মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশে ছড়িয়ে পড়লো গাজার যুদ্ধ
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় হামাসকে নির্মূলের নামে তিন মাস আগে যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েল। এরপর থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল যে এই যুদ্ধ গাজা পেরিয়ে মধ্যপ্রাচ্যর অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়তে পারে। অবশেষে এই আশঙ্কাই সত্য হলো। ইয়েমেনে সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতিদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের হামলায় যুদ্ধ অন্য অঞ্চলে ছড়াল। শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) বিবিবির এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
লোহিত সাগরে বিদেশি জাহাজে হুতিদের হামলার সক্ষমতা খর্ব করতে শুক্রবার ভোরে ইয়েমেনে ইরান-সমর্থিত গোষ্ঠীটির বিভিন্ন সামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা শুরু করার কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা স্থানীয় সময় ভোরে ইয়েমেনের রাজধানী সানা বিমানবন্দর, তৃতীয় বৃহত্তম শহর তাইজ, লোহিত সাগরের প্রধান বন্দর হোদেইদাহের একটি নৌঘাঁটি ও উপকূলীয় হাজ্জাহ গভর্নরেটের সামরিক স্থাপনায় বিস্ফোরণের কথা নিশ্চিত করেছেন। এসব হামলায় পাঁচ হুতি যোদ্ধা নিহত হয়েছেন।
মূলত গত অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হলে হামাসের প্রতি সমর্থন জানায় হুতি বিদ্রোহীরা। তাদের সমর্থনের অংশ হিসেবে নভেম্বর থেকে লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী ও ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন জাহাজে হামলা করে আসছে তারা। তাদের হামলার ভয়ে বিভিন্ন জাহাজ কোম্পানি হয় লোহিত সাগর এড়িয়ে ভিন্ন পথে গন্তব্যে যাচ্ছে নতুবা চুক্তিই বাতিল করে দিচ্ছে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল নিশ্চিতে ইয়েমেনে হামলা চালানোর দাবি করা হলেও বিষয়টা শুধু তাই নয়। গাজায় সংগঠিত ঘটনার সঙ্গে এর সরাসরি সংযোগ রয়েছে। এটি গাজা সংকটেরই প্রতিনিধিত্ব করে।
যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের হামলা সত্ত্বেও লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী জাহাজে হামলা অব্যাহত রাখার কথা জানিয়েছেন হুতিরা। এমনকি মার্কিন ও ব্রিটিশ হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে গোষ্ঠীটি। ইয়েমেনে হামলার প্রতিবাদে দেশটির রাজধানী সানায় কয়েক লাখ মানুষ বিক্ষোভ করেছেন। এ ছাড়া সিরিয়া ও ইরাকে মার্কিন সেনাদের নিশানা করে যে হামলা হয়ে আসছিল তার পরিমাণ আরও বাড়াতে পারে ইরানপন্থি মিলিশিয়ারা।
যদি ইয়েমেন হামলা-পাল্টা হামলা চলতে থাকে; পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে যায় তাহলে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যকার সর্বাত্মক যুদ্ধ এড়ানো যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ইসরায়েলি সেনাদের সঙ্গে সীমান্তে প্রতিদিন গুলি বিনিময় করছে ইরান সমর্থিত এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটি।