আরো ত্যাগ স্বীকার করতে দলীয় নেতাদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে। এখন এক দফা এক দাবি এই সরকারের পদত্যাগ। এই সরকারের পতন ছাড়া আমরা ঘরে ফিরে যাবো না।
সোমবার বিকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির উদ্যোগে ‘বিপ্লব ও সংহতি’ দিবস উপলক্ষে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে এক উন্মুক্ত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ৭ই নভেম্বর সিপাহী জনতার অভূতপূর্ব সমন্বয়ে দেশের স্বাধীনতা রক্ষা হয়েছিল।
সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আবার নতুন করে গত ১৫ বছর ধরে গণতন্ত্র হরণ করে স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে। এখন স্বাধীনতা রক্ষার সংগ্রাম চলছে। এখন আমাদের একটাই দাবি; সরকারের পদত্যাগ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেন, সংসদ বিলুপ্ত করুন। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। লক্ষ্য আদায় না করে ঘরে ফিরে যাব না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন,বর্তমানে বাংলাদেশে অলিখিত বাকশাল চলছে।এই সরকারের পতনের জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।মোশাররফ বলেন, ১৯৭১ সালে রাজনৈতিক নেতারা ব্যর্থ হয়েছিলেন যখন স্বাধীনতা আনতে তখন মেজর জিয়া সফল হয়েছিলেন, স্বাধীনতার ঘোষনা দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন, ৭৫ রেও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ব্যর্থতায় জিয়া সফল হয়ে ৭ নভেম্বরের স্বাধীনতা রক্ষা করেছিলেন, সেই চেতনায় দেশের গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আসুন আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে এই লুটেরা সরকারের পতন করি।স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন,ঢাকায় ১০ তারিখের সমাবেশের আগেই ঢাকার আশেপাশে মামলা হামলা হচ্ছে এভাবে জনগণের আন্দোলন স্তব্ধ করা যায় না। কাউকে স্তব্ধ করার এখতিয়ার সরকারি সংস্থার নাই।
তিনি বলেন, খুব তাড়াতাড়ি ব্যাংকগুলো দেউলিয়া ঘোষণা করবে ,আমানত কারীরা রাস্তায় নামবে।বিচার বিভাগের উপর সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, কোনো আদালতে ই শেখ হাসিনার কথা ছাড়া কাজ হয় না।প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে গয়েশ্বর বলেন, প্রধানমন্ত্রী কি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে লুটপাটকারীদের নাম বলতে পারবেন। পারবেন না। সে কারণে জনগণ মনে করে লুটপাটের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে গয়েশ্বর আরো বলেন, তিনি যাবেন, আমাদের তাড়াতে হবে না। তিনি কোথায় যাবেন সেটা নিয়ে এখন ভাবছেন। সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন।স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আব্দুল মঈন খান বলেন, প্রথমবারের মতো বিপ্লব ও সংহতির প্রয়োজনে রাজপথে এসেছি। পাকিস্তানের ২২ পরিবারের সমালোচনা করছি।
এই সরকার সারাদেশে ২২০ পরিবার সৃষ্টি করেছে। যারা কানাডার বেগম পাড়ায় বাড়ি করছে। আওয়ামী লীগ এক সময় বলতো আমার ভোট আমি দেবো যাকে খুশি তাকে দেবো, কিন্তু এখন সেটা বলতে ভয় পায় কেন?মঈন খান বলেন, আমরা জনগণের সরকার চাই, লুঠপাট শাসন চাই না। আমরা এই সরকারের পতন ঘটাবো।
স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আশপাশে ১৯৭৫ এর খুনীরা। সরকার প্রধানের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার না দিলে আপনি সম্মান নিয়ে যেতে পারবেন না।বিএনপি জোটের শরিক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘১৯৭৫-এর ১৫ আগস্টের সুবিধাভোগী জিয়াউর রহমান, তারা ভুল বলেন, মিথ্যা বলেন। চলমান সরকারবিরোধী আন্দোলনে অগ্রভাগে কল্যাণ পার্টির অবস্থান থাকবে বলেও জানান তিনি।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহবায়ক আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, যুব দলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ বক্তব্য দেন।