কক্সবাজারে দামি হোটেলে ঘটা করে আয়োজন করা রোহিঙ্গা তরুণ-তরুণীর বিয়ের আয়োজন পুলিশের অভিযানে পণ্ড হয়ে গেছে। আটক করা হয়েছে ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে। জব্দ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার ১৯টি পাসপোর্ট।
পর্যটন নগরীর সী পার্ল-১ ও সী পার্ল-২ হোটেলে রোববার ওই আয়োজনে হাজির হয়েছিলেন প্রায় হাজারও রোহিঙ্গা। তাদের জন্য ছিল বিশাল মেজবানের বন্দোবস্তও।
বিষয়টি জানতে পেরে বিকেলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার একটি টিম হোটেল-মোটেল জোনের সী পার্ল-১ ও সী পার্ল-২ হোটেলে অভিযান চালায়। পুলিশ আসার খবরে অনেক রোহিঙ্গা পালিয়ে যায়। এ সময় আটক করা হয় নারী ও শিশুসহ ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে। জব্দ করা হয় ১২টি অস্ট্রেলিয়ান ও ৭টি আমেরিকান পাসপোর্ট। তবে এক অস্ট্রেলিয়ান নাগরিককে ছেড়ে দেয়া হয়।
ক্যাম্প-১৯ থেকে আসা ফিরোজ আহমদ নামের এক রোহিঙ্গা জানান, চার নারীসহ মোট ১২ জন রোহিঙ্গাকে নিয়ে তিনি এখানে মেজবান খেতে এসেছিলেন। চেকপোস্টে কৌশলে নিরাপত্তাকর্মীদের ফাঁকি দেন তারা।
একই ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নারী হাসিনা জানান, পরিবারের ৮জন সদস্যকে নিয়ে তিনি কক্সবাজার শহরে দাওয়াত খেতে এসেছেন। শহরে আসতে তেমন কোনো বাধার মুখে পড়তে হয়নি।
মহেশখালী কুতুবজোমের ছৈয়দুল আমিন ও ইমাম হোসেন এই বিয়ের আয়োজনে এসেছিলেন নামের ১৩ জন বাংলাদেশিকে নিয়ে। তারা জানান, তাদের ভাই অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী। সেখানে তার সঙ্গে এক রোহিঙ্গা প্রবাসীর বন্ধুত্ব রয়েছে। সে সুবাধে তারা বিয়েতে আসেন।
স্থানীয়রা জানান, সকাল থেকে হোটেলে একটি বিয়ের রান্না চলছিল। দুপুর গড়াতেই শত শত মানুষ সেখানে হাজির হন। এ নিয়ে দিনজুড়ে জনমনে কানাঘুষা চলছিল যে বিয়ের দাওয়াত উপলক্ষে জড়ো হওয়া সবাই রোহিঙ্গা। অবশেষে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেই রহস্য উন্মোচন করেন।
কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সমন্বয়ক এইচ.এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘কক্সবাজার জুড়ে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া নিয়ে স্থানীয়রা শঙ্কিত। নানা কৌশলে রোহিঙ্গারা ছড়িয়ে পড়ছে।
‘ক্যাম্পে বিজিবি ও এপিবিএনের একাধিক চেকপোস্ট রয়েছে। এসব চেকপোস্ট ভেদ করে কিভাবে এতগুলো রোহিঙ্গা কক্সবাজার শহরে চলে এলো তা ভেবে দেখার বিষয়। এটি কক্সবাজারের জন্য অশনি সংকেত। রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়া রোধে জরুরিভিত্তিতে সেনাবাহিনীর সমন্বয়ে যৌথ টাস্কফোর্স গঠন করা হোক।’
কক্সবাজার সদর মডেল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. শাকিল হাসান বলেন, ‘রোহিঙ্গা তরুণ-তরুণীর বিয়ের খবর পেয়ে সী পার্ল হোটেলে অভিযান চালানো হয়। সেখান থেকে প্রায় ৬৩ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। এ বিষয়ে পরবর্তীতে পদস্থ কর্মকর্তারা বিস্তারিত জানাবেন।’