রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্ব সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসায়ীদেরদেশ ও জনগণের কথা চিন্তা করে ব্যবসা করার আহ্বান জানিয়েছেন।বিএনপি সরকারের সময় হাওয়া ভবনের দৌরাত্মের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন লাভের ব্যাপারে চিন্তা করেন। আগে তো একটা বড় অংশ হাওয়া হয়ে যেতো।
এখন আর সেই হাওয়া হওয়ার ব্যবস্থাটা নাই। সেখান থেকে সবাইকে মুক্ত রেখেছি। তো সেটাই মাথায় রেখে যদি মনে করেন (ব্যবসা করেন) যে না- দেশের কথা চিন্তা করে, দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে।বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে দেশের ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও রফতানিকারকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, এখানে কোনো হাওয়া ভবন নেই, আর পিএমও-তে (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে) কোনো উন্নয়ন উইংও নেই। যে হাওয়া ভবনে এক ভাগ দিতে হবে, উন্নয়ন ভবনে এক ভাগ দিতে হবে বা অমুক জায়গায় দিতে হবে। এই যন্ত্রণাতো আপনাদের ভুগতে হয় না এখন আর। এটাতো আপনারা নিশ্চয় স্বীকার করবেন। সেই যন্ত্রণা থেকে তো সবাই মুক্ত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ এ সরকার গঠনের পর আমাদের ব্যবসায়ীরা সে যে দলেরই হোক আমরা কিন্তু ওখানে দল বাছতে যাইনি। যে দলেরই হোক যাতে তারা ব্যবসাটা ব্যবসায়ী হিসেবে করতে পারে সেই পরিবেশটা সৃষ্টি করে দিয়েছি।১৪ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে লাভের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ ছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা কিন্তু করোনার সময়ও সেটা মোকাবিলা করলাম।
প্রণোদনা দিলাম, বিশেষ প্রণোদনা, আমার কাছে কেউ এসে দাবি করেননি; কেউ বলেনি, কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমার একটা টিম খুব ভালো কাজ করছিল যে, কোথায় কী করা যেতে পারে, আমার অর্থনীতির চাকাটাকে চলমান রাখতে হবে।’শেখ হাসিনা বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে তাদের ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ, তাদের সমস্ত কর্মকাণ্ড বন্ধ, সবকিছু।
আমরা বলেছি আমরা এখানে বন্ধ হতে দেব না; আমার এখানে চালু করে রাখতে হবে। শ্রমিকদের বেতন, এই যে গার্মেন্টস, তার বেতন তো আমি দিয়ে দিলাম সব। প্রণোদনা প্যাকেজ করলাম, বিশেষ বরাদ্দ দেয়ার ব্যবস্থা করলাম।’প্রধানমন্ত্রী এ বৈঠকে তেল, চিনিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য বাংলাদেশের সব নাগরিকের কাছে যথাযথ মূল্যে সরবরাহ করার জন্য ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক ও সরবরাহকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
গণভবনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান ফজলুর রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
ব্যবসায়ীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহানসহ অনেকে।