অর্থ ও বাণিজ্যএক্সক্লুসিভজাতীয়বাংলাদেশরেগুলেটরি বডি

আগামী মাসেও বাড়তে পারে আরেক দফা বিদ্যুতের দাম

বিদ্যুতের একদফা দাম বাড়ানো হয়েছে। দাম বাড়াতে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন বিইআরসি’র গণশুনানির ফলের অপেক্ষায় থাকা অবস্থায় সরকারের নির্বাহী আদেশে গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে ৫ শতাংশ দাম বাড়ানো হয়েছে। ১লা জানুয়ারি থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর হবে।

তবে এই দাম বৃদ্ধি এখানেই শেষ নয়। আগামী মাসেও বাড়তে পারে আরেক দফা। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ভর্তুকি কমাতে ধাপে ধাপে ১৫ শতাংশের মতো দাম বাড়াতে   চায় সরকার। বিদ্যুতের নতুন এই দাম কার্যকর হওয়ার মাস থেকেই কার্যকর হতে পারে গ্যাসের নতুন দাম। ইতিমধ্যে গ্যাসের দাম বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে।

ওদিকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আলোচনা ছিল বেশকিছু দিন থেকে। চলতি মাসেই নতুন দাম নির্ধারণ হতে পারে বলে সূত্র জানিয়েছে। গত বছরের ৫ই জুন গ্যাসের দাম ২২ শতাংশের বেশি বাড়ানো হয়। এই মূল্যবৃদ্ধির পরও লোকসান হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট বিতরণ কোম্পানিগুলোর। সূত্র জানায় অনেক দিন থেকেই আলোচনায় থাকায় এবার নির্বাহী আদেশেই গ্যাসের দাম বাড়তে পারে।

সূত্র জানায়, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের ঋণ পেতে ভর্তুকি হ্রাসের অংশ হিসেবে কয়েক ধাপে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে। সম্ভাব্য জনপ্রতিক্রিয়ার বিষয় মাথায় রেখে ধাপে ধাপে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাড়তি দামে বিদ্যুৎ কেনা, বসে থাকা কেন্দ্রের ভাড়া মেটানো ও সিস্টেম লসের কারণে বড় অঙ্কের লোকসান গুনতে হয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে। এই লোকসান  মেটাতে সরকারের ভর্তুকির ওপর নির্ভর করে প্রতিষ্ঠানটি। ২০২১-২২ অর্থবছরে পিডিবি ভর্তুকি চেয়েছিল ২৯ হাজার ৬৫৮ কোটি টাকা।

এ পর্যন্ত অর্থ মন্ত্রণালয় ছাড় করেছে ১৮ হাজার ৫৬১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরের জন্য পিডিবি ভর্তুকি প্রাক্কলন করেছে ৪৪ হাজার ২০ কোটি টাকা। সরকার চলতি অর্থবছরে বিদ্যুৎ খাতের জন্য ভর্তুকি বরাদ্দ রেখেছে ১৭ হাজার কোটি টাকা।

লোকসান পোষাতে এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন গত ২১শে নভেম্বর বিদ্যুতের পাইকারি দাম ১৯.৯২ শতাংশ বৃদ্ধি করে। এরপরই গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ২০ শতাংশ বৃদ্ধির আবেদন করে ৬ বিতরণ কোম্পানি।তাদের আবেদনের ওপর গত ৮ই জানুয়ারি গণশুনানি হয়।

শুনানিতে বিইআরসির কারিগরি মূল্যায়ন কমিটি জানায়, পাইকারি দাম বৃদ্ধির ফলে বিতরণ কোম্পানিগুলোর যে বাড়তি ব্যয় হবে তা পোষাতে ৮ হাজার কোটি টাকা প্রয়োজন। এজন্য কমিটি ১৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ দাম বৃদ্ধির সুপারিশ করে। কিন্তু বিইআরসির শুনানির পর আদেশ দেয়ার আগেই তাড়াহুড়া করে বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের খুচরা মূল্য ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতির এই সময়ে বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির বিরোধিতা করে আসছে ভোক্তা অধিকার বিষয়ক সংগঠনগুলো। তারা বলছেন, সিস্টেম লস কমিয়ে এবং সুশাসনের মাধ্যমে ব্যয় কমিয়ে আনলে বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রয়োজন হতো না।

খাত বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদফা বিদ্যুতের দাম বেড়েছে। সামনে আবার গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বাড়ালে এর প্রভাব পড়বে জনজীবনে। এতে নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিসহ সার্বিক জীবনযাত্রায় ব্যাপক প্রভাব পড়তে পারে।

Back to top button