বাংলাদেশের ওপর অযৌক্তিক চাপ আসছে, জাতিসংঘে অভিযোগ

নির্বাচন যখন ঘনিয়ে আসছে তখন বাংলাদেশের ওপর বিভিন্ন পক্ষ থেকে অযৌক্তিক, অযাচিত এবং আরোপিত রাজনৈতিক চাপ আসছে। জাতিসংঘের মহাসচিবের শেফ দ্য ক্যাবিনেট আর্ল কোর্টনে র‌্যাট্রের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এমন অভিযোগ করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। চিঠিতে তিনি বাংলাদেশের রাজনৈতিক উন্নয়নে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান।

চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমরা আশা করি জাতিসংঘ ও তার সেক্রেটারিয়েট, সংস্থা ও স্থানীয় কার্যালয়গুলো বাংলাদেশকে উন্নয়নের পথে ধারাবাহিকভাবে এগিয়ে যেতে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা পালন করবে। বাংলাদেশ মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের প্রচার ও সুরক্ষায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে। বাংলাদেশ আশা করে, জাতিসংঘ শান্তিপূর্ণ, ন্যায্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য আমাদের প্রচেষ্টায় বিশ্বস্ত অংশীদার হিসাবে কাজ চালিয়ে যাবে।

চিঠিতে তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, বাংলাদেশ গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানুষের সম্মান রক্ষায় নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করছে। বাংলাদেশ হচ্ছে বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেখানে এসব মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা করতে ৩০ লাখ মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের একজন ক্রুসেডার এবং তিনি দেশের মানুষের ভোট, খাদ্য ও সুন্দর জীবনযাপনের অধিকার নিশ্চিত করতে অনেক কষ্ট করেছেন। শেখ হাসিনা তার ১৫ বছরের মেয়াদে হাজারো নির্বাচন, উপ-নির্বাচন, জাতীয় নির্বাচন, আঞ্চলিক নির্বাচন ও মেয়র নির্বাচনের আয়োজন করেছেন। খুবই ছোটখাটো কিছু ঘটনা ছাড়া সবগুলো নির্বাচনই ছিল সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ। এখন তিনি একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজন করতে সংকল্পবদ্ধ।

কিন্তু একইসঙ্গে বিক্ষোভের নামে সরকারি ও বেসরকারি সম্পত্তি পোড়ানো ও মানুষকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনাগুলো তিনি সহ্য করবেন না, যা বিরোধী দল নিয়মিত করে আসছে। এই প্রসঙ্গে আমরা জাতিসংঘের কাছ থেকে আরও পরামর্শ নেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছি।

চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘের একটি উদ্যমী ও সহযোগিতামূলক মনোভাবসম্পন্ন সদস্য রাষ্ট্র। আমরা প্রবলভাবে আশাবাদী যে, জাতিসংঘ বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রগতি ও জনগণের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহযোগিতা ও সহায়তা অব্যাহত রাখবে। আমরা আরও প্রত্যাশা করব যে, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা পক্ষপাতহীনতা, সততা ও বস্তুনিষ্ঠতার সর্বোচ্চ মানদণ্ড মেনে চলে সংস্থাটির গ্রহণযোগ্যতা ও সম্মান অক্ষুণ্ণ রাখবে। যদি তাদের প্রতিবেদনগুলোতে ভুল তথ্য ও বস্তুনিষ্ঠতার অভাব থাকে এবং এগুলো যদি উপাত্ত-নির্ভর না হয়, তাহলে তারা তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারাতে পারে, যা সংস্থাটির সামগ্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি এক অশনিসংকেত হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।

Exit mobile version