রাত ৯টা, কমলাপুর স্টেশনে প্রবেশ করছিল বেনাপোল এক্সপ্রেস। এরইমধ্যে গোলাপবাগ এলাকায় হঠাৎ ট্রেনের একটি কামরায় আগুন ধরে যায়। মুহূর্তে আতঙ্কে হুড়োহুড়ি শুরু করেন যাত্রীরা। তবে এরইমধ্যে হতভাগ্য এক যুবক পুড়ে মারা যান। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি নাশকতার আগুনেই পুড়েছে ট্রেনটি।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) রাত ৯টার দিকে ট্রেনে আগুনের ঘটনা ঘটে। ট্রেনটি বেনাপোল থেকে ঢাকায় ফিরছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কমলাপুরে প্রবেশের সময় একটি কামরায় আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। এতে যাত্রীরা যে-যেভাবে পারেন কামরা থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় এক যুবক আগুনে আটকা পড়েন। তিনি বেশ কিছুক্ষণ আগুনের ভেতরেই দৌড়-ঝাঁপ করে বাঁচার চেষ্টা চালান। তবে শেষ পর্যন্ত আর পারেননি।
ট্রেন থেকে নেমে আসা এক যাত্রী জানান, আমরা ওই যুবককে বাঁচানোর চেষ্টা করেছি। এক পর্যায়ে সে একটি জানালার পাশে এসে অক্সিজেন নিয়ে শক্তি সংগ্রহ করে বের হওয়ার চেষ্টা চালায়। আমরাও তাকে বের করে নিয়ে আসতে বাইরে থেকে টানতে থাকি। তবে তার একটি পা দগ্ধ হওয়ায় সে পরিপূর্ণ শক্তি প্রয়োগ করতে পারেনি। এছাড়া ট্রেনের জানালাটাও অর্ধেক বন্ধ থাকায়, তাকে আর বের করা সম্ভব হয়নি।
এ অবস্থায় জানালায় অর্ধেক বের হওয়া অবস্থায় হাজারো মানুষের সামনে পুড়ে ছাই হন ওই যুবক।
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের ডিউটি অফিসার রাকিবুল হাসান জানান, আগুনটি কামরা থেকে আরও তিনটি কামরায় ছড়িয়ে পড়ে। ট্রেনটির ইঞ্জিনকারসহ বেশ কয়েকটি বগিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
ট্রেনটি দুপুর ১টায় বেনাপোল থেকে ছেড়ে আসে। ট্রেনটি যাত্রাপথে ১১টি স্টেশনে বিরতি করে। ট্রেনটি ঢাকা-বেনাপোল রুটে চলাচলকারী একমাত্র আন্তঃনগর ট্রেন পরিষেবা যা ২০১৯ সালের ১৭ জুলাই চালু হয়। বাংলাদেশ রেলওয়ে সংস্থার পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে বিভাগ কর্তৃক পরিচালিত এটি বিলাসবহুল ও অত্যাধুনিক একটি ট্রেন।
এরআগে, গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকাগামী ‘মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস’ ট্রেনে আগুন দেয় নাশকতাকারীরা। ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে সৈনিক ক্লাব- প্রায় দুই কিলোমিটারের দূরত্বের মধ্যেই আগুন দেয়া হয় ট্রেনটিতে। পরে একটি বগি থেকে মা-ছেলেসহ চার জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তারা হলেন: নাদিরা আক্তার পপি (৩৫) ও তার ছেলে ইয়াসিন (৩), রশিদ ঢালী ও খোকন।