয়নি।
নিয়াজি বলেন, ইমরান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার অবসান এবং দেশের ভবিষ্যতের জন্য এগিয়ে যেতে প্রস্তুত। ভোটে কারচুপির মাধ্যমে পিটিআই এর যেসব প্রার্থীকে হারানো হয়েছে, তাদেরকে রোববার নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ দেখাতে বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সরকার গঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে পিটিআই এর কোর কমিটি এরই মধ্যে বৈঠক করেছে। এরপরই নিয়াজিকে কেন্দ্রীয় পর্যায়ের দল-সমর্থিত জয়ী প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তাছাড়া, আরও দুই নেতাকে পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়ার পিটিআই-সমর্থিত জয়ী প্রার্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে পিটিআই চেয়ারম্যান গহর আলি খান সংবাদ সম্মেলন করেছেন। তারা আশা করেছিলেন, নির্বাচনের ফলে একক বৃহত্তর দল হিসেবে আত্মপ্রকাশের পর প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি পিটিআই-কে সরকার গঠনের জন্য আমন্ত্রণ জানাবেন।
গহর আলি খান বলেন, পিটিআই পরিষ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ায় তাদের সরকার গঠনের পথে কোনও বাধা সৃষ্টি করা উচিত হবে না।
তবে ইমরানের দলের স্বতন্ত্ররা সরকার গঠনের পথে একটি যে অসুবিধার সম্মুখীন তা হচ্ছে, নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সংরক্ষিত আসন বরাদ্দ পাওয়ার যোগ্য নয়। পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ৭০টি আসন সংরক্ষিত। চূড়ান্ত ফলের পর দলের শক্তিমত্তা অনুযায়ী এই আসনগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী, নওয়াজের দল ২০টি আসন পেতে পারে।
তবে পিটিআই বলছে, তারা এই সংরক্ষিত আসনের ভাগ পেতে শিগগিরই একটি রাজনৈতিক জোট গঠন করবে এবং এ ব্যাপাারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে জলদিই।
গহর বলেছেন, “আমাদের সঙ্গে কারও কোনও বিবাদ নেই। আমরা সামনে এগুতে চাই। আমরা সংবিধান এবং আইনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এগিয়ে যাব এবং সরকার গড়ব।”