বস্ত্রমন্ত্রীর দুর্গে আঘাত হানতে মরিয়া তৈমুর
স্টাফ রিপোর্টার, রূপগঞ্জ থেকে জানান, ঢাকার অদূরে রূপগঞ্জ উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে ভোটের মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে তৃণমূল বিএনপি।
আসনটিতে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজীর বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন আরও ৮ জন। তবে এখানে ত্রিমুখি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এদের মধ্য স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তারই দলের নেতা শাহজাহান ভূঁইয়া। একই দলের দুই বিভাজন কাজে লাগিয়ে ছক্কা হাকাতে চান তৃণমূল বিএনপি’র মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার।
গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশব্যাপীও আলোচনায় আছেন তৃণমূল বিএনপি’র এই প্রার্থী। জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসনের মধ্যে এবারের নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ-১ আসনটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হচ্ছে। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত আছেন। তবে ভোটের মাঠে সবচেয়ে বেশি সরব গোলাম দস্তগীর গাজী, তৈমুর আলম খন্দকার ও শাহজাহান ভূঁইয়া।
তারা প্রতিদিন সভা-সমাবেশ ও গণসংযোগের মধ্যদিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। গোলাম দস্তগীর গাজী এ আসনটিতে টানা তিনবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। তিনি সরকারের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রীর দায়িত্বেও আছেন।
সফল ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ দস্তগীরের সামনে নির্বাচনী মাঠ এবার সহজ নয়। মাঠের সমীকরণ বলছে, গোলাম দস্তগীর গাজী স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী হলেও তার প্রতিদ্বন্দ্বী দুই প্রার্থী তৈমুর আলম খন্দকার ও শাহজাহান ভূঁইয়া নির্বাচনে শক্ত অবস্থানে আছেন। প্রচারের শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করে নির্বাচনী মাঠ গরম রেখেছেন তৈমুুর আলম।
স্থানীয় ভোটারদের অনেকের দাবি পৈতৃক নিবাস রূপগঞ্জে হলেও তৈমুর আলম সবসময় শহরকেন্দ্রিক রাজনীতিতে ব্যস্ত ছিলেন।
বিএনপি থেকে বহিষ্কার হওয়ার পর দলটির নেতাদের সঙ্গেও তার তেমন সখ্য নেই। তার প্রচারে বিএনপি’র কোনো নেতাকে দেখা যায়নি। তাছাড়া তার নতুন দল তৃণমূল বিএনপি’রও সাংগঠনিক ভিত্তি নেই।
তবে গত কয়েকদিনের প্রচারে ভোটারদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে দাবি এই প্রার্থীর।
আসনটিতে নৌকার প্রার্থীর ব্যাপক জনপ্রিয়তা আছে। তিনিই বিজয়ী হবেন। তবে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী শাহজাহান ভূঁইয়ার কেতলি প্রতীক।
শনিবার সকালে মানবজমিনর সঙ্গে আলাপকালে তৈমুর আলম বলেন, যারা বলেন আমি জেলাভিত্তিক রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলাম সেটা তাদের ভুল তথ্য, আমার পৈতৃক নিবাস রূপগঞ্জে। এখানে বিএনপি থেকে ২ বার প্রার্থী হয়েছি আমি। এই এলাকার স্কুল, মাদ্রাসা, কবরস্থানে আমাদের পারিবারিকভাবে দান করা জমিতে নির্মিত। রূপগঞ্জে বৈধ গ্যাস এনে দিয়েছি আমি। বিআরটিসি’র চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় রূপগঞ্জের ১ হাজার মানুষকে চাকরি দিয়ে আমি ২৬ মাস জেল খেটেছি। এখানকার ভূমিদস্যুতা নিয়ে আন্দোলন করা একমাত্র ব্যক্তি আমি। রূপগঞ্জের মাটি ও মানুষের সঙ্গে আমার রক্তের আত্মীয়তা।
আমাকে প্রলোভন দেয়া হয়েছে, নির্বাচন থেকে সড়ে আসার জন্য যেকোনো কিছুর বিনিময়ে। আমি বলেছি, জীবনের বিনিময়ে হলেও আমি যেটার কথা দিয়েছি তার বাইরে যাবো না।
অবাধ সুষ্ঠু ও প্রভাবমুক্ত নির্বাচন হলে আমি এখান থেকে বিজয়ী হবো। আর নির্বাচন যদি ১৪ ও ১৮ এর ধাপে হয় তাহলে সরকার সাংবিধানিক সংকটে পড়বে। শেখ হাসিনা কথা দিয়েছেন নিরপেক্ষ নির্বাচনের। তার কথার ওপর আস্থা রেখেই তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে এসেছে। এখন যদি উনি কথা না রাখতে না পারেন। সেক্ষেত্রে তৃণমূল বিএনপিও বিকল্প চিন্তা করবে।