ঢাকায় যেকোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা ত্রিমোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে চেকপোস্ট বসিয়েছে পুলিশ। এই পথ দিয়েই উত্তরবঙ্গের সব গাড়ি ঢাকায় প্রবেশ করে। চেকপোস্টে গাড়িতে গাড়িতে চলছে তল্লাশি।
যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদ, ব্যাগ, বস্তাসহ মোবাইলের ব্যক্তিগত তথ্য- মেসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপ খতিয়ে দেখছে পুলিশ। এতে যাত্রী ও চালকেরা অস্বস্তি প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে, গাজীপুর টঙ্গীতেও পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে।শিপন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘গাজীপুর থেকে দুপুরে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকা যাচ্ছিলাম। টঙ্গী ব্রিজের উত্তরপাশে পৌঁছানোর পর পুলিশ বাস থামিয়ে তল্লাশি করে। এসময় আমার স্মার্টফোন নিয়ে পুলিশ ফেসবুক, মেসেঞ্জার, হোয়াটস অ্যাপ ঘাটাঘাটি করে।’
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-বিভাগের বিভিন্ন জেলাসহ ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন জেলার মানুষের চলাচলের সহজ পথ ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক। ফলে ঢাকায় প্রবেশ করতে হলে শ্রীপুর হয়ে টঙ্গীর তল্লাশি চৌকিটি পার না হওয়ার সুযোগ নেই।
চেকপোস্টে ১৫-২০ জন পুলিশ সদস্য সন্দেহভাজন মোটরসাইকেল, পিকআপ ভ্যান, দূরপাল্লার বাস, ট্রাক গতিরোধ করে জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি করছে। তবে গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই মহাসড়কে যানবাহনের পরিমাণ কমে গেছে।এসআই পরিবহনের সহকারী আব্দুল হালিম জনি বলেন, ‘ঢাকায় যাওয়ার পথে টাঙ্গাইল, মির্জাপুর ও কালিয়াকৈর চন্দ্রায় পুলিশের চেকপোস্ট চোখে পড়েছে। তারা আমাদের যাত্রীদেরও জিজ্ঞাবাদ করছে।’
তল্লাশির শিকার অনেকে যাত্রীই জানান, তারা কোনো রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত নন। জরুরি কাজে যে যার মতো ঢাকায় যাচ্ছিলেন। কিন্তু পথে পুলিশ গাড়ি থামিয়ে দেহ তল্লাশিসহ মোবাইলের ব্যক্তিগত তথ্য, গুরুত্বপূর্ণ মেসেজ, ছবি দেখছে। তবে তল্লাশির তালিকায় বেশি রয়েছে মোটরসাইকেল।
এ বিষয়ে কালিয়াকৈর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আজিম হোসেন বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড যেন না ঘটে, সেজন্য বাড়তি নিরাপত্তা নেওয়া হয়েছে। চেকপোস্টের মাধ্যমে কাউকে সন্দেহ হলে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তবে কাউকে হয়রানি করা হচ্ছে না।’
গাজীপুর জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি সুলতান আহমেদ সরকার জানান, ঢাকায় বিএনপির সমাবেশকে সামনে রেখে গাড়িতে এখন সাধারণ মানুষ (যাত্রী) কমে গেছে। তাদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক বিরাজ করছে। পুলিশ যাত্রী ছাড়াও চালক/গাড়ির কাগজপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। তবে কোথাও কাউকে হয়রানি করার তথ্য পাওয়া যায়নি।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম বলেন, ‘১ ডিসেম্বর থেকেই আমাদের বিশেষ অভিযান চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় মহাসড়কে গাড়িতে তল্লাশি চলছে। প্রতি থানার আওতায় দুইটি করে চেক পোস্টে এ অভিযান চলছে।’
টঙ্গী পূর্ব থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মিলন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা দায়িত্ব পালন করছি। এখানে কাউকে কোনো ধরনের হয়রানি করা হয়নি। কেউ যেন নাশকতা তৈরি করতে না পারে বা আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটাতে না পারে সেজন্য তল্লাশি চালানো হচ্ছে।’