প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন করার জন্য দলের মনোনয়নবঞ্চিত নেতাদেরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ভোটের মাঠে রাখার যে কৌশল আওয়ামী লীগ নিয়েছে, সেটিতে দলটি কতটা লাভবান হবে?
“এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ লাভবানই হবে। কারণ দলটির তৃণমূলের অনেক জনপ্রিয় নেতা, যারা দলীয় মনোনয়ন পাননি, তারা নিজেদেরকে যোগ্যতা প্রমাণের সুযোগ পাবেন”, বলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহিউদ্দিন আহমদ।
তিনি আরও বলেন, “তারপরও এটি একটি সাজানো নির্বাচনই হবে। কারণ বিএনপি ছাড়া নির্বাচন সত্যিকার অর্থে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠবে না।”
অন্যদিকে, আরেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক জোবাইদা নাসরিন অবশ্য মনে করছেন, নিজ দলের মধ্যে একাধিক প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় সুবিধার পাশাপাশি কিছু ক্ষতির মুখেও পড়তে হতে পারে আওয়ামী লীগকে।
“আন্তর্জাতিক চাপের মুখে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ দেখানোর জন্য নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ভোট করার সুযোগ দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। তারা আসলে দলটির ছায়াপ্রার্থী।”
“তবে আপাতদৃষ্টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরকে নিরীহ মনে হলেও ভোটের মাঠের চিত্র ভিন্ন রকম হতে পারে। এতে তৃণমূলে দলের কোন্দল আরও বাড়বে এবং সহিংসতা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।”
তবে আওয়ামী লীগ অবশ্য তেমন কোন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা করছে না।
দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, “ঐহিত্যবাহী সংগঠন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সব সময়ই দলীয় শৃঙ্খলা মেনে চলেন, চেইন অব কমান্ড ফলো করেন। যদিও এবারের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। তারপরও নেতাকর্মীরা আমাদের নিয়ন্ত্রণেই থাকবে।”
তাছাড়া নির্বাচনের ফলাফল যেটাই হোক, আওয়ামী লীগ তা মেনে নিবে বলে জানানো হচ্ছে।
“জনগণ যাকে ভোট দিবে, সে-ই নির্বাচিত হবে। সেখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জিতলো, নাকি স্বতন্ত্র প্রার্থী জিতলো, সেটা বড় বিষয় নয়। জনগণ যা রায় দিবে, আমরা তাই মেনে নিবো। এক্ষেত্রে মনোনীত প্রার্থীরা হারলে আওয়ামী লীগ পরাজিত বোধ করবে না।”
এর আগে, চলতি বছরের ২৫শে মে তারিখে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীকে পরাজিত করে স্বতন্ত্র প্রার্থী মেয়র নির্বাচিত হন।
তখন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নতুন মেয়রকে ‘ঘরের লোক’ অভিহিত করে অভিনন্দন জানানো হয়। এবার জাতীয় নির্বাচনও ‘গাজীপুর স্টাইলে’ হতে যাচ্ছে বলে আলোচনা রয়েছে।