নির্বাচনবাংলাদেশ

৭ জানুয়ারির সব প্রস্তুতি সম্পন্ন, সামনে চ্যালেঞ্জের ৪৮ ঘণ্টা

আর মাত্র ৪৮ ঘণ্টা। তার পরই সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। ৭ জানুয়ারি রোববার সকাল ৮টায় শুরু হবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন। তপশিল ঘোষণার পর থেকে এখন পর্যন্ত বড় কোনো অঘটন ছাড়াই এগিয়েছে নির্বাচনী কার্যক্রম। বিএনপিসহ কয়েকটি দল অংশ না নিলেও প্রচার-প্রচারণায় জমে উঠেছে ভোটের মাঠ। এ পরিস্থিতিতে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতিতে সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করে দেশ-বিদেশে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করে তোলাই এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী আজ শুক্রবার সকাল ৮টায় শেষ হচ্ছে প্রার্থীদের প্রচার-প্রচারণার সুযোগ। বিএনপিসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। তবে ৩০০ আসনের কোনোটিই এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন নেই। নিবন্ধিত ২৭টি দলের মনোনীত ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে ১ হাজার ৯৭০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন। উল্লেখযোগ্যসংখ্যক আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীতরা দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন। কোথাও কোথাও সংঘাত-সংঘর্ষে রূপ নিয়েছে এই দ্বৈরথ। সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারলে শেষ পর্যন্ত জমজমাট একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা সংশ্লিষ্টদের।

বর্তমান সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন করছে বিএনপিসহ বেশ কিছু দল। অন্যদিকে সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকার অধীনে নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে শুরু থেকেই অনড় ছিল আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে সব দলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন প্রশ্নে তৎপর ছিল যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। সরকারের ওপর নানাভাবে চাপ সৃষ্টির চেষ্টাও ছিল তাদের; কিন্তু শেষ পর্যন্ত সাংবিধানিক নির্দেশনা অনুসরণ করে তপশিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। দাবি পূরণ না হওয়ায় নির্বাচন বর্জন করে বিএনপি, বাম গণতান্ত্রিক জোট, ইসলামী আন্দোলনসহ বেশ কিছু রাজনৈতিক দল।

নির্বাচন প্রতিহত করতে হরতাল, অবরোধ, অসহযোগসহ নানা কর্মসূচি দিয়েছে বিএনপি। তবে দলটির অনেক নেতাকর্মী কারাগারে কিংবা আত্মগোপনে থাকায় সেসব কর্মসূচি খুব বেশি প্রভাব ফেলতে পারেনি। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচন ঠেকানোর মতো কঠোর অবস্থান থেকে সরে ভোট বর্জনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকার কৌশল নিয়েছে বিএনপি। ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে ৬ ও ৭ জানুয়ারি ৪৮ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে দলটি। এ কর্মসূচি ‘শান্তিপূর্ণভাবে’ পালন করা হবে বলেও তারা জানিয়েছেন। ফলে সব রকম শঙ্কা কাটিয়ে নির্বাচন আয়োজনে ক্ষেত্রে বিএনপি ও তাদের মিত্রদের দিক থেকে তেমন কোনো বাধার মুখে পড়তে হচ্ছে না। তা সত্ত্বেও সার্বিক বিবেচনায় নির্বাচন কমিশন ও সরকারকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করেন।

প্রথম চ্যালেঞ্জ হলো অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। পাশাপাশি নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি, সংঘাত এড়ানো, ভোটার বাড়াতে বিশেষ পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে সরকার ও ইসিসহ প্রার্থীদের। এরই মধ্যে শতাধিক আসনে তেমন একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হওয়ার আভাস মিলেছে। এই কারণে এসব আসনে ভোটারদের কেন্দ্রে যাওয়ার আগ্রহ কম। প্রবল প্রতদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনগুলোতে ভোটারদের আগ্রহ যথেষ্ট। তবে মূল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের রেষারেষি, সংঘাত-সংঘর্ষের শঙ্কায় ভীতি তৈরি হলে অনেক ভোটার কেন্দ্রমুখী নাও হতে পারেন। এই দুই পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ভোটারদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট সবার জন্যই বড় চ্যালেঞ্জ।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বাংলাদেশের দিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখছে। এই নির্বাচনকে ঘিরে অনেক আগে থেকেই বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা তৎপর ছিলেন। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলাদেশে অবস্থানরত কূটনীতিকদের কাছে নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গ্রহণযোগ্য ভোটের অন্যতম মানদণ্ড হিসেবে বলা হচ্ছে ভোটার উপস্থিতি। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীরা এ বিষয়ে সচেতন। নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক চাপ কোনো ইস্যু নয়, কোনো বিষয় নয়। বিগত দিন থেকে আমাদের একটা অ্যাসেসমেন্ট, হয়ে যাওয়া নির্বাচনটা যেন কোনোভাবেই প্রসপন্ড (বন্ধ) না হয়ে যায়। তিনি বলেন, ‘এমন একটা ফেয়ার নির্বাচন যেন হয়, যেটা সব মহলে স্বীকৃতি পায়।’

রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের জন্যও বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংযত রাখা, ভোটার উপস্থিতি বাড়ানো এবং ভোট-পরবর্তী দলের মধ্যে বিভক্তি রোধসহ সহিংস অবস্থা মোকাবিলা করা। ভোটারদের উদ্বুদ্ধ করতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের জন্য এবারের নির্বাচন অনেক চ্যালেঞ্জ সামনে নিয়ে এসেছে। বিভিন্ন আসনে দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জন্য সংসদ সদস্য পদ ধরে রাখা নিয়ে অনেকের রীতিমতো ঘুম হারাম। অর্থাৎ ক্ষমতাসীন দলের অনেক হেভিওয়েট প্রার্থী স্বতন্ত্রদের দাপটে কীভাবে নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দেবেন সে চিন্তায় ব্যস্ত। অনেক এলাকায় আওয়ামী লীগের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ। এ কারণে অনেকটা বেকায়দায় রয়েছেন দলের গুরুত্বপূর্ণ অনেক নেতা।

অনেক আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ইতোমধ্যে নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করেছেন। তাদের চাপের মুখে কোণঠাসা বর্তমান এমপিদের অনেকেই। সব মিলিয়ে স্বতন্ত্রদের বিজয় আর বর্তমানদের চলমান অবস্থান ধরে রাখার লড়াই চলবে নির্বাচনের দিন পর্যন্ত। ভোটের ফলের পর ক্ষমতাসীনসহ বিভিন্ন দলের স্বতন্ত্র বা বিদ্রোহীদের পরিণতি কী হবে—এ ভাবনাও রয়েছে অনেকের মধ্যে।

আওয়ামী লীগের অন্যতম মিত্র জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের নেতাদের বিজয়ী হওয়ার চ্যালেঞ্জ বেড়েছে এবারের নির্বাচনে। এবার ২৬ আসনে জাপাকে ছাড় দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল। কিন্তু ১২ আসনে রয়েছে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী। এ কারণে ছাড় দেওয়া সব আসনে জাপার বিজয় অনিশ্চিত। সর্বোচ্চ ১০ আসন আসতে পারে বর্তমান বিরোধী দলের ঘরে। তাহলে বিরোধী দল গঠন ও সংসদে জাপার অবস্থান কী হবে? তা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এ নিয়ে জাপায় এরই মধ্যে ভাবনা তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দলটির ৭৪ প্রার্থী নির্বাচন বর্জন করেছেন। নির্বাচনের দিন পর্যন্ত তা কোথায় গিয়ে ঠেকবে, সে আলোচনাও রয়েছে। রওশনপন্থিরা নির্বাচন বর্জন করলেও এ পক্ষের কমপক্ষে তিনজন স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচিত হয়ে আসার সম্ভাবনা বেশি।

১৪ দলের শরিকদের মধ্যে ওয়ার্কার্স পার্টি তিনটি, জাসদ তিনটি ও জেপি (মঞ্জু) একটি আসন পেয়েছে। সব আসনে বিজয় নিশ্চিত করতে টানা তিনবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মিত্র দলগুলো মরিয়া। কিন্তু এসব আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র এমনকি সরকার সমর্থিত নতুন নতুন দলের হেভিওয়েট প্রার্থী রয়েছেন। ফলে চ্যালেঞ্জের মুখে শরিকরাও।

বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও বিভিন্ন দলের ব্যানারে ও স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। নির্বাচনের কমিশনের পক্ষ থেকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশ্বাসে তারা ভোটের মাঠে রয়েছেন। এর মধ্যে অনেকের অবস্থা ভালো। বিএনপিতে থাকা অনেক হেভিওয়েট নেতা এবারের নির্বাচনে দলছুট হয়ে পৃথক প্ল্যাটফর্ম গঠনের মধ্য দিয়ে প্রার্থী হয়েছেন। নতুন দল হিসেবে বিএনএম ও তৃণমূল বিএনপি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া বিএনপি নেতাদের রাজনীতির ভবিষ্যৎ অনেকটা নির্ধারিত হবে এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে।

নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বলেন, ‘দেশে একটি নির্বাচনী উৎসব তৈরি হয়েছে। সবাই এই উৎসবে শামিল হয়েছেন। দেশজুড়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার জোয়ার বইছে। দেশে সুষ্ঠু, সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সার্কভুক্ত দেশগুলো, ওআইসিসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ও এই নির্বাচনকে ব্যাপকভাবে গ্রহণ করেছে। তারা এরই মধ্যে পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে।’

অন্যদিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করেছে। দেশের জনগণ এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে কোনো আস্থা পায় না। গণতান্ত্রিক বিশ্ব এই নির্বাচনকে সমর্থন করছে না।’

নির্বাচনে কোনো ধরনের নাশকতা বরদাশত করা হবে না জানিয়ে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার হাবিবুর রহমান সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, নির্বাচন প্রতিহতকারীদের হুমকির কারণে এবার শান্তিপূর্ণ নির্বাচন করা ডাবল চ্যালেঞ্জ। নির্বাচনে কোনো ধরনের নাশকতা বরদাশত করা হবে না। তিনি আরও বলেন, ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে নিরাপদে যাওয়ার জন্য সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। পুলিশ ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করে সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করা হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে পারব বলে আশা করি।

৭ জানুয়ারি নির্বাচনের চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ বলেন, দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য ইসির চেয়ে সরকারের চ্যালেঞ্জ অনেক বেশি। সুষ্ঠু হলে সবাইকে বলা যাবে দলীয় সরকারের অধীনে এমন নির্বাচন সম্ভব। বিএনপি যদি ভোটে থাকত তাহলে সুষ্ঠু নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি ইতিবাচক বাস্তবতা তৈরি হতো; যা পরবর্তী নির্বাচনে আর তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার কথা আসত না। তবু যারা নির্বাচনে আছে তারা যেন নিরপেক্ষ ভোট হয়েছে তা বলতে পারে, সেজন্য যা যা করা দরকার সরকার ও ইসিকে করতে হবে। এতে ব্যর্থ হলে নেতিবাচক প্রভাব সরকারের ওপর বর্তাবে। মনে রাখতে হবে, বিদেশিদের জন্য নয়, নিজেদের প্রয়োজনে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিকল্প নেই।

সুন্দর নির্বাচনের জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক নজরদারি বাড়ানো ও সতর্ক অবস্থান নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে এই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী আরও বলেন, নাশকতার চেষ্টার তথ্য আগাম জানা গেলে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। চলমান সব ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে। বিএনপি-জামায়াতের ৪৮ ঘণ্টার হরতাল মানেই আবারও নানা রকম নাশকতার চেষ্টা হবে। ভোটাররা যেন নির্ভয়ে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারে সে রকম পরিস্থিতি রাখতে হবে। তারা যেন নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন এই ব্যবস্থা নির্বাচন কমিশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী থেকে শুরু করে দলীয় নেতাকর্মীদের করতে হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button