বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের আত্মাকেও বিক্রি করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। সেটা উদ্ধার করতে হবে। দেশের মানুষ এই অবৈধ, দখলদার, অনির্বাচিত সরকারকে উৎখাতের শপথ নিয়েছে।
পুলিশের ভূমিকার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘যাঁরা আওয়ামী পুলিশের ভূমিকা পালন করছেন, তাঁদের পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের নিয়ে আমাদের চিন্তা নাই, তবে যাঁরা আওয়ামী পুলিশ হওয়ার চেষ্টা করছেন, তাঁরা শুধু সংবিধান, মানবাধিকার বা গণতন্ত্র লঙ্ঘন করছেন না, আপনাদের ভূমিকা আন্তর্জাতিক অপরাধের আওতায় পড়ে।’
আজ শুক্রবার পুরান ঢাকার ধোলাইখাল এলাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি; ভোলায় নুরে আলম, আবদুর রহিম, নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান হত্যা; সারা দেশে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদ এবং বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এ সমাবেশ হয়। এতে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির জ্যেষ্ঠ সদস্য ইশরাক হোসেন সভাপতিত্ব করেন।
সমাবেশ উপলক্ষে ধোলাইখালের মূল সড়কের ওপর অস্থায়ী মঞ্চ বানানো হয়। বেলা তিনটার আগ থেকেই গেন্ডারিয়া, ওয়ারী, কোতোয়ালি ও বংশাল থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে আসেন। সমাবেশ ঘিরে বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি ছিল।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মৃত্যুশয্যায় গিয়েছে, তাদের রক্তসঞ্চালন বন্ধ হয়ে গেছে। যেকোনো সময় আওয়ামী লীগের মৃত্যুর সংবাদ পাবেন আপনারা। যাঁরা জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছেন, তাঁরা আওয়ামী লীগ সরকার হোক আর আওয়ামী লীগ পুলিশ হোক, কেউ রেহাই পাবেন না।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ফয়সালা হবে রাজপথে, আমরা কেউ ফিরে যাব না। যেদিন শেখ হাসিনার পতন হবে, সেদিন বাড়ি ফিরে যাব।তিনি বলেন, রাস্তায় নেমেছি, হয়তো জীবন যাবে। আর বেঁচে থাকলে দেশকে মুক্ত করে ছাড়ব। পরিবারকে বলেছি আমাদের চিন্তা করবা না।
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘আমাকে অনেকে বলেন, বিদেশিদের কী খবর, বিদেশিরা কী আমাদের পক্ষে থাকবে, নাকি আওয়ামী লীগের পক্ষে থাকবেন? বিদেশিদের নিয়ে চিন্তা করার কোনো কারণ নাই। কারণ, বাংলাদেশ সম্পর্কে বিদেশিদের ধারণা পরিষ্কার।
তাদের ধারণা, এই দেশ একটি চরম দুর্নীতিপরায়ণ দেশ হয়ে গেছে। এই দেশে মানবাধিকার, নির্বাচনব্যবস্থা, আইনের শাসন, বাক্স্বাধীনতা বলে কিছু নেই। বিষয়গুলো জাতিসংঘ থেকে শুরু করে সব দেশের কাছে পরিষ্কার হয়ে গেছে। যেই কারণে পুলিশপ্রধান, র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের হাতে এখন মাত্র একটি অপশন আছে, সেটি হচ্ছে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করে ক্ষমতা দখল করা। আমাদের কোনো ভয়-ভীতি নেই, আমরা ভয় ভীতি পার হয়ে চলে এসেছি। রাস্তায় নেমে গেছি। আব্দুর রহিম, নূরে আলম ও শাওন প্রধান মারা যাননি, তারা আমাদের সঙ্গে আছেন, হৃদয়ে রয়েছেন, আন্দোলনে রয়েছেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমান বলেন, ‘দেশের জনগণ রাজপথে নেমে এসেছে, সরকারের পতন ও তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। এভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে পারলে কয়েক মাসের মধ্যে সরকারের পতন হবে।’
সরকার বিদ্যুৎ-গ্যাস ও নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে জনগণকে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছে মন্তব্য করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘আমরা এখন মামলা-হামলার ভয় পাই না। এখন আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব। কেউ যদি লাঠি নিয়ে আসেন, সেই লাঠি কেড়ে নিয়ে তাঁদের মাথায় ভাঙা হবে।’
বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে