নির্বাচনবাংলাদেশ

বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে পরাশক্তিগুলোর মনোভাব কি?

রাত পোহালেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। চলমান ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে পরাশক্তিগুলোর কাছে বেশ গুরুত্ব রাখে বাংলাদেশ। তাই এবারের নির্বাচনে কড়া নজর রেখেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এরই মধ্যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নানা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। এমনকি ঢাকা নিয়ে নিজেদের স্পষ্ট অবস্থান জানান দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ চীন, রাশিয়া ও ভারত।

গত বছর নির্বাচনী আমেজ শুরু হওয়ার পরপরই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ ভোটগ্রহণ আয়োজনকে কেন্দ্র করে ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি জানায়, এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় ক্ষমতাসীন, বিরোধী দলের রাজনীতিবিদ, সরকারি কর্মকর্তাসহ থাকবেন বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরাও। এ সময় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঢাকার ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখছে বলেও জানায় ওয়াশিংটন।

নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে আয়োজনের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ইউরোপীয় দেশগুলোর এ জোট জানিয়েছিল, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো প্রকার সহিংসতা দেখতে চায় না তারা। এ সময় মানবাধিকার, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন ও নির্বাচন কারচুপির কারণে ঢাকার ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাবও তোলেন বেশ কয়েকজন ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য, যদিও শেষ পর্যন্ত ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। তবে এবারের নির্বাচনে কোনো পর্যবেক্ষক না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জোটটি।

এদিকে, পশ্চিমা দেশগুলোর কূটনৈতিক তৎপরতায় অত্যন্ত ক্ষিপ্ত বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকালীন মিত্র ও উন্নয়ন সহযোগী রাশিয়া। দেশটি মনে করছে স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে পশ্চিমাদের নাক গলানোর একটি চিরায়ত অভ্যাস হিসেবেই নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

বাংলাদেশের বৃহত্তম উন্নয়ন সহযোগী রাষ্ট্র ও পরাশক্তি চীন জানায়, জাতীয় সংবিধান ও আইন অনুযায়ীই বাংলাদেশে নির্বাচন আয়োজন দেখতে চায় বেইজিং। চীন কখনো কোনো দেশের রাজনীতি ও নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করে না। দেশটি জানায়, সংসদ নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। এ বিষয়ে বাংলাদেশিরাই সিদ্ধান্ত নেবে। তবে সব রাজনৈতিক দলের মধ্যে স্থিতিশীলতা বজায় থাকবে বলেও আশা করে চীন।

বাংলাদেশের নির্বাচনে একটি বড় ভূমিকা পালন করে ভারত। প্রতিবেশী দেশ হওয়ার কারণে ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক ভোটের ক্ষেত্রে বেশ প্রভাব ফেলে। অভিযোগ আছে নির্বাচনে ভারতের একটি পরোক্ষ প্রভাব সবসময়ই থাকে। তবে এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে ভারত। দেশটি জানায়, বাংলাদেশে নির্বাচন বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশের জনগণই তাদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। নয়াদিল্লি এমন অবস্থানে সবসময় বিশ্বাস করে থাকে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button