নির্বাচনবাংলাদেশ

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে ১০ শতাংশ ভোটের ২৪ দল

আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ ২৬টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলও প্রার্থী মনোনয়ন নিয়ে কাজ করছে। তবে রাজপথে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এখনো আন্দোলনের মাঠেই রয়ে গেছে। বিএনপিকে ছাড়াই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে তা নিয়ে ইতিমধ্যে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। কারণ বিএনপি ভোটে না এলে ভোটের বড় একটি অংশ নির্বাচনের বাইরে থাকবে। কেননা এবার অংশ নেওয়া ছোট দলগুলোর বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোটপ্রাপ্তির হার খুবই কম। বিগত ছয়টি নির্বাচনী তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, প্রাচীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগের একটা বড় ভোটব্যাংক রয়েছে। এর বাইরে একমাত্র জাতীয় পার্টি ছাড়া বাকি দলগুলো সবাই মিলে মোট ভোটের ১০ শতাংশও পায়নি। আর একক দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়া এসব দল ভোটপ্রাপ্তির হার ২ শতাংশেরও কম।

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, বাংলাদেশে আরেকটি ‘একতরফা নির্বাচন’ হতে যাচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি অংশ না নিলেও ২০১৪ সালের নির্বাচনের মতো এবারও ভোটার উপস্থিতি এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট করা নিয়ে নানা কৌশলে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আগামী নির্বাচনে ‘অংশগ্রহণমূলক’ দেখাতে চায় সরকার। এজন্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক ছাড়াও নিবন্ধিত বা অনিবন্ধিত বেশ কয়েকটি দলকে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে নানা কৌশল অবলম্বন করছে বলে গুঞ্জন রয়েছে। বিশেষ করে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলোর প্রতি বেশি মনোযোগী তারা। তবে এই দলগুলোর জনসমর্থন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

যেমন বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে থাকা ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বাংলাদেশ মুসলিম লীগ এবং বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মতিন) নিয়ে যুক্তফ্রন্ট গঠন করে নির্বাচনে যাওয়া ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি দেশ রূপান্তরকে জানান, তার সঙ্গে সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচনের আশ্বাস নিয়েই তিনি ভোটের মাঠে নামছেন। এখন সে ওয়াদা কতটুকু রক্ষা হবে এ গ্যারান্টি সরকার দেবে।

তথ্য বলছে, কল্যাণ পার্টি গঠন করা হয় ২০০৭ সালে এক-এগারো সরকারের সময়। পরের বছর নিবন্ধন পেয়েই ২০০৮ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। ২০১৪ সালে ২০ দলীয় জোট নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় শরিক হিসেবে তারাও ভোটে মিছিলে শামিল হতে পারেনি। দলটির অংশ নেওয়া দুটি নির্বাচনের তথ্য বলছে, ২০০৮ সালে তারা মোট ভোটের মধ্যে ০.০৩ শতাংশ (দশমিক শূন্য তিন) ভোট পেয়েছে। আর ২০১৮ সালে ১০ কোটি ৪১ লাখ ৫৬ হাজার ২৬৯টি ভোটের মধ্যে দলটি পেয়েছিল মাত্র ৫৫টি ভোট (যদিও ৮০ শতাংশ ভোট কাস্ট হয়েছিল)।

তথ্য বিশ্লেষণে আরও দেখা গেছে, নির্বাচনে আসার সিদ্ধান্ত নেওয়া নিবন্ধিত ৪৪টি দলের ২৬টি দল। এরা হচ্ছে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি (এরশাদ, জেপি), বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি (জেপি), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ, ইনু), জাকের পার্টি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি), গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মুকিত), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ), বাংলাদেশ কংগ্রেস, তৃণমূল বিএনপি, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (বিএসপি)। এ ছাড়া আশেকানে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (মতিন) দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়া নির্বাচনী ট্রেনে রয়েছে। এদের কেউ কেউ মনোনয়ন ফরম বিক্রিও শুরু করেছে।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও উইকিপিডিয়ার সূত্র বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিগত নির্বাচনগুলোতে দেশের বেশিরভাগ জনসমর্থন ছিল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষে। এই দল দুটির বাইরে জাতীয় পার্টির (এরশাদ) জনসমর্থন দেখা গেছে। ইসলামী দলগুলোও জনসমর্থনের দিক দিয়ে অনেক পিছিয়ে।

নির্বাচনের তথ্যে ১৯৯১ সালের নির্বাচন পর্যালোচনায় দেখা যায়, সে সময় বিরোধী দলে ছিল বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তখন দলটি মোট ভোটারের ৩০ দশমিক ০৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। জাতীয় পার্টি পেয়েছিল ১১ দশমিক ৯২ শতাংশ ভোট। অন্য দলগুলোর মধ্যে জাকের পার্টি ১ দশমিক ২২, ইসলাম ঐক্যজোট দশমিক ৭৯, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি দশমিক ৭৬, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু) দশমিক ৫০, গণতন্ত্রী পার্টি দশমিক ৪৫, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ দশমিক ২০, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি দশমিক ১৯, দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ ভোট পায় সাম্যবাদী দল (মার্ক্স-লেলিন)। বাংলাদেশ পিপলস লীগ ৭৪২ ভোট পায়। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য দলগুলো যাদের অধিকাংশই বর্তমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তারা পায় মোট ভোটের ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ ভোট।

১৯৯৬ সালের ভোটের হিসাবে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ পেয়েছিল ৩৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ ভোট। জাতীয় পার্টি ১৬ দশমিক ৪০, ইসলামী ঐক্যজোট ১ দশমিক ০৯, জাকের পার্টি শূন্য দশমিক ৪০, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু) দশমিক ১২, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট দশমিক শূন্য ৬, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি দশমিক শূন্য ১ শতাংশ ভোট পায়। বাংলাদেশ ইসলামী পার্টি ১৩২ ভোট পায়। আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া অন্য দলগুলো যাদের অধিকাংশই বর্তমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তারা পায় মোট ভোটের ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ ভোট।

২০০১ সালের ভোটে হিসাবমতে, আওয়ামী লীগ ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ, ইসলামী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট (ইসলামী দলগুলোর জোট) ৭ দশমিক ২৫ শতাংশ, ইসলামী ঐক্যজোট দশমিক ৬৮, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ আর জাকের পার্টি ১ হাজার ১৮১ ভোট, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ৫৮২ ভোট, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ভাসানী) ৪৪২ ভোট, বাংলাদেশ পিপলস পার্টি ৩৮২ ভোট পায়। অন্য দলগুলো যাদের অধিকাংশই বর্তমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তারা পায় মোট ভোটের ৭ দশমিক ৯৯ শতাংশ ভোট।

২০০৮ সালের ভোটে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি (এরশাদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি মহাজোট করে যথাক্রমে ৪৮ দশমিক ০৪, ৭ দশমিক ০৪, দশমিক ৭২, দশমিক ৩৭ শতাংশ ভোট পায়। বিকল্পধারা বাংলাদেশ দশমিক ২১, জাকের পার্টি দশমিক ১৯, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি দশমিক ১৫, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ দশমিক ১৫, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট দশমিক শূন্য ৫, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, কল্যাণ পার্টি ও তরিকত ফেডারেশন দশমিক শূন্য ৩ শতাংশ ভোট পায়। এ ছাড়া ন্যাশনাল পিপলস পার্টি দশমিক শূন্য ১ শতাংশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ১ হাজার ১১৩ ও ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ ১ হাজার ২০ ভোট পায়। অন্য দলগুলো যাদের অধিকাংশই বর্তমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তারা পায় মোট ভোটের ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ ভোট।

২০১৪ সালের ভোটে আওয়ামী লীগ ৭২ দশমিক ১৪ শতাংশ, জাতীয় পার্টি ৭ শতাংশ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি ২ দশমিক ১০, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল ১ দশমিক ১৯, বাংলাদেশ তরিকতে ফেডারেশন শূন্য দশমিক ৫১, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি দশমিক শূন্য ৪, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট দশমিক শূন্য দশমিক ২ শতাংশ ভোট পায়। অন্য দলগুলো যাদের অধিকাংশই বর্তমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে তারা পায় মোট ভোটের ৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ ভোট।

২০১৮ সালের ভোটে আওয়ামী লীগ ৭৬ দশমিক ৮৬, জাতীয় পার্টি ৫ দশমিক ২৮, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল দশমিক ৭২, বিকল্পধারা বাংলাদেশ দশমিক ৬৬, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন দশমিক ৫১, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (ইনু) দশমিক ৩৩, জাকের পার্টি দশমিক ১৩, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট দশমিক শূূন্য ৭, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি দশমিক শূন্য ৪, ইসলামী ফ্রন্ট অব বাংলাদেশ দশমিক শূন্য ৭, ইসলামী ফ্রন্ট বাংলাদেশ দশমিক শূন্য ৪, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ দশমিক শূন্য ২ ভোট পায়। ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি দশমিক শূন্য ১ শতাংশ করে ভোট পায়। এ ছাড়া কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ৫৯৭, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ২২৮, কল্যাণ পার্টি ৫৫ ভোট পায়। অন্য দলগুলো যাদের অধিকাংশই বর্তমান দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তারা পায় মোট ভোটের ২ দশমিক ৫১ শতাংশ।

যেসব দল বর্তমানে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ছাড়া ১৯৯১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ছয়টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে গড়ে প্রায় ৪ দশমিক ১৬, ১ দশমিক ৬৯, ৭ দশমিক ৯৯, ৯ দশমিক ৬১, ৪ দশমিক ৩৯, ২ দশমিক ৫১ শতাংশ ভোট, যা কোনো নির্বাচনেই ১০ শতাংশের ভোটের বেশি নয়।

নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসার দিক থেকেও একেবারে পিছিয়ে এসব দল। তথ্য বলছে, ১৯৯১ সালে যেখানে বিএনপি ১৪০টি, আওয়ামী লীগ ৮৮টি, জাতীয় পার্টি ৩৫টি আসন পেয়েছিল, সেখানে বাকি সব দল মিলে পায় ৩৭টি আসন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ১৪৬টি, বিএনপি ১১৬টি, জাতীয় পার্টি ৩৩টি আসন পেলেও অন্য দলগুলো পায় মাত্র ৬টি আসন। ২০০১ সালে বিএনপি ১৯৩টি, আওয়ামী লীগ ৬২টি, জাতীয় পার্টি ১৪ আসন আর অন্য দলগুলো ২৯টি আসন পেয়েছিল। জোটবদ্ধ রাজনীতির কারণে এ সময় অনেক ছোট দলকে ছাড় দিতে হয়েছিল বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে। ২০০৮ সালে গিয়ে আবার অন্য দলগুলোর আসন নেমে আসে ১৩টি। যেখানে আওয়ামী লীগ ২৩০টি, বিএনপি ৩০টি, জাতীয় পার্টি পায় ২৭টি আসন। ২০১৪ সালে বিএনপির নেতৃত্বে থাকা জোট অংশ না নেওয়ায় আওয়ামী লীগ ২৩৪টি আসন, জাতীয় পার্টি ৩৪টি আর অন্য দলগুলো মিলে পায় ৩২টি। এ নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বে থাকা ২০ দলীয় জোট অংশ নেয়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৫৭টি, জাতীয় পার্টি ২২টি আর বিএনপি পায় ৬টি। অন্য দলগুলো পেয়েছিল ১৩টি আসন। গত ছয়টি নির্বাচনে ১ হাজার ৮০০ আসনের (প্রতি নির্বাচনে ৩০০টি আসন করে) মধ্যে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির বাইরে অন্য দলগুলো মিলে পেয়েছিল মাত্র ১৩০টি আসন।

২০২৩ সালে নির্বাচন কমিশন পাঁচটি দলকে নিবন্ধন দেয়। এর মধ্যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম), বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (বিএসপি) ও তৃণমূল বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইনসানিয়াত বিপ্লব বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ) এখনো তাদের অবস্থান পরিষ্কার করেনি।

সর্বশেষ তথ্যমতে, নির্বাচনে যাওয়ার ঘোষণা দেওয়া তিনটি দল ৩০০ আসনেই প্রার্থী দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। তবে তারা সেভাবে টার্গেট পূরণ করতে পারেনি।

জানতে চাইলে তৃণমূল বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব মো. আক্কাস আলী খান জানান, তাদের মোট ৩৫০টি ফরম বিক্রি হয়েছে। এক আসনে দুটি করে ফরম বিক্রি হলেও ১৭৫টির বেশি আসনে দলটি প্রার্থী দিতে পারবে না। অন্যদিকে বিএনএম মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে ২৬০টি। এমনটি জানিয়ে বিএনএমের স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হানিফ বলেন, ‘আমরা ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়ে বিরোধী দলে বসতে চাই।’

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘এটি এখন সুস্পষ্ট যে, ক্ষমতাসীন সরকার “যেকোনো মূল্যে” দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধপরিকর। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনও প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও অন্য কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দলকে ছাড়াই নির্বাচন করতে যাচ্ছে। যদি তাই হয়, তাহলে জাতি হিসেবে আমাদের কি মূল্য দিতে হবে না? অন্যভাবে বলতে গেলে, এ নির্বাচন কি সর্বজনে গ্রহণযোগ্যতা পাবে?’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, ‘দেশের বড় একটি দল নির্বাচনে না এলে হয়তো এটা নিয়ে কথা হবে। কিন্তু বাকি দলগুলো নিয়ে নির্বাচন হলে, সেই নির্বাচন যদি সুষ্ঠু ও ভোটারদের অংশগ্রহণ থাকে, তাহলে এক ধরনের গ্রহণযোগ্যতা পাবে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ছোট দলগুলোর কাছ থেকে দেশের মানুষ নতুন কিছু পাচ্ছে না বলেই হয়তো তাদের বেছে নিচ্ছে না।’

Back to top button