জাতীয়বাংলাদেশ

গার্ডিয়ানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ: ‘বিভ্রান্তিকর’ প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগ

বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের নিয়ে ‘বিভ্রান্তিকর’ প্রতিবেদন প্রকাশের অভিযোগে যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ান পত্রিকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে সাতটি শ্রমিক ফেডারেশন। একই সঙ্গে তারা পত্রিকাটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চেয়েছেন।

মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সভায় এ দাবি করেন তারা। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিলও করেন শ্রমিকেরা। মিছিলটি জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে শুরু হয়ে পল্টনে গিয়ে শেষ হয়। গণমাধ্যমের প্রতিবেদনসূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সমাবেশে শ্রমিক নেতারা বলেন, বাংলাদেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ করা এবং তৈরি পোশাক শিল্প যাতে বাংলাদেশ থেকে অন্য দেশে চলে যায় এই উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে। অনতিবিলম্বে বাংলাদেশ এবং নারী শ্রমিকদের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে গার্ডিয়ান পত্রিকাকে।

সমাবেশে শ্রমিক নেত্রী লাভলী ইয়াসমিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য প্রদান করেন শ্রমিক নেত্রী রানি খান, নাহিদুল হাসান নয়ন, বাহারানে সুলতান বাহার, মরিয়ম আক্তার প্রমুখ।

সম্প্রতি ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে বাংলাদেশি এক নারী পোশাক শ্রমিকের উদ্ধৃতি দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। সেখানে বলা হয়, মূল্যস্ফীতির কারণে জীবনযাপনের ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় রাতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন নারী পোশাক শ্রমিকরা। ওই প্রতিবেদনে এক নারী শ্রমিকের জীবনকাহিনী তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিবেদনে রুবি রফিক (ছদ্মনাম) নামে ওই নারীর বিষয়ে বলা হয়, প্রতি রাতে সন্তানরা ঘুমিয়ে পড়লে বাসা থেকে বের হন তিনি, চলে যান কেরানীগঞ্জে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত বাজারের দিকে। অভাবের তাড়নায় তিনি দিনে পোশাক শ্রমিক আর রাতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করেন।

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, যৌনকর্মে বাধ্য হওয়া ওই নারী সাধারণত জনপ্রতি ২০০ টাকা করে নেন। এতে প্রতিদিন তার আয় হয় ৪০০-৬০০ টাকা। তিনি ওই টাকা দিয়ে পরিবারে ক্ষুধার চাহিদা মেটান। আর কারখানায় সপ্তাহে ৭ দিন ১০ ঘণ্টা করে কাজ করে ১৫০০-১৭০০ টাকা উপার্জন করেন রুবি। সেটার বেশির ভাগই খরচ হয় ভাড়া, বিল এবং তার সন্তানদের পড়ালেখার জন্য।

প্রতিবেদনে রুবি নামে ওই নারীর জীবনের এমন করুণ গল্প তুলে ধরা হলেও বাংলাদেশের কত শতাংশ নারী পোশাক শ্রমিকের কাজ করছেন তার উল্লেখ নেই। সেসব শ্রমিকদের মধ্যে কত শতাংশ নারী আর্থিক সংকটে থাকেন, তাদের মধ্যে কারা যৌনকর্ম করতে বাধ্য হচ্ছেন তারও কোনো পরিসংখ্যান তুলে ধরা হয়নি। এমনকি তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক কোনো প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের বক্তব্যও নেওয়া হয়নি। করা হয়নি জরিপও।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Back to top button