আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে যে আসনগুলো: কী ঘটছে এখানে, পর্ব ০১

প্রধান বিরোধী জোটকে বাইরে রেখে এবার জাতীয় নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। তাদের প্রায় সবাই আওয়ামী লীগেরই নেতা। এর বাইরে জাতীয় পার্টি সমঝোতায় ২৬ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছাড় পেয়েছে। ছাড় পেয়েছে ওয়ার্কার্স পার্টি, জাসদ ও জেপির ৬ প্রার্থী। নির্বাচনের আগে কিংস পার্টি বলে পরিচিত তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম সারা দেশে প্রার্থী দিলেও তাদের দু’একজন আছেন আলোচনায়। এ ছাড়া নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার শেষ মুহূর্তে রাতারাতি কারামুক্ত হয়ে আলোচনায় আসা সাবেক বিএনপি নেতা শাহজাহান ওমর নৌকার প্রার্থী হয়ে আলোচনায় আসেন। দীর্ঘদিন বিএনপি’র সঙ্গে সরকারবিরোধী আন্দোলন করে আসা কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম নির্বাচনে অংশ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন। ভোটের মাঠেও এখন তিনি আলোচিত। এ ছাড়া বিএনপি’র বহিষ্কৃত নেতা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান এবং শাহ আবু জাফরকে নিয়েও আছে নানা আলোচনা।

আখতারুজ্জামান নির্বাচন করছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে।

আর নির্বাচনের আগে কিংস পার্টি হিসেবে আলোচনায় আসা বিএনএম’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফর লড়ছেন দলীয় নোঙর প্রতীকে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির সমঝোতা হলেও দলটি থেকে বহিষ্কৃত দুই নেতা আছেন ভোটের মাঠে আলোচনায়।

এসব প্রার্থীদের কারও কারও পক্ষে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা প্রকাশ্যে কাজ করছেন। কারও কারও প্রতি আওয়ামী লীগ কেন্দ্র থেকে সমর্থন দিয়েছে এমন আলোচনা আছে। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির বহিষ্কৃত দুই নেতা ভোটের মাঠে আওয়ামী লীগের সমর্থন পাচ্ছেন বলেও আলোচনা আছে। এসব প্রার্থীদের বিজয়ী করতে নানা পক্ষ গোপনে এবং প্রকাশ্যে কাজ করার অভিযোগ করছে বলে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের কাছ থেকে অভিযোগ আসছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া। এ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ছাড় দেয়া হয়েছে। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত রওশন এরশাদপন্থি বলে পরিচিত জিয়াউল হক মৃধা। রেজাউল ইসলাম জিয়াউল হক মৃধার জামাতা। এই আসনে মৃধা আওয়ামী লীগের সমর্থন পাচ্ছেন বলে এলাকায় আলোচনা আছে।

ওদিকে রংপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগ জাতীয় পার্টিকে ছাড় দিয়েছে। এ আসনে জি এম কাদেরের ভাতিজা হোসেন মকবুল শাহরিয়ার দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন দলটির সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা। তিনি দল থেকে বহিষ্কৃত এবং রওশন এরশাদপন্থি বলে পরিচিত। এ আসনেও রাঙ্গা সরকারি দলের সমর্থন পাচ্ছেন বলে এলাকায় আলোচনা আছে।
ফরিদপুর-১ আসনে নির্বাচন করছেন বিএনএম চেয়ারম্যান শাহ আবু জাফর। এখানে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান। এ আসনে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীও আছেন। কিন্তু শাহ আবু জাফর নানা পক্ষের সহযোগিতা পাচ্ছেন বলে মাঠে আলোচনা আছে।

ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর। বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে গিয়ে প্রার্থী হওয়ার পর শুরুতে তার পক্ষে নেতাকর্মী না থাকলেও এখন জোর প্রচারণা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনে বিএনপি’র দুইবারের সংসদ সদস্য মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান রঞ্জন ঘোষণা দিয়েছেন তিনি ঘুমিয়ে থাকলেও পাস করবেন। তাকে নিয়েও নানা আলোচনা এলাকায়। দলীয় প্রার্থী রেখে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা তার পক্ষে কাজ করায় আছে নানা আলোচনা। একইভাবে কক্সবাজার-১ (চকরিয়া- পেকুয়া) আসনে বর্তমান সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগের মনোনয়নবঞ্চিত জাফর আলমের দুর্গে হানা দিচ্ছেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম। এই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী নেই। বর্তমান এমপি স্বতন্ত্র হিসেবে লড়ছেন। সৈয়দ ইবরাহিমকে বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগের বড় অংশ মাঠে সক্রিয় বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।

নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে ভোটের মাঠে উত্তাপ ছড়াচ্ছে তৃণমূল বিএনপি’র প্রার্থী এডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার। সিলেট-৬ আসনে শেষ মুহূর্তে নাটকীয় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তৃণমূল বিএনপি চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরীকে এ আসনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা চাপে পড়ে শেষ মুহূর্তে সমর্থন দিচ্ছেন বলে আলোচনা আছে।

Exit mobile version