প্রতিটি নাশকতায় বিএনপির লোকজন জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত, দাবি আ.লীগের
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২০টি ভোটকেন্দ্র পোড়ানো, ট্রেনে আগুন দেওয়াসহ প্রতিটি নাশকতার ঘটনায় বিএনপির লোকজনের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত বলে দাবি করেছে আওয়ামী লীগ। শনিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে দলটির এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন মিডিয়া সেলের সদস্য সচিব মোহাম্মদ এ আরাফাত।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি হামলার ক্ষেত্রে যখনই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, যখনই কেউ ধরা পড়ছে পরিষ্কারভাবে দেখা যাচ্ছে হয়— সে স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, যুবদল কিংবা বিএনপির কোনও না কোনও পর্যায়ের নেতা বা কর্মী। এবং অনেকেই ধরা পড়ার পরে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীও দিচ্ছে।’
শুক্র ও শনিবার বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীরা সারা দেশে ২০টিরও বেশি ভোটকেন্দ্র পুড়িয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘রাজবাড়ীর একটি স্কুলে পাহারায় থাকা গ্রাম পুলিশের এক সদস্যকেও তারা হত্যা করেছে। রামুতে রাখাইন মন্দিরে আগুন দিয়েছে বিএনপি-জামায়াতের লোকজন। ডেমরা ও কুমিল্লা দুইটি বাসে আগুন দিয়েছে তারা। ভোলাতে বেসরকারি হাসপাতালে ভাঙচুর ও হামলা করেছে। এই চিত্র শুধু গত দুই দিনের। নির্বাচনের বিরোধিতা ও সন্ত্রাসের ইতিহাস বিএনপির ডিএনএ-তেই আছে।’
এ আরাফাত বলেন, ‘একদল রাজনীতিবিদ যারা ভোট বর্জনের রাজনীতি করছে, সুশীল সমাজের একাংশ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের গুজববাজ অপপ্রচারকারীরা মানুষের মধ্যে কনফিউশন তৈরি করার জন্য, ভিন্ন খাতে দেখানোর জন্য অপপ্রচার গুলা করার চেষ্টা করছে তারা।’
নির্বাচন এলেই বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন বিমুখ চিত্র প্রকাশ হয়ে যায় তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রের ধারার বাইরে গিয়ে তারা আবারও ২০১৪-১৫ এর মতো পথ বেছে নিয়েছে। শুক্রবার যশোর থেকে আশা বেনাপোল এক্সপ্রেস এ নাশকতার যে আগুন জ্বলেছে মা ও শিশু সন্তানসহ চার চারটি তাজা প্রাণ ঝড়ে গেছে। আরও কয়েকজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন যাদের শ্বাসনালি পুড়ে গেছে। আমরা নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোক জ্ঞাপন করছি আহতদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
এ আরাফাত বলেন, ‘পরিতাপের বিষয় হলো, নাশকতা তারা যে করছে এবং মানুষকে হত্যা করছে কিন্তু তাদের সঙ্গে তাদেরই পার্টনার ইন ক্রাইম এক দল মানুষ তারা এক্স (টুইটার), ফেসবুক, টেলিভিশন টকশো এবং অনলাইন বিভিন্ন মাধ্যমে অসত্যভাবে অপপ্রচার করে সবগুলো দোষ সরকারের ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করে। মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি করার চেষ্টা করে।’
পুলিশের পক্ষ থেকে কিছুদিন আগে হাসপাতালগুলো বিশেষভাবে সুরক্ষিত রাখার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরে লেখা হয়েছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখনই কোনও কর্মসূচিতে হয়, এর আগের দিন রাত থেকেই শুরু হয়ে যায় নাশকতার এসব ঘটনা। পুলিশ সেকেন্ড লাইন অব ডিফেন্স হিসেবে মাথায় রাখে, যেখানে কোনোভাবেই… চোরাগুপ্তা হামলা যেহেতু করে সেখানে আহতদের তাড়াতাড়ি যেন স্বাস্থ্য সেবাটা দেওয়া যায়। সেই চিঠিকে তারা সামনে এনে যোগাযোগমাধ্যমে তারা ভাইরাল করেছে, পুলিশ আগে থেকে কীভাবে জানলো? আমরা তো বলি এটা সারা বাংলাদেশের মানুষ জানে। আজ হরতাল দিয়েছে বিএনপি রাত থেকেই শুরু অগ্নিসন্ত্রাস শুরু হয়ে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি ভোট বর্জনের রাজনীতি করছে। তারা বলছে— মানুষ যেন ভোট দিতে না যায়। এখন তারা ভোট বর্জন করছে, তাদের যদি মানুষের ওপর সেই আস্থা থাকে; তাহলে তাদের তো লিফটের বিতরণ করার প্রয়োজন নাই। ভোটের দিনে তাদের তো হরতাল দেওয়ার প্রয়োজন নাই। মানুষ তো এমনিই ভোট বর্জন করবে তাদের কথা অনুযায়ী। তার মানে তারা নিজেরাও বিশ্বাস করে না যে, মানুষ ভোট বর্জন করবে। যেহেতু তারা এটা বিশ্বাস করে না সেজন্য তারা প্রথমে লিফলেট বিতরণ করেছে। এরপরে তারা হরতালে ডাক দিয়েছে। নতুন করে নাশকতা করার মাধ্যমে, মানুষকে পুড়িয়ে ফেলার মাধ্যমে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। হুমকি দিচ্ছে যেন মানুষ ভোট দিতে না আসে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, স্বাস্থ্য সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, উপদফতর সম্পাদক সায়েম খান, উপপ্রচার সম্পাদক আবদুল আউয়াল শামীম, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী ও গোলাম রব্বানী চিনু প্রমুখ।