জাতীয়বাংলাদেশ

ভোট শেষ হয়েছে, তবু শঙ্কা কাটেনি নাশকতার

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে প্রায় এক মাস। তবে নির্বাচন কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া আতঙ্ক ও সহিংসতার শঙ্কা কাটেনি। গণপরিবহনসহ রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের পরিমাণ কমে এলেও বিদ্যুৎকেন্দ্র, টিভি সেন্টার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রয়েছে জঙ্গি হামলার শঙ্কাও। এমন প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার ও বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা বাড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তর থেকে এ ব্যাপারে দেশের সব মহানগর পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজিসহ পুলিশের সব ইউনিটে চিঠি দিয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তর থেকে ১৭ জানুয়ারি সব ইউনিটে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে সড়ক পথে যাতায়াতের পাশাপাশি জনসাধারণের রেলপথে যাতায়াতের প্রবণতা বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলার অবনতি ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্দেশ্যে দুষ্কৃতকারী কর্তৃক রেলস্টেশন ও ট্রেনে অগ্নিকাণ্ড বা অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা তথা কেপিআইসহ বিদ্যুৎকেন্দ্র, টিভি সেন্টার ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে। এসব স্থাপনায় জঙ্গি হামলার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সে ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আরও তৎপর হওয়া প্রয়োজন।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, নির্বাচনের আগে গত নভেম্বর মাস থেকেই সারাদেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা ও ঢেলে সাজানো হয়। তারপরও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকেই বাস ও ট্রেনে ধারাবাহিকভাবে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের দুদিন আগেও ঢাকায় ট্রেনে আগুন দেওয়ার ঘটনায় চার যাত্রী পুড়ে মারা যান।

রেলওয়ে পুলিশের ডিআইজি মো. মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া ২৫ জানুয়ারি চট্টগ্রাম রেলওয়ে জেলা পরিদর্শন করেন। তিনি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে রেলপথে নাশকতা ঠেকাতে একনিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। গতকাল তিনি আমাদের সময়কে বলেন, আমরা সব স্টেকহোল্ডার নিয়ে বসেছি। দফায় দফায় মিটিং করেছি। নভেম্বর থেকেই এটা শুরু হয়েছিল। তারপর দফায় দফায় মডিফাই করেছি। রেলের নিরাপত্তায় সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সেই নিরাপত্তা ব্যবস্থাই অব্যাহত আছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও সহিংতার ঘটনা ঘটেছে। হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে। তবে নির্বাচনের এক সপ্তাহের মাথায় এ ধরনের সহিংসতা কমে আসে। দলীয় কোন্দল ছাড়া নির্বাচনের পর দেশে বড় ধরনের সহিংসতা ও নাশকতার ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন বর্জন করা দলগুলোরও সহিংস কর্মসূচি নেই। ফলে মাঠপর্যায়ে কর্মরত পুলিশের মধ্যে ঢিলেমি আসতে পারে। এই সুযোগে যে কোনো ধরনের হামলা ও নাশকতা ঘটতে পারে। তাই পুলিশের তৎপরতা বাড়ানোর জন্য এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button