পরমাণু অস্ত্র চায় যুদ্ধবাজ আফগান সরকার!

দুই দশকের দখলদার যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে গত দুই বছর ধরে আফগানিস্তান শাসন করছে সশস্ত্রগোষ্ঠী তালেবান। এখন পর্যন্ত প্রত্যাশার চেয়ে বেশ ভালোভাবেই পরিস্থিতি সামলে নিচ্ছে পশ্চিমা দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন এই শাসকগোষ্ঠী। প্রভাবশালী এই সশস্ত্রগোষ্ঠীর রয়েছে সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধেও লড়াইয়ের ইতিহাস। ক্ষমতা সুসংহত করতে আঞ্চলিকভাবে শক্তিশালী এ গোষ্ঠীর মনোযোগ এখন পারমাণবিক বোমায়। ধারণা করা হচ্ছে শিগগিরিই গণবিধ্বংসী এই অস্ত্র অর্জন করতে যাচ্ছে তালেবান, তবে কীভাবে?

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেন্ডেন্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আফগানিস্তানে নিজেদের ক্ষমতা শক্তিশালী করতে পরমাণু অস্ত্রের খোঁজ করছে তালেবান সরকার। সাবেক আফগান সরকারের গোয়েন্দাপ্রধান রাহমাতুল্লাহ নাবিল এমন দাবি করেছেন। দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা পরিষেবা বিভাগের সাবেক এ প্রধান জানান, আধুনিক সামরিক শক্তির প্রতীক হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনে উত্তর কোরিয়া, ইরান, চীন এবং রাশিয়াকে অনুসরণ করতে চায় তালেবান।

২০২১ সালের ১৫ আগস্ট পশ্চিমা বাহিনী প্রত্যাহারের পর ক্ষমতায় আসা তালেবান আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য মরিয়া হয়ে আছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির পরমাণু অস্ত্র পাওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে রাহমাতুল্লাহ নাবিল জানান, তালেবানের একটি দল পরমাণু অস্ত্রের মালিকান অর্জনে কাজ করে যাচ্ছে। হয়তো তারা এগুলো পাকিস্তান থেকে পাবে অথবা প্রকৌশলীদের দিয়ে অর্থের বিনিময়ে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করিয়ে নিতে পারে। এমনটা হলে তা ভয়াবহ বিপর্যয়। আফগানিস্তানের পরিস্থিতির ওপর তাজিকিস্তানের দুশানবেতে অনুষ্ঠিত হেরাত সিকিউরিটি ডায়ালগে অংশ নিয়ে এমনটা জানান তিনি।

যদিও সম্মেলনে উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা তালেবান কর্তৃক কৌশলগত পরমাণু অস্ত্র অর্জনের ক্ষমতা, সংযোগ বা প্রকৃত ইচ্ছা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু রাহমাতুল্লা নাবিল বলেন, এমন সম্ভাবনা উপেক্ষা করা খুব বিপজ্জনক। তারা যুদ্ধাবাজ, তাদের ইচ্ছা আছে। অন্যরা কীভাবে এ ধরনের অস্ত্র অর্জন করেছে তা নিয়ে তারা আলোচনা করছে। বর্তমানে তারা যে মনোযোগ আকর্ষণ করছে সামনে তাদের আরও মনোযোগ প্রয়োজন।

যুক্তরাষ্ট্রের মদদপুষ্ট এই আফগান কর্মকর্তা তালেবানকে সন্ত্রাসীগোষ্ঠী সম্বোধন করে জানান, গত দুই বছরে তালেবান কৌশলগত গভীরতা অর্জন করেছে। তাদের হাতে ন্যাটোর সর্বাধুনিক অস্ত্র রয়েছে। এমনকি তাদের কাছে অত্যাধুনিক গোয়েন্দা সরঞ্জাম ও নজরদারি ব্যবস্থা রয়েছে। এগুলো তারা আফগান জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। বর্তমান বিশ্ব তালেবানের সামরিক কার্যক্রমের ওপর তেমন গুরুত্ব দিচ্ছে না দাবি করে রাহমাতুল্লা নাবিল সতর্ক করে বলেন, এর জন্য ভবিষ্যতে মূল্য দিতে হতে পারে।

Exit mobile version