প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ করেছে ৩১০। দ্বিতীয় দিন শেষে নিউজিল্যান্ডের সংগ্রহ ছিল ৮ উইকেটে ২৬৬ রান। পিছিয়ে ছিল ৪৪ রানে কিউইরা। কিন্তু তৃতীয় দিন সকালে নবম উইকেটে টিম সাউদি আর কাইল জেমিসনের ৫২ রানের জুটিটাই ক্ষতি করে দিলো বাংলাদেশের। তা না হলে প্রথম ইনিংসে লিড পেতে পারতো টাইগাররা।
তবে নিউজিল্যান্ডও যে বড় লিড নিয়েছে, তা নয়। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৩১০ রানের জবাবে ১০১.৫ ওভার খেলে ৩১৭ রানে অলআউট হয়েছে কিউইরা। এতে নিউজিল্যান্ড পেলো ৭ রানের লিড।
তৃতীয় দিনের সকালে প্রথম ঘণ্টা অনায়াসেই পার করে দেন সাউদি আর জেমিসন। কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। অবশেষে ট্রাম্পকার্ড মুমিনুল হকের হাত ধরেই সাফল্য পায় টাইগাররা। এক ওভারে জেমিসনকে (২৩) এলবিডব্লিউ আর সাউদিকে (৩৫) বোল্ড করেন বাঁহাতি এই পার্টটাইম স্পিনার।
আগের দিন ৮৪ ওভার খেলে নিউজিল্যান্ড তুলেছিল ৮ উইকেটে ২৬৬ রান। কাইল জেমিসন ৭ আর টিম সাউদি ১ রানে অপরাজিত ছিলেন।
বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল ৩১০ রানে। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪৪ রানের মাথায় ২ উইকেট হারায় কিউইরা। সেখান থেকে ম্যাচ দখলে রাখেন কেন উইলিয়ামসন। জুটি গড়েন হেনরি নিকোলস, ড্যারেল মিচেল ও টস ব্লান্ডেলের সঙ্গে।
একে একে সবাইকে ফেরান তাইজুল-মিরাজ-শরিফুল-নাইমরা। তবে ফেরাতে পারেননি আঠার মতো লেগে থাকা উইলিয়ামসনকে।
এই ডানহাতি ব্যাটারের সঙ্গে জুটি গড়া নিকোলস ১৯ রান করে পেসার শরিফুলের শিকার হয়ে ফেরত যান। মিচেল আউট হন তাউজুলের ঘূর্ণিতে (৫৪ বলে ৪১)। নাইম হাসানের বলে আউট হওয়ার আগে ব্লান্ডেল করেছেন ৬ রান।
এর আগে নিজেদের প্রথম ইনিংসে ওপেন করেন ডেভন কনওয়ে ও টম ল্যাথাম। তাইজুল-মিরাজের ঘূর্ণিতে সেটি বেশিক্ষণ ধরে রাখতে পারেননি তারা। দলীয় ৩৬ রানের মাথায় ল্যাথাম ও ৪৪ রানের মাথায় আউট হয়ে যান কনওয়ে। ল্যাথামকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। তাইজুলকে সুইপ খেলতে গিয়ে ফাইন লেগ অঞ্চলে নাইম হাসানের হাতে ক্যাচ হন ল্যাথাম।
এরপর কনওয়েকে ফেরান অফস্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। মিরাজের বলে খেই হারিয়ে শর্টলেগে শাহাদাত হোসেনের তালুবন্দি হন এই কিউই ওপেনার।
মধ্যাহ্নভোজের পর আউট হন নিকোলস। ৪২ বলে ১৯ রান করে শরিফুলের বলে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের হাতে ক্যাচ হন তিনি। তার আগে উইলিয়ামসনের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটি করেছিলেন নিকোলস।
একটা প্রান্ত ধরে ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। একের পর এক জুটি গড়ে গেছেন। নিকোলসের সঙ্গে ৫৪, মিচেলের সঙ্গে ৬৬ রানের পর গ্লেন ফিলিপসের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটেও ৭৬ রান যোগ করেন তিনি। কিছুতেই জুটিটা ভাঙছিল না।
অবশেষে কিউই ইনিংসের ৭৫তম ওভারে মুমিনুল হকের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। আর বল হাতে নিয়েই অধিনায়ককে উইকেট উপহার দেন মুমিনুল। টার্ন করা বল ফিলিপসের (৪২) ব্যাটে লেগে প্রথম স্লিপে গেলে নিচু ক্যাচ দারুণভাবে লুফে নেন শান্ত।
প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের লিড নেওয়ার পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায় ছিলেন কেন উইলিয়ামসন। একটা প্রান্ত ধরে জুটির পর জুটি গড়ে যাচ্ছিলেন। টেস্ট ক্যারিয়ারের ২৯তম সেঞ্চুরিও তুলে নেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার।
অবশেষে দিনের শেষ সময়ে এসে উইলিয়ামসনকে সাজঘরের পথ দেখিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি এই স্পিনারের দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে ডিফেন্স করেও বোল্ড হয়ে গেছেন উইলিয়ামসন। ২০৫ বলে ১০৪ রানের ধৈর্যশীল ইনিংসে ১১টি বাউন্ডারি হাঁকান কিউই তারকা।
১০৯ রানে মোট ৪ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। তবে মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো বোলিং করেছেন মুমিনুল হক। মাত্র ৩.৫ ওভারে ৪ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। একটি করে নিয়েছেন শরিফুল ইসলাম, মেহেদী হাসান মিরাজ ও নাঈম হাসান।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টেস্টের প্রথম দিনে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ৮৫.১ ওভারে ৩১০ রানে অলআউট হয়েছিল বাংলাদেশ। এখন অপেক্ষা বাংলাদেশের ২য় ইনিংসের।