মিছিল আর স্লোগানে মুখর খুলনা সমাবেশ ঘিরে উত্তাপ

বিভাগীয় গণসমাবেশ যোগ দিতে খুলনায় পৌঁছেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শুক্রবার (২১ অক্টেবর) রাত ১০টার দিকে নগরীর সোনালী ব্যাংক চত্বরে গাড়িবহর নিয়ে হাজির হন তিনি। গাড়ি থেকে নেমে হাত নেড়ে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় নেতা-কর্মীরা নানা স্লোগান দিতে থাকেন।

স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে সমাবেশস্থল।সেখানে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় তার সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সোনালী ব্যাংক চত্বরে গণসমাবেশের মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে।এদিকে সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে ইতোমধ্যে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের হাজারো নেতা-কর্মী খুলনায় এসেছেন।

রাতে দলীয় কার্যালয়ে বালিশ-কাঁথা নিয়ে অবস্থান নিয়েছেন অনেকে।সমাবেশকে কেন্দ্র করে গণপরিবহন ও লঞ্চ বন্ধ করে দেওয়ায় বালুভর্তি ট্রলার, ইজিবাইক, নৌকা, সিএনজি, মোটরসাইকেল, হেঁটেসহ বিভিন্নভাবে খুলনা শহরে আসছেন নেতা-কর্মীরা।

দুপুরে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, শনিবার দুপুর ২টায় সমাবেশ শুরু হয়ে চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। এ সমাবেশ দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য, জনদাবির সমর্থনে আন্দোলনে শহীদ পাঁচ সহকর্মী হত্যার বিচারের দাবিতে, এই সমাবেশ দেশমাতা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে, দেশনায়ক তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে, জ্বালানি তেলসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর দাবিতে।

সমাবেশস্থলে যশোর সদরের ৪ নম্বর নোয়াপাড়া ইউনিয়নের একটি ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি সিরাজ খান  বলেন, ‘আমাদের ইউনিয়ন থেকে কম করে হলেও ৫০০ মানুষ এসেছে। খাওয়াদাওয়ার বিষয় পরে দেখা যাবে। রাতে রাস্তায় থাকব। এখনই লোকজন ভরে গেছে। বাধা না দিলে যশোর থেকেই এক হাজার গাড়ি ভরে মানুষ আসত। বাধা দিয়ে চলমান সংগ্রাম ঠেকানো যাবে না।’

শুক্রবার রাত ১০টার দিকে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে দেখা যায়, কেডি ঘোষ রোডের থানার মোড় থেকে কদমতলা স্টেশন রোড পর্যন্ত রাস্তায় পা ফেলার জায়গা নেই। বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দলটির কর্মীরা নেতাদের নামে, দলের বিভিন্ন ইস্যুতে স্লোগান দিচ্ছেন।

হেলাতলা মোড়ের স্বর্ণপট্টির পাশে বড় একটি জায়গাজুড়ে একদল কর্মী গান–বাজনা করছেন। গানের ওই আসর ঘিরেও বড় জটলা দেখা যায়। সমাবেশে আসা নেতা–কর্মীদের বেশিরভাগের কাছেই রাতে ঘুমানো বা বিশ্রামের জন্য পলিথিন বা প্লাস্টিকের বস্তা দেখা গেছে। খুলনা বিপণিবিতানের প্রধান ফটকের সামনে অনেক কর্মী বস্তা বিছিয়ে শুয়ে পড়েছেন।

বেনাপোল থেকে আসা বিএনপির কর্মী ওমর ফারুক বলেন, ‘বাসে এসেছি। ক্ষমতাসীন দলের লোকজন টেনেহিঁচড়ে নাভারণে নামিয়ে দিয়েছে। এরপর আবার ঝিকরগাছায় নামিয়ে দিয়েছে। নানা বাধায় যশোর পর্যন্ত আসার পর ট্রেনে আসতে পেরেছি।’বস্তা বিছিয়ে বিশ্রাম নেওয়া দলের দুজন মো. আজিজুর রহমান ও আবদুর রহমান বলেন, ‘ঝিকরগাছা থেকে আমরা এসেছি।

বাড়ি থেকে বস্তা নিয়ে এসেছি। এখানে ফাঁকা পেয়ে কয়েল জ্বালিয়ে শুয়ে আছি। এখানে তো উৎসবমুখর পরিবেশ। কোনোরকম ভয় লাগছে না।’নড়াইল সদর উপজেলা বিএনপির নেতা মোজাহিদুর রহমান জানান, তাঁরা ট্রলারে করে সমাবেশে এসেছেন সমাবেশস্থলে স্লোগান দিচ্ছিলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও যুবদলের সদস্যসচিব গোলাম কিবরিয়া।

তাঁরা একসঙ্গে ১০০ জন ট্রেনে এসেছেন। তাঁদের উপজেলা থেকে রাতের বিভিন্ন ট্রেনে আরও ৪০০ লোক আসবেন। পথে তাঁরা দুই জায়গায় ঝামেলায় পড়েছেন।যেকোনো মূল্যে এই কর্মসূচি সফল করার জন্য দলীয় নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

Exit mobile version