পাকিস্তানভিত্তিক সুন্নি সশস্ত্র গোষ্ঠী জাইশ আল-আদলকে লক্ষ্য করে মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) হামলা চালিয়েছে ইরান। এ ঘটনায় দুই শিশুসহ অন্তত চারজন নিহত হয়। এর প্রতিক্রিয়ায় পরদিন ইরান থেকে নিজেদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয় ইসলামাবাদ। একইসঙ্গে ইসলামাবাদে নিযুক্ত তেহরানের রাষ্ট্রদূতকেও বহিষ্কার করে দেশটি।
অপরদিকে হামলার ৪৮ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ইরানে আক্রমণ করে পাকিস্তান। তাতে চার শিশুসহ ৯ জন নিহত হয় বলে জানান ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমদ ওয়াহিদী। ফলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংঘাত সীমানা ছাপিয়ে অন্য এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়তে পারে।
পাকিস্তানের সরকার নিশ্চিত করে বলেছে, সাম্প্রতিক এই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা ‘সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য’। অপরদিকে ইরান দাবি করেছে, সুন্নি সশস্ত্র গোষ্ঠী জাইশ আল-আদল পাকিস্তান-ইরান সীমান্তে সক্রিয়। যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরায়েল তাদের মদত দিয়ে যাচ্ছে। অতীতে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর বেশ কয়েকটি হামলার দায় স্বীকার করে এই গোষ্ঠীটি।
জাইশ আল-আদল বা ‘ন্যায়বিচারের যোদ্ধা’রা ইরান সরকারের বিরোধিতা করে। এই গোষ্ঠীটি নিজেদের ইরানের সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে ‘সুন্নি অধিকার রক্ষক’ হিসেবে দাবি করে। ২০০৯ সালে ইরান আব্দলমালেক রিগি নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে। তিনি এই গোষ্ঠীটির প্রধান। এর আগে এই গোষ্ঠীটি জানদাল্লাহ বা আল্লাহর যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত ছিল।
আব্দলমালেক রিগির বিরুদ্ধে ইরানের নিরাপত্তা বাহিনীর উপর বোমা হামলা চালানো এবং যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্ট হিসেবে কাজ করার অভিযোগ আনা হয়। ২০১০ সালে তাকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়। সে সময় ইরানে নিয়োজিত থাকা পাকিস্তানের সাবেক কূটনীতিক মোহাম্মদ আব্বাসি বলেছিলেন, রিগির গ্রেপ্তারে পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।
মার্কিন গোয়েন্দারা বলছে, ইরানে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ এবং হামলার পেছনে জাইশ আল-আদলের হাত রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ২০০৫ সালে দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদের উপর হামলা। অবশ্য গোষ্ঠীটি যেসব হামলার দায় স্বীকার করেছে তার বেশির ভাগই ঘটেছে সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে।