স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে লাল-সবুজের

পাকিস্তানের কাছে হেরে আইসিসিটি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ থেকেই বিদায় নিতে হল বাংলাদেশকে।যদিও শেষ ম্যাচ পর্যন্ত জেগেছিল টাইগারদের শেষ চারের আসা। সুপার টুয়েলভের গ্রুপ টুতে নিজেদের শেষ ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে ৫ উইকেটে হেরে আসর থেকে বিদায় নিয়েছে বাংলাদেশ।

অ্যাডিলেডে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। লিটন দাসের উইকেট হারিয়ে পাওয়ারপ্লেতে জড়ো করে ৪০ রান । একটি ছক্কা হাঁকানো লিটন ৮ বলে ১০ রান করে বিদায় নিলে নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে দেখেশুনে খেলছিলেন সৌম্য সরকার। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনে ৫২ রানের দারুণ এক জুটিও গড়েন। একাদশ ওভারের চতুর্থ বলে সৌম্যকে তালুবন্দী করেন শান মাসুদ। আগেরবার শিকারি ছিলেন শাহীন শাহ আফ্রিদি, এবার শাদাব খান।

রোববার অ্যাডিল্যাড স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন সাকিবের দল। পাকিস্তানের কাছে হারের মধ্যে দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন শেষ করল বাংলাদেশ। আজকের ম্যাচে জিততে পারলেই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠার গৌরব অর্জন করতে পারতো টাইগাররা। বাংলাদেশের দেওয়া ১২৮ রানের লক্ষ্যে পাকিস্তান পৌঁছে ৯ বল হাতে রেখে। এই জয়ের ফলে সেমিতে উঠেছে পাকিস্তান।

সাকিব আল হাসানের আউট নিয়ে হলো বিতর্ক, এরপর ভেঙে পড়ল ব্যাটিং অর্ডারে। ফিল্ডিংয়ের শুরুতেই সহজ ক্যাচ ছেড়ে দিলেন নুরুল হাসান সোহান। বোলারদের জন্য কাজ তারপর এমনিতেই কঠিন। জবাব দিতে নেমে ১১ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হলেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। আগে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরুর আভাস দেন দুই ওপেনার শান্ত ও লিটন দাস।

কিন্তু আভাস দিয়েও জুটি বড় করতে পারলেন না। ২১ রানে ভাঙে বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে শান মাসুদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন লিটন (১০)। লিটনকে হারানোর চাপ সৌম্যকে নিয়ে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন শান্ত। এই জুটি থিতু হয়ে যায়। দুজনে মিলে খেলেন ৪৭ বল। কিন্তু রান তোলায় দুজনেই ছিলেন মন্থর। হারিস রউফ-নাসিম শাহদের বোলিং দাপটে উইকেটে ভুগছিলেন দুজন। এর মধ্যে ২০ রান করে বিদায় নেন সৌম্য। ১১তম ওভারে ভাঙে বাংলাদেশের দ্বিতীয় জুটি।

এরপর উইকেটে আসা সাকিবের সঙ্গে যা হলো সেটা ছিল অবিশ্বাস্যকর। আম্পায়ারের বিস্ময়কর বাজে সিদ্ধান্তে এলবি দেওয়া হয় সাকিবকে। শাদাব খানের বলে সাকিবের প্রথম বল মোকাবিলাতেই আউট দেন আম্পায়ার। আত্মবিশ্বাসী সাকিব রিভিউ নিতে দেরি করেননি। শান্তকে জানান, তাঁর ব্যাটে লেগেছে বল। টিভি রিপ্লেতেও ব্যাটে-বলের স্পর্শ দেখা যায়। কিন্তু আম্পায়ার সেটা আমলে নিলেন না। তিনি তাঁর সিদ্ধান্তে অনড় থেকেছেন। হতাশ হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয় বাংলাদেশ অধিনায়ক। দলীয় ৭৪ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

এরপর বাকিরাও আশা দেখাতে পারেননি। হাফসেঞ্চুরি তুলে নিয়ে উইকেটে ভালো কিছু করার আভাস দেন শান্ত। কিন্তু থিতু হয়ে যাওয়া ব্যাটার কিছুই করতে পারেননি। ৪৮ বলে ৫৪ রান করে বিদায় নেন শান্ত। এরপর শুধু হতাশাই দেখেছে বাংলাদেশ। একে একে সাজঘরের পথে হাঁটেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত-নুরুল হাসান সোহানরা। এত উইকেট হারানোর মিছিলে বেশিদূর যেতে পারেনি বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত থামে অল্প রানে।

জবাব দিতে নেমে শুরুতেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ তুলে দেন রিজওয়ান। কিন্তু কিপার নুরুল হাসান সোহান এই সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন। জীবন পাওয়ার পর ওপেনিং জুটিতে ৫৭ রান তোলে পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ১১তম ওভারে এই জুটি ভাঙেন নাসুম। ফিরিয়ে দেন পাকিস্তানি অধিনায়ককে। ৩৩ বলে ২৫ রান করে বিদায় নেন বাবর। এরপর রিজওয়ানকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে খেলায়া ফেরান ইবাদত। ৩২ রান করে ফেরেন রিজওয়ান। দুই ওপেনার ফিরলেও জয় পেতে খুব একটা সমস্যা হয়নি পাকিস্তানের। ১১ বল হাতে রেখেই জয় তুলে নেয় বাবর আজমের দল।

Exit mobile version