বিএনপি চায় ‘বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে দিল্লী নাক না গলাক’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেছেন, দিল্লী তার নিজ স্বার্থের জন্য বাংলাদেশের গণতন্ত্র হত্যায় মূল ভূমিকা পালন করে আমাদের দেশের মানুষের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে? জনগণের প্রশ্ন দিল্লী কি বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সম্পর্কের পরিবর্তে একটি গণবিরোধী ভোট ডাকাত দলের সাথে সম্পর্ক চান? তবে দেশের ১৮ কোটি জনগণ চায় দিল্লী সৎ প্রতিবেশী সুলভ আচরণ করুক। আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক না গলাক। জনগণের ভোটাধিকার গলাটিপে হত্যার পক্ষে অবস্থান পরিবর্তন করুক। গতকাল শুক্রবার তিনি ভার্চ্যুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, অতীতের তিনটি ভুয়া নির্বাচনের মতোই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দিল্লির প্রকাশ্য প্রভাবে বাংলাদেশের জনগণ উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা বৈঠক বসছে দিল্লিতে। বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য নির্ধারণের সুযোগ বাংলাদেশের নাগরিকদের হাত থেকে ছিনিয়ে নেয়ারই অংশ। যা বাংলাদেশের জন্য সম্মানজনক নয়। ভারতীয় কূটনীতিকরা বাংলাদেশে এসে প্রকাশ্যে শেখ হাসিনার একতরফা ডামি নির্বাচনের পক্ষে বক্তব্য রাখছেন। বিএনপিসহ অধিকাংশ দলবিহীন নির্বাচনে তারা সমর্থন দিচ্ছেন। দিল্লি থেকে বলা হচ্ছে, তারা বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা চান। তার মানে গণতন্ত্র তাদের কাছে এখন অপাংক্তেয়। তিনি আরো বলেন, ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারের মতো দেশটির গণমাধ্যমে বুদ্ধিজীবী ও সাংবাদিকেরা যে সব মতামত প্রকাশ করছেন, তা প্রায় সবই তাদের সরকারি দৃষ্টিভঙ্গি ও নীতির পুনরাবৃত্তি ছাড়া কিছু নয়। সেখানকার পত্রিকায় লেখা হচ্ছে ‘মোদীর কৌশলে বাজিমাত করতে সক্রিয় শেখ হাসিনা’। আরও বিস্ময়ের কথা হচ্ছে, তারা গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি বহুমত ও সহনশীলতার নীতিকে অগ্রাহ্য করে প্রতিবেশী দেশের স্থিতিশীলতা, অন্য কথায় বর্তমান সরকারের ক্ষমতায় টিকে থাকাকে অপরিহার্য গণ্য করছেন গণতন্ত্রকে বর্জন করে। এক্ষেত্রে স্থিতিশীলতার বাংলা হলো স্বৈরতন্ত্র! তাদের কথায় স্পষ্ট যে, এখানে তারা কি লেন্দুপ দর্জি চান?
রুহুল কবির রিজভী বলেন, শেখ হাসিনা তার পূর্বনির্ধারিত ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে গণতান্ত্রিক বিশ্বকে বিভ্রান্ত করার কৌশল হিসাবে নাশকতা ও জঙ্গি নাটক মঞ্চস্থ করার পরিকল্পনা নিচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, আমি পশ্চিমা গণতান্ত্রিক বিশ্বকে বলছি, আপনারা আওয়ামী লীগের কোন নাটককে বিশ্বাস করবেন না। একতরফা সাজানো ডামি নির্বাচন নিয়ে সোচ্চার হোন এবং এদেশের জনগণের একান্ত চাওয়া গণতন্ত্র এবং মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, মেরুদ-হীন দলদাস নির্বাচন কমিশন শেখ হাসিনার পাঠানো আসন বণ্টনের তালিকায় সীলমোহর দেয়ার জন্য একটি একতরফা নির্বাচনের নাটকের আয়োজন করেছে। এই নির্বাচন ঘিরে নির্বাচন কমিশনারদের কথাবার্তা-আচার-আচরণ রীতিমতো হাস্যকর। গণভবনের সুতোয় পুতলের মতো নাচছে ইসি। তারা প্রায়শ বিএনপিকেও হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। গোটা দেশের জনগণ জানে, কারা কারা এমপি হবেন, সেই তালিকা হয়ে গেছে। আর নির্বাচন কমিশনাররাও ভেক ধরছেন। নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমান আজ বলেছেন, রুহুল কবির রিজভীর কাছে যদি তালিকা থাকে প্রকাশ করতে বলেন। কি হাস্যকর কথা। তিনি গণভবনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য মুখিয়ে আছেন আর তিনি জানেন না? এতো অর্বাচীনতার নাটক করে ভাবছেন, জনগণ কিছু বোঝে না? তালিকা আমি কেন দিব? শেখ হাসিনাকে বলেন, পেয়ে যাবেন। আপনার প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে বলেন পেয়ে যাবেন।
প্রধান নির্বাচন কমিশনারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনাদের নেতা ওবায়দুল কাদের আগেই ঘোষণা করেছেন, ১৮৯৬ জন প্রার্থী এবারের নির্বাচনের ফাইনাল খেলায় অংশ নিচ্ছে। ৭০ শতাংশ মানুষ ভোট দেবে। এ সময় গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের গ্রেপ্তার, মামলা, আসামি ও আহতদের তালিকা তুলে ধরেন রিজভী। বিএনপির এই নেতা জানা, এসময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৮৫ জন নেতাকর্মীকে, আহত হয়েছে ৩৫ জন এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে ৬টি। এসব মামলায় আসামি করা হয়েছে ৫৫৬ জন নেতাকর্মীকে।
রাইট কথা
This harmjata should be caught by law enforcing agencies. And teach him a good lesson.