দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির ভরাডুবিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিক্ষোভ করেছেন দলের শীর্ষ ও তৃণমূল নেতারা। নির্বাচনে দলের শোচনীয় অবস্থার জন্য পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে দায়ী করে তাদের পদত্যাগের দাবি করেছেন নেতাকর্মীরা।
বুধবার (১০ জানুয়ারি) বনানীতে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ ও লিখিত বক্তব্য পাঠ করা হয়। এ সময় আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের পদত্যাগে বাধ্য করার কথাও বলা হয়।
জাতীয় নির্বাচন থেকে সরে আসতে বাধ্য হওয়া প্রার্থীদের পক্ষে জাতীয় পার্টি অতিরিক্ত মহাসচিব সাহিদুর রহমান টেপা লিখিত বক্তব্যে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে জাতীয় পার্টির চরম ভরাডুবি হয়েছে। পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের গত চার বছরে তার সাংগঠনিক দুর্বলতা ও রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার কারণে জাতীয় পার্টিকে ধ্বংসের শেষ প্রান্তে নিয়ে গেছেন। তারই প্রতিফলন ঘটেছে এই নির্বাচনে। পার্টির প্রার্থীদের সঙ্গে চরম বিশ্বাসঘাতকতা, প্রতারণা করা এবং তাদের একপ্রকার পথে বসিয়ে দেওয়ার জন্য পার্টির দুই শতাধিক প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন।
তিনি আরও বলেন, সরকারের কাছে ধরনা দিয়ে ২৬টি আসনে সমঝোতা করে সেখানেও ভরাডুবি হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম, জাতীয় পার্টিকে এতটা বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেওয়া এবং নির্বাচনে ভরাডুবির দায়িত্ব নিয়ে পার্টির চেয়ারম্যান এবং মহাসচিব পদত্যাগ করে তাদের সম্মান রক্ষা করবেন। কিন্তু সে বোধোদয়ও তাদের হয়নি। আমরা পার্টির সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের মনোভাব জানতে পেরেছি। তারা পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে অপসারণ দেখতে চান।
এ অবস্থায় জাতীয় পার্টিকে রক্ষা করা এবং পার্টির ঐক্য বজায় রাখার জন্য আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জি এম কাদের ও মুজিবুল হক চুন্নুকে তাদের পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে নেতাকর্মীদের উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে বনানী অফিসের সামনে পুলিশ অবস্থান নিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নেতাকর্মীদের ভেতরে ঢুকতে দিচ্ছে না। নেতাকর্মীরা বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করছেন।
পরিস্থিতি টের পেয়ে দলটির চেয়ারম্যান ও মহাসচিব এখনও বনানী অফিসে আসেননি। শপথ নিতে আজ সকালে বনানী অফিসে নতুন এমপিদের নিয়ে বৈঠক করার কথা থাকলেও, শপথ নিতে সংসদে চলে যান তারা। বিরোধী দলের উপনেতার কক্ষে বৈঠক শেষ করে শপথ গ্রহণ করেন তারা।