আওয়ামী লীগঢাকাবাংলাদেশরাজনীতি

রাগ-ক্ষোভ-অভিমানে সংগঠনকে বিদায় জানালেন ছাত্রলীগ নেতা মেশকাত হোসেন

আলোচনা-সমালোচনা যেন ছাত্রলীগের পিছু ছাড়ছেই না। কেন্দ্রীয় সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের কার্যক্রমে ক্ষুব্ধ সংগঠনটির একাংশ। নানা ‘অনিয়মের’ তালিকা তৈরি করেছেন তারা। সেই তালিকা জমা দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে।

এসব ঘটনা নিয়ে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে দেখা দিয়েছে অস্বস্তি। এর মধ্যেই রাগ-ক্ষোভ-অভিমানে সংগঠনকে বিদায় জানালেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক মেশকাত হোসেন। আজ মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে তিনি এ ঘোষণা দেন।

ফেসবুকে দেওয়া পোস্ট নিয়ে জানতে চাইলে মেশকাত বলেন, ‘যে দলের জন্য এত ত্যাগ, এত শ্রম দিলাম, সে দলের সভাপতির মুখ থেকে যদি জামায়াত-শিবির ব্লেম খাওয়া লাগে, এটি কষ্টদায়ক। ছাত্রলীগ করব কাদের সঙ্গে, যারা আমাদের জামায়াত-শিবির, বিএনপি বলে। তারা হাজার অনিয়ম করবে, আমরা কিছু বললেই জামায়াত-শিবিরের এজেন্ট। তাদের সঙ্গে রাজনীতি করা সম্ভব নয়।’

ফেসবুকে দেওয়া ওই পোস্টে মেশকাত লেখেন, ‘যেই সংগঠন করে জীবনের সবটুকু সময় ব্যয় করেছি কিন্তু হতাশা, মানসিক যন্ত্রণা আমাকে ধুঁকে ধুঁকে শেষ করে দিচ্ছে। যদি বিএনপি-জামায়াতের কোনো লোক হতো তাহলে তাকে প্রতিহত করার ক্ষমতা আমি রাখি।”

তিনি আরও লেখেন, “কিন্তু যখন নিজ দলের লোক কষ্ট দেয় তখন কষ্টের আর শেষ থাকে না। আজ শুধু নিজেকেই শেষ করিনি, পরিবারের সবাইকে ঠকিয়েছি। খুব অভিমান থেকেই বলছি বিদায় ছাত্রলীগ।যদি বেঁচে থাকি বাকি জীবনটা পার্টির জন্য ব্যয় করে যাব। আর পার্টির দুঃসময়ে যদি আমাকে প্রয়োজন হয় তাহলে অবশ্যই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পাশে থেকে রাজপথে লড়ব। ভালো থাকবেন সবাই।’

মেশকাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সূর্যসেন হলের আবাসিক ছাত্র। তিনি দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী। ২০১৯ সালের ২১ জুলাই হলের ফটকের সামনে নিজের পকেটে থাকা অস্ত্রে চাপ লেগে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সে সময় ক্যাম্পাসে দায়িত্বরত একটি গোয়েন্দা সূত্র জানায়, মেশকাতের পকেটে থাকা অস্ত্রটি অবৈধ ছিল।

পদত্যাগপত্র জমা দেবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তাদের কাছে পদত্যাগপত্র দেওয়ার কিছু নেই। তারা নিজেরাই মেয়াদোত্তীর্ণ। তারা আমাকে পদও দেয়নি, দিয়েছে শোভন-রাব্বানী ভাই। আমি দেশরত্ন শেখ হাসিনার রাজনীতি করি। যদি পার্টির প্রয়োজন হয় আমি অবশ্য মাঠে থাকব।’

সম্প্রতি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নানা ‘অনিয়মের’ তালিকা জমা দেওয়া নিয়ে অনুভূতি জানতে চাইলে আল-নাহিয়ান খান জয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘তারা (অভিযোগকারীরা) বিভিন্নভাবে ভুল অভিযোগ দিয়েছেন। আমি মনে করি, যারা অভিযোগ দিচ্ছেন, তাদের উদ্দেশ্য সৎ না। জামায়াত-বিএনপি যেভাবে ছাত্রলীগকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে, সেই কাজটাই তারা (অভিযোগকারীরা) করছেন।’

বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে

Back to top button