স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কি আওয়ামী লীগে কোন্দল বাড়াবে, পর্ব ০২

অর্ধশতাধিক স্বতন্ত্র প্রার্থী

একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য ছিলেন এমন অন্তত ৭২ জন নেতা এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন তালিকায় জায়গা পাননি। তাদের অনেকে যেমন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে ভোটে লড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তেমনি এলাকায় যারা নিজেদেরকে জনপ্রিয় বলে মনে করছেন, তারাও ভোটে দাঁড়াচ্ছেন।

বিগত দু’টি নির্বাচনে প্রায় একচেটিয়া বিজয় লাভ করলেও দেশে-বিদেশে সমালোচনা হওয়ায় নির্বাচনগুলো নিয়ে বেশ অস্বস্তি আছে আওয়ামী লীগের মধ্যে। ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৫৩ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন দলটির মনোনীত প্রার্থীরা।

এবারও নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে আন্দোলন করতে থাকা বিএনপি। পাশাপাশি একটি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন করার জন্য বিদেশি চাপও রয়েছে।

এ অবস্থায় আওয়ামী লীগ চাইছে নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং অংশগ্রহণমূলক দেখাতে। আর এ জন্য প্রয়োজনে ‘ডামি’ প্রার্থী রাখার পরামর্শ দিয়েছেন দলটির সভাপতি এবং দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চাপ প্রয়োগ না-করতে দলের প্রার্থীদেরকে নির্দেশও দিয়েছেন তিনি। আর এতেই দলটির মনোনয়নবঞ্চিতদের মধ্যে অনেকেই স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে দাঁড়াতে শুরু করেছেন।

ইতিমধ্যেই সারা দেশের অর্ধশতাধিক আওয়ামী লীগ নেতা নিজেদেরকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণাও দিয়েছেন।

বরিশাল-৫ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের সদ্য সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ।

আর ফরিদপুর-৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হককে। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তার বিরুদ্ধে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য এবং ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ।

একই ভাবে, ফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ’র বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে ভোট করার ঘোষণা দিয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও যুবলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী (নিক্সন)।

এদিকে, সিলেট-৬ বিয়ানীবাজার আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও কানাডা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সরওয়ার হোসেন। এ আসনে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদকে।

অন্যদিকে, রংপুর-৬ আসনে আবারও নৌকা প্রতীক পেয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। নৌকা না পেয়ে এখান থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ব্যবসায়ী সিরাজুল ইসলাম।

Exit mobile version