১৯৬ কারখানায় ‘চাঁদাবাজি’ সীতাকুণ্ডের ওসির: মাসে ওঠে দেড় কোটি টাকা

শিল্পমালিক, দোকানদার, মাছ ব্যবসায়ী, চোরাই তেল বিক্রেতা—কেউ বাদ যান না। মাসে ওঠে দেড় কোটি টাকা। ব্যবসা করতে হলে চাঁদা দিতে হবে, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড শিল্প এলাকায় যেন এটাই নিয়ম।

চাঁদাবাজির অভিযোগ পুলিশের সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদের বিরুদ্ধে। পুলিশের অভ্যন্তরীণ তদন্ত ও পত্রিকার অনুসন্ধানে জানা গেছে, সীতাকুণ্ড থেকে প্রতি মাসে প্রায় দেড় কোটি টাকা চাঁদা তোলা হয়। সেখানকার ১৯৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান, চোরাই জ্বালানি তেল ও জাহাজের পুরোনো আসবাব বিক্রির দোকান, ড্রামের কারখানা, পুরোনো লোহা বিক্রেতা, পরিবহনচালক—কেউই বাদ যান না চাঁদাবাজি থেকে। অবশ্য চাঁদার হার ভিন্ন ভিন্ন। কাউকে দিতে হয় দুই হাজার টাকা, কারও কারও কাছ থেকে নেওয়া হয় এক লাখ টাকা।

চাঁদাবাজির শিকার শিল্পপ্রতিষ্ঠানের তালিকা ধরে ১১টি কারখানার মালিক ও কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন এই প্রতিবেদক। এর মধ্যে ৯টি প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মকর্তারা চাঁদা দিতে বাধ্য হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। অস্বীকার করেছেন একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক। একটি প্রতিষ্ঠানের মালিক বলেছেন, তাঁর কারখানা বন্ধ থাকায় এখন চাঁদা দিতে হয় না।

শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মকর্তারা পুলিশের হয়রানির ভয়ে নাম প্রকাশ করতে চাননি। তবে তাঁরা এ–ও জানিয়েছেন, নিয়মিত মাসোহারার বাইরে নানা অনুষ্ঠানের অজুহাতে তাঁদের কাছ থেকে চাঁদা নেওয়া হয়। এমনকি থানার উন্নয়নকাজের জন্যও মাঝেমধ্যে তাঁদের চাঁদা দিতে হয়। শিল্পমালিকদের পাশাপাশি সীতাকুণ্ডের দোকানদার ও পরিবহনচালকদের সঙ্গে কথা বলেও চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে গত সোমবার সীতাকুণ্ড থানায় যান এই প্রতিবেদক। পরিচয় দিয়ে ওসি তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অপেক্ষা করতে বলা হয়। কিছুক্ষণ পর ওসি থানা থেকে বেরিয়ে যান। যাওয়ার সময় প্রতিবেদকের পরিচয় শুনে তিনি দ্রুত গাড়িতে উঠে চলে যান।

অবশ্য খুদে বার্তা (এসএমএস) পাঠানোর পর সোমবার বিকেলে ওসি তোফায়েল এই প্রতিবেদকের মুঠোফোনে কল করে বলেন, তিনি ১৪ মাস ধরে সীতাকুণ্ড থানায় রয়েছেন। এ সময় শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে কোনো টাকা তোলেননি। কেউ তাঁর নামে টাকা তুললে সেই দায়দায়িত্ব তাঁর নয়।

অবশ্য শিল্পকারখানার মালিকেরা বলছেন, ওসিই লোক পাঠিয়ে টাকা তোলেন। এ ছাড়া পুলিশের নামে কেউ চাঁদা তুললে সেটা ঠেকানোর দায়িত্ব পুলিশেরই। তাঁরা আরও জানিয়েছেন, চাঁদাবাজি বহুদিন ধরেই চলছে। শুধু রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী কারখানার মালিককে চাঁদা দিতে হয় না।

শিল্পকারখানার চাঁদা মাসে মাসে
বন্দরনগর চট্টগ্রাম জেলার সীতাকুণ্ড শিল্পঘন এলাকা। দেশের ইস্পাতশিল্পের বেশ কিছু বড় ও মাঝারি কারখানা সেখানে অবস্থিত। আরও রয়েছে সিমেন্ট, কাচ, বস্ত্র, জুতা, গাড়ি, জাহাজভাঙাসহ কয়েক শ বড় ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠান। পুলিশের একটি সূত্র থেকে চাঁদাবাজির শিকার ১৯৬টি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের একটি তালিকা পাওয়া গেছে। ওই তালিকায় কোন প্রতিষ্ঠান থেকে কত টাকা চাঁদা তোলা হয়, তা–ও উল্লেখ রয়েছে।

দেখা যায়, মাসে প্রতিষ্ঠানভেদে চাঁদার পরিমাণ ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। এর মধ্যে ১১৯টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মাসে ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা করে নেওয়া হয়। ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নেওয়া হয় ৭৭টি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে। সব মিলিয়ে শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর কাছ থেকে মাসে ওঠে প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে চাঁদার টাকা তোলা হয়। ওসির হয়ে এসব শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে চাঁদা তোলেন পুলিশের চার সদস্য। তাঁদের নেতৃত্ব দেন উপপরিদর্শক (এসআই) নাছির উদ্দিন ভূঁইয়া। যদিও তিনি প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন, কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান থেকে তিনি চাঁদা তোলেন না।

সীতাকুণ্ডের জাহাজভাঙা কারখানাগুলোতে দুর্ঘটনায় শ্রমিকের মৃত্যু অথবা আহতের ঘটনা ঘটলে, কোনো কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ হলে এককালীন টাকা আদায়ের সুযোগ তৈরি হয়। অভিযোগ রয়েছে, জাহাজভাঙা কারখানায় মারা যাওয়া শ্রমিকের লাশ স্থানান্তরের আগে ওসিকে টাকা দিয়ে আসতে হয়। ঘটনা ভেদে পরিমাণ ২ থেকে ১০ লাখ টাকা।

■ মাসে শিল্পপ্রতিষ্ঠানভেদে চাঁদা ২০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা।

■ পণ্যবাহী ট্রাকে ডাকাতির সঙ্গে যোগসাজশের অভিযোগও উঠেছে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।

মালিক ও শ্রমিকদের অভিযোগ, পুলিশ যে টাকা নেয়, তা থেকে স্বজনহারানো পরিবার অথবা ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিক কিছু পান। বাকি টাকা পুলিশ রেখে দেয়। বিনিময়ে শ্রমিকের মৃত্যুকে অপমৃত্যু দেখিয়ে মামলা ধামাচাপা দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ ফ্রি ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেস চট্টগ্রামের সাধারণ সম্পাদক কে এম শহীদুল্লাহ বলেন, শিল্পকারখানায় দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ পাওয়ার কথা শ্রমিকের পরিবারের অথবা আহত শ্রমিকের। কিন্তু শ্রমিকেরা যথাযথ ক্ষতিপূরণ পান না। নানাভাবে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়।

দোকানে, পরিবহনে চাঁদাবাজি

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট থেকে কুমিরা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বিভিন্ন জায়গায় ৩০টি পুরোনো লোহা (স্ক্র্যাপ) বিক্রির দোকান ও কিছু মাছের আড়ত রয়েছে। লোহার দোকান থেকে মাসে ৩০ হাজার টাকা করে চাঁদা তোলা হয়।

সরেজমিনে গতকাল মঙ্গলবার পাঁচজন দোকানমালিকের সঙ্গে কথা হয়। এর মধ্যে তিনজন বলেন, পুলিশ নিয়ে কথা বললে ব্যবসা করা সম্ভব হবে না। বাকি দুজন বলেন, অধিকাংশ দোকান অবৈধ। তাই টাকা দিয়েই ব্যবসা করতে হয়।

সীতাকুণ্ডের লিংক রোড থেকে সাগরপাড় এবং কালুশাহ সেতুর নিচে সাত থেকে আটটি চোরাই তেল বিক্রির অবৈধ দোকান রয়েছে। স্থানীয় সূত্র ও দোকান পরিচালনাকারী ব্যক্তিরা বলেন, দোকানগুলো থেকে মাসে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে চাঁদা তোলে পুলিশ। সীতাকুণ্ড এলাকায় ৩০টির মতো ড্রাম তৈরির কারখানা রয়েছে। সেখান থেকে ৪০ হাজার টাকা করে চাঁদা তোলা হয়। ৭০টির মতো জাহাজের পুরোনো আসবাব বিক্রির দোকান থেকে নেওয়া হয় দুই থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে।

সীতাকুণ্ড এলাকার ফৌজদারহাট থেকে বায়েজিদ লিংক রোড পর্যন্ত দেড় শতাধিক সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। অটোরিকশাপ্রতি মাসিক চাঁদা ৩০০ টাকা। এই চাঁদা তোলেন দুই যুবক। তাঁদের একজনের নাম শাকিল। তিনি টাকা তুলে দেন আবদুল্লাহ আল মামুন নামের আরেক যুবককে। মামুন পুলিশের ‘ক্যাশিয়ার’ হিসেবে পরিচিত।

মামুন গতকাল বলেন, অনেক গাড়ির চালকের লাইসেন্স নেই। মহাসড়কেও এসব গাড়ি চলাচল করে। এ কারণে পুলিশকে টাকা দিতে হয়। আরও অভিযোগ রয়েছে, সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারীতে মাইক্রোবাস রাখার অবৈধ পার্কিং সুবিধা দিয়ে প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা তোলে পুলিশ।

মহাসড়কে তল্লাশিচৌকি বসিয়ে গাড়ি থামিয়ে প্রকাশ্যে পুলিশ টাকা নেয় বলে অভিযোগ রয়েছে। গতকাল সরেজমিনে দেখা যায়, সীতাকুণ্ড পৌরসভার বাইপাস এলাকায় একটি তল্লাশিচৌকি বসিয়েছে পুলিশ। এএসআই শাহীন মিয়ার নেতৃত্বে সেখানে গাড়ি তল্লাশি করছিলেন পুলিশের সদস্যরা। এ সময় একটি বাস থামিয়ে নথিপত্র যাচাইয়ের নামে টাকা নিতে দেখা যায়।

শাহীন মিয়া বলেন, ‘আমি একটি বাসের কাগজ যাচাই করছিলাম। তখন একজন পুলিশ কনস্টেবল একটি গাড়ি থেকে ২০০ টাকা নিয়েছে।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসটির চালক দাবি করেন, টাকা না দিলে কাগজপত্র ঠিক থাকলেও মামলা করে পুলিশ। সীতাকুণ্ড পৌরসভা মাইক্রোবাস চালক সমিতি কার্যালয়ে গিয়ে কথা হয় কয়েকজন চালকের সঙ্গে। তাঁরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, মাসে মাসে চাঁদা না দিলে মাইক্রোবাস চালানো যায় না। হিসাব করে দেখা যায়, ১৯৬ শিল্পকারখানা ও অন্য খাত মিলিয়ে চাঁদা ওঠে মাসে প্রায় দেড় কোটি টাকা। বছরে দাঁড়ায় ১৮ কোটি টাকা।

চাঁদাবাজির অভিযোগের বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এস এম শফিউল্লাহ্ বলেন, এসব ঢালাও অভিযোগ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অবশ্য অভিযোগ রয়েছে, চট্টগ্রাম অঞ্চলে সীতাকুণ্ড থানায় বদলি হওয়া অত্যন্ত লাভজনক বলে গণ্য করা হয়। সেখানে বদলিতে বড় অঙ্কের অর্থ ব্যয় হয়। যাঁরা এভাবে ওসি হয়ে সীতাকুণ্ড থানায় যান, তাঁরা বদলিতে অর্থ ব্যয়কে বিনিয়োগ হিসেবে দেখেন। তাঁদের চাঁদাবাজির টাকা ওপরের দিকে যায় কি না, গেলে কত ওপরে যায়, তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

চাঁদা না দিলে হয়রানি
চাঁদা না দিলে ব্যবসায়ীদের হয়রানির অভিযোগও রয়েছে। যেমন গত ১৫ নভেম্বর পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শকের (ডিআইজি) কাছে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেন সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী এলাকার ব্যবসায়ী ওসমান গনি। তাঁর ও তাঁর ভাইয়ের মালিকানায় মদিনা ট্রেডার্স নামের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এটি মুদি পণ্যের সরবরাহকারী।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২ নভেম্বর সীতাকুণ্ড ট্রাফিক পুলিশের এসআই মাসুদ মুন্সি ও এএসআই মো. কামাল মদিনা ট্রেডার্সে গিয়ে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। পরে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা এগিয়ে এলে পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তা চলে যান।

এক সপ্তাহ পর সীতাকুণ্ড থানার এসআই প্রকাশ চন্দ্র সরকার ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কামাল আবার মদিনা ট্রেডার্সে যান বলে উল্লেখ করে লিখিত অভিযোগে বলা হয়, তাঁরাও এক লাখ টাকা দাবি করেন এবং ওসির সঙ্গে বসে বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য বলেন।

ভাটিয়ারীর মদিনা ট্রেডার্সে গিয়ে গতকাল ওসমান গনির সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, চাঁদা না দেওয়ার কারণে তাঁকে এবং তাঁর বড় ভাইকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। সীতাকুণ্ড থানার এসআই প্রকাশ চন্দ্র সরকার মদিনা ট্রেডার্সে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, দায়িত্ব পালনের অংশ হিসেবে ওসির নির্দেশে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। তবে কোনো চাঁদা দাবি করেননি।

ডাকাতের সঙ্গে ‘যোগসাজশ’
সীতাকুণ্ড থানার কোনো কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মহাসড়কে পণ্যবাহী যানবাহনে ডাকাতির সঙ্গে জড়িতদের যোগসাজশের অভিযোগও রয়েছে। যেমন গত ৯ অক্টোবর সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ির জলিল গেট এলাকা থেকে আবুল খায়ের স্টিল মিলসের প্রায় ১৮ লাখ টাকার পিক আয়রন (ইস্পাত তৈরির কাঁচামাল) বোঝাই ট্রাকে ডাকাতি হয়। পুলিশ সূত্র জানায়, সীতাকুণ্ড থানার দুই পুলিশ কনস্টেবল ঘটনার সঙ্গে জড়িত। ডাকাতি হওয়া ট্রাক থেকে পণ্য অন্য ট্রাকে নেওয়ার সময় ঘটনাস্থলে ছিলেন ওই দুই কনস্টেবল। বিষয়টি পুলিশের একটি তদন্তেও এসেছে।

তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্র জানা গেছে, ডাকাতির সঙ্গে পুলিশের দুই সদস্যের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রথমে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়। পরে ব্যবসায়ীদের চাপে থানায় একটি মামলা হয়। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে পরে সীতাকুণ্ড থানা-পুলিশ বগুড়া থেকে মালামাল উদ্ধার করে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলছেন, সীতাকুণ্ডে প্রায়ই পণ্যবাহী ট্রাকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পুলিশ সক্রিয় হলে ডাকাতি থাকত না।

দাম বাড়ে পণ্যের, ভুক্তভোগী মানুষ
যেকোনো খাতে ব্যয় ব্যবসার খরচ বাড়িয়ে দেয়, যা পণ্যের দামের সঙ্গে ওঠান ব্যবসায়ীরা। চাঁদাবাজির টাকাও শেষ বিচারে যায় সাধারণ মানুষের পকেট থেকে। ২০২২ সালের ২ এপ্রিল পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের এক সভায় বলা হয়, সড়ক-মহাসড়কে পুলিশ ও কাঁচাবাজারে প্রভাবশালীদের ‘গুপ্ত’ চাঁদাবাজি পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার একটি বড় কারণ। চাঁদা বন্ধ হলে দাম কমবে।

সীতাকুণ্ডে চাঁদাবাজির বিষয়টি জানিয়ে মতামত জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও গণবিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের শিক্ষক শাহদীন মালিক বলেন, জনমানুষের মধ্যে এই বিশ্বাস আছে যে কারও ছত্রচ্ছায়া না থাকলে দিনের পর দিন এভাবে অপরাধ করা সম্ভব হয় না। এ ধরনের ঘটনায় তদন্ত না হওয়ার এটাও একটা কারণ। তিনি বলেন, ‘পুলিশের এই দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তের দায়িত্ব দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। গণমাধ্যমে আসা দুর্নীতির খবর ধরে দুদক অনুসন্ধান করছে, তেমনটা বেশি দেখা যায় না।’

Exit mobile version