অর্থনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে খরচ বাঁচাতে গণবিয়ে করছেন আফগানরা। সোমবার দেশটির রাজধানী কাবুলে একটি অনুষ্ঠানে একসঙ্গে পঞ্চাশ দম্পতির বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ভয়েস অব আমেরিকা।
২০২১ সালের আগস্টে তালেবান সরকার কাবুলের ক্ষমতায় আসার পর থেকে নাচ-গানের মাধ্যমে জমকালোভাবে বিয়ে করার সুযোগ অনেকটাই সীমিত হয়ে উঠেছে। কর্তৃপক্ষ এই ধরনের কার্যকলাপকে অনৈসলামিক বলে মনে করায় এসব নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
কাবুল বিমানবন্দরের কাছে সিটি স্টার ওয়েডিং হলের সামনে ঐতিহ্যবাহী শালওয়ার কামিজ পরা প্রায় শতাধিক পাগড়িধারী পুরুষকে দল বেঁধে আড্ডা দিতে দেখা গেছে। তবে এখানে কোনো নারীকে দেখা যায়নি।
নবদম্পতিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য সবুজ ফিতা ও লাল প্লাস্টিকের গোলাপ দিয়ে সাজানো গাড়ি দেখা গেছে।
রুহুল্লাহ রেজায়ি (১৮) তাড়াহুড়ো করে তার স্ত্রীকে নিয়ে চলে যাওয়ার আগে এএফপিকে বলেছিলেন, তার একক বিয়ে করার সামর্থ্য নেই। তিনি বলেন, ‘ট্রেডিশনাল বিয়েতে আমাদের কমপক্ষে ২ লাখ থেকে আড়াই লাখ আফগান মুদ্রা (২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ ডলার) খরচ হত, কিন্তু গণ বিয়ের কারণে খরচ হবে মাত্র ১০ হাজার থেকে ১৫ হাজার আফগান মুদ্রা।’
হাজারা নামের আরেক যুবক, তিনি সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়ের সদস্য। আফগানিস্তানের ঘোর প্রদেশের ছোটখাটো কাজ করে প্রতিদিন মাত্র ৩৫০ আফগান মুদ্রা আয় করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দুই পরিবারের ৩৫ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম। একক বিয়ে হলে ৩০০ থেকে ৪০০ জনকে দাওয়াত দিতে হত।’
সোমবার এই বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে সালেব ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থা। প্রত্যেক নতুন দম্পতিকে অনুদান হিসেবে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকার বেশি দিয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, সংসার জীবন শুরুর জন্য তাদের একটি কেক, টুথপেস্ট, শ্যাম্পু, লোশন, মাদুর ও কম্বলসহ ঘরের কাজে লাগে এমন নানা সরঞ্জাম দিয়েছে সংস্থাটি।
বিয়ের এই আয়োজনের অংশ হতে আবেদন করেছিল ৬০০ জুটি। নির্বাচিত জুটিদের আজকের দিনের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ সময়। কাবুলের বাসিন্দা সামিউল্লাহ জামানি (২৩) বলেন, ‘এই দিনের জন্য আমি তিন বছর অপেক্ষায় থেকেছি। এখন তাকে (স্ত্রী) দেখার জন্য আর তর সইছে না।’