আড়াই হাজার বছরের পুরোনো শহরের সন্ধান আমাজনের গহীন বনে

রহস্যে ঘেরা আমাজন বন। লাতিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা এই বন নিয়ে মানুষের আগ্রহ ও কৌতূহলের শেষ নেই। সেই কৌতূহল মেটাতে বছরের পর বছর ধরে পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত এই বন নিয়ে চলছে বিস্তর গবেষণা। এবার আমাজনের গহীন অরণ্যে গবেষকরা আড়াই হাজার বছরের পুরোনো এক বিশাল শহরের সন্ধান পেয়েছেন। তাদের দাবি, এই শহর আমাজন নিয়ে মানুষের এতদিনের ধারণাই বদলে দেবে।

বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, আমাজনের ইকুয়েডরের উপানো এলাকায় এই শহর আবিষ্কার করেছেন গবেষকরা। শহরটি এত প্রাচীন হলেও এর বাড়িঘর বিভিন্ন সড়ক ও খালের মাধ্যমে একে অন্যের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।

এতদিন মানুষের ধারণা ছিল, পেরুর মাচু পিচুর মতো লাতিন আমেরিকার উঁচু অঞ্চলে মানুষজন যাযাবর বা ছোট ছোট বসতি করে বসবাস করতেন।

ফ্রান্সের ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক স্টিফেন রোস্টেন। তিনি প্রাচীন এই শহর আবিষ্কার দলের প্রধান। তিনি বলেন, আমাজনে আবিষ্কৃত অন্য যে কোনো এলাকার চেয়ে এটি পুরোনো। সভ্যতা নিয়ে আমাদের মাঝে ইউরোপকেন্দ্রিক একটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। তবে পুরোনো এই শহর আবিষ্কারের ফলে সংস্কৃতি ও সভ্যতা নিয়ে আমাদের ধারণা পাল্টাতে হবে।

সহ-লেখক অ্যান্টোইন ডরিসন বলেন, আমরা এতদিন আমাজনীয় সংস্কৃতিকে যেভাবে দেখে এসেছি এটি তা পরিবর্তন করে দিয়েছে। এতদিন আমাদের ধারণা ছিল সেখানকার বেশিরভাগ মানুষ ছোট ছোট দলে বসবাস করেছেন। সম্ভবত নগ্ন হয়েই। তারা কুঁড়েঘরে বসবাস করতেন এবং জমি চাষাবাদ করতেন। তবে পুরোনো এই শহর আবিষ্কার আমাদের দেখিয়েছে প্রাচীন লোকেরা জটিল শহুরে সমাজেও বাস করতেন।

প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, এই শহরটি প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে গড়ে উঠেছিল। এরপর এক হাজার বছর পর্যন্ত সেখানে মানুষ বসবাস করেছেন। তবে একসঙ্গে এই শহরে ঠিক কতজন মানুষ বসবাস করেছেন, তা বলা মুশকিল। গবেষকরা বলছেন, সেখানে এক লাখ মানুষ না হলেও হাজারের ঘরে মানুষ থাকতেন।

শহরটি কীভাবে বিলীন হয়ে গেছে সে সম্পর্কে একটি ধারণা দিয়েছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, এই শহরটি একটি আগ্নেয়গিরির পাদদেশে অবস্থিত ছিল। ফলে এর আশপাশে ভূমি বেশ উর্বর ছিল। কিন্তু এই কারণেই শহরটি ধ্বংস হয়ে থাকতে পারে।

Exit mobile version