তাহলে ভোটের পর কী ঘটতে যাচ্ছে?

চলছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা। রাত পোহালেই অনুষ্ঠিত হবে ভোট। এরই মধ্যে শেষ হয়েছে প্রার্থীদের প্রচার, বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে গেছে স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স ও ব্যালট পেপার। ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। এমন পরিস্থিতিতে ভোটারদের কেন্দ্রবিমুখ করতে মরিয়া বিএনপিসহ সরকারবিরোধী দলগুলো। ভোটারদের ভোট দেওয়া থেকে নিরুৎসাহিত করতে সর্বোচ্চ প্রয়াস চালাচ্ছে বিএনপি ও তাদের মিত্ররা।

দলের নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, ব্যালটে ৫ শতাংশের কম ভোট পড়লেই মিলবে চলমান যুগপৎ আন্দোলনের কাঙ্ক্ষিত সফলতা। এখন প্রশ্ন উঠছে এতকিছু সত্ত্বেও যদি ব্যর্থ হয় তাদের পরিকল্পনা, তবে ৭ জানুয়ারির পর কী করবে বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএনপির সামনে নির্বাচনের পর তিনটি বিকল্প রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে প্রথমত, নির্বাচনের সরকারের সাথে সংলাপের মাধ্যমে একটি রাজনৈতিক সমঝোতার চেষ্টা করা। একইসঙ্গে বিএনপির আটক নেতাকর্মীদের কারাগার থেকে মুক্তির ব্যবস্থা করা। দ্বিতীয়ত, আন্দোলনের ধারা অব্যাহত রাখা। কিন্তু এর মধ্য দিয়ে বিএনপি কতটুকু সফল হবে এ নিয়ে অনেকের মধ্যেই প্রশ্ন রয়েছে। তৃতীয়ত, আন্তর্জাতিক মহলে লবিং, তদবির এবং নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রচার করা।

যদিও বিদেশনির্ভরতার বিষয়টি নাকচ করেছেন দলটির সহ-আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তিনি কালবেলাকে বলেন, বিএনপি জনগণের দাবি নিয়ে জনগণের ওপর ভরসা রেখে আন্দোলন করছে। সুতরাং বিএনপিকেই এ দাবি আদায় করতে হবে।

বিএনপির হাইকমান্ড মনে করেন, দেড় বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব বাংলাদেশে একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। এমন অবস্থায় এবারের নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হলে পশ্চিমাসহ আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে আর গ্রহণযোগ্য হবে না। নির্বাচনের পর যুক্তরাষ্ট্র কঠোরভাবে ভিসানীতির প্রয়োগ এবং ধাপে ধাপে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা দিতে পারে বলে মনে করেন দলের নীতিনির্ধারকরা।

এদিকে, লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল অলি আহমদ বলেছেন, নির্বাচনের পর রাজনীতির আসল খেলা হবে। বিশ্বের ক্ষমতাধররা পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের কাজ করবে। নির্বাচনের পর এই সরকার বেশিদিন ক্ষমতায় টিকতে পারবে না বলেও মনে করেন তিনি।

গণঅধিকার পরিষদের সদ্য পদত্যাগী আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া মনে করেন, ৭ জানুয়ারির পর বাংলাদেশের ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে। অনেক কিছু হতে পারে, পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। দেশের গার্মেন্টস খাতে একটা প্রভাব পড়তে পারে বলেও মনে করেন তিনি।

একই শঙ্কার কথা জানিয়েছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাও। তিনি বলেন, বর্তমানে দেশের অর্থনীতির অবস্থা খুবই খারাপ। বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পর্কে গত দুদিন আগে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, এতে বোঝা যাচ্ছে- এই নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে না যুক্তরাষ্ট্র। যদি স্বীকৃতি না দেয়, তাহলে সরকারের সঙ্গে যে ব্যবসাগত সম্পর্ক আছে, সেগুলোর সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করবে বলেও মনে করেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি।

Exit mobile version