জাতীয়বাংলাদেশ

সম্প্রসারিত মন্ত্রিসভায় নতুন যারা আসছে

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন যে, সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবার পর মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করা হবে। গত ১১ জানুয়ারি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে টানা চতুর্থবারের মতো সরকার গঠন করে দলটি। আর শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্য সংখ্যা মাত্র ৩৭জন। এই সদস্য সংখ্যা অনেক কম। বিশেষ করে যে সমস্ত মন্ত্রণালয় এবং বিভাগ রয়েছে সে তুলনায় এই মন্ত্রিসভা পূর্ণাঙ্গ নয় বলেই সরকারের পক্ষ থেকে স্বীকার করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রীর পদ খালি রয়েছে। একাধিক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হতে পারে, এমন গুঞ্জনও শোনা যাচ্ছে। আর এই সমস্ত বিষয় নিয়ে ইতোমধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে অবস্থান সুস্পষ্ট করা হয়েছে।

কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ কবে হবে?

ধারণা করা হচ্ছে, আগামী রোববার বা সোমবার অর্থাৎ ৪ অথবা ৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। এরপর সংরক্ষিত আসনের জন্য মনোনয়ন প্রক্রিয়া শুরু করবে আওয়ামী লীগ এবং এই মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ করতে সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে বলেই আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।

আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন দিনের সফরে জার্মানি যাচ্ছেন। এরপর একুশে ফেব্রুয়ারি। প্রশ্ন উঠেছে যে, প্রধানমন্ত্রী কি জার্মান সফরে যাওয়ার আগে মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করবেন? নাকি, ২১ ফেব্রুয়ারির পর তিনি মন্ত্রিসভা সম্প্রসারণ করবেন?

এর উত্তরে আওয়ামী লীগের একজন দায়িত্বশীল নেতা বলেছেন যে, এটি নির্ভর করছে নির্বাচন কমিশন কত তাড়াতাড়ি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে। প্রথমে পরিকল্পনা ছিল যে, প্রধানমন্ত্রী বিদেশ যাওয়ার আগেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণ করে জার্মানিতে যাবেন। কিন্তু, যেহেতু নির্বাচন কমিশন তার তফসিল ঘোষণায় বিলম্ব করছে, সেজন্য পুরো প্রক্রিয়াই পিছিয়ে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগের ওই নেতা মনে করেন যে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। কাজেই এখানে সরকারের হস্তক্ষেপ বা চাপ প্রয়োগের কিছু নেই।

ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল নির্বাচন কমিশনে সাক্ষাৎ করেছেন। নির্বাচন কমিশন সচিবের সাথে সাক্ষাত করে তারা জোটগতভাবে আওয়ামী লীগ এবং স্বতন্ত্র একসঙ্গে সংরক্ষিত আসনের জন্য মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

এই বাস্তবতায় আওয়ামী লীগ ৪৮টি আসনে মনোনয়ন পাবে। এই মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ হলেই মন্ত্রিসভার সম্প্রসারণের কাজ শুরু হবে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের মন্ত্রিসভায় কারা সদস্য হতে পারেন তা নিয়ে নানা রকম আলাপ-আলোচনা এবং গুঞ্জন চলছে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, যেহেতু দুটি মন্ত্রণালয় পূর্ণাঙ্গ খালি রয়েছে, কাজেই দুটি মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীদের বিষয়টি মোটামুটি নিশ্চিত। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব রেজোয়ানা চৌধুরী বন্যা পেতে পারেন এমন গুঞ্জন রয়েছে। এ কারণে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় খালি রাখা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

শ্রম এবং কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব কাকে দেওয়া হবে এ নিয়ে নানা রকম আলোচনা চলছে। তবে আওয়ামী লীগের একটি সূত্র বলছে, শ্রম ও জনশক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের জনপ্রিয় নেতা মির্জা আজমকে দেওয়া হতে পারে। এছাড়া আরও দুই একজন নেতার নামও এক্ষেত্রে আলোচনায় রয়েছে।

অন্যদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়েও একজন মন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা হচ্ছে। দলের কোন সিনিয়র গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে এই মন্ত্রণালয়ের দ্বায়িত্ব দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সেখানে একজন প্রতিমন্ত্রী আছেন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী দেওয়া হতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে। সেখানে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদিকা ডা. রোকেয়া সুলতানাকে দেওয়ার গুঞ্জন রয়েছে। রোকেয়া সুলতানা এবার নারী সংসদ সদস্য হিসেবে সংসদে আসতে পারেন। এছাড়াও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তবে, সবকিছু নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের ওপর। কারণ, সংবিধান অনুযায়ী মন্ত্রিসভা গঠন, সম্প্রসারণ বা কাউকে মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দানের একক এখতিয়ার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button